Advertisement
E-Paper

ট্রাম্পকে একটা সুযোগ দিন, সুর বদল ওবামার

যাওয়ার বেলায় সুর বদল! আগে বলতেন, এমন একটা বদমেজাজি লোক কোনও ভাবেই দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য নয়। আর এখন বলছেন, হোয়াইট হাউসে গেলেই মেজাজ ঠিক হয়ে যাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:১০
বাড়িয়ে হাত। ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে বৈঠকে ট্রাম্প-ওবামা। ১০ নভেম্বর হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে। ছবি: এএফপি।

বাড়িয়ে হাত। ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে বৈঠকে ট্রাম্প-ওবামা। ১০ নভেম্বর হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে। ছবি: এএফপি।

যাওয়ার বেলায় সুর বদল!

আগে বলতেন, এমন একটা বদমেজাজি লোক কোনও ভাবেই দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য নয়। আর এখন বলছেন, হোয়াইট হাউসে গেলেই মেজাজ ঠিক হয়ে যাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের।

ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে ‘প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট’-এর সঙ্গে গত বৃহস্পতিবারই ওভাল অফিসে বৈঠক করেছিলেন বিদায়ী প্রেসি়ডেন্ট বারাক ওবামা। তারপর এই প্রথম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। বললেন, ‘‘আপনারা ওঁকে একটা সুযোগ দিন। হোয়াইট হাউসের মধ্যেই মানুষকে জাগিয়ে তোলার একটা ক্ষমতা আছে। তাই আমার বিশ্বাস, পদমর্যাদা, দায়িত্ব আর বাস্তবের মুখোমুখি হলে নিয়ন্ত্রণে আসবে মেজাজও।’’ সবটাই ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলা। ইঙ্গিত রয়েছে সমালোচনারও। তবু ওবামার সতর্ক শব্দ বাছাইয়ের অন্য মানে করছেন মার্কিন কূটনীতিকদের একাংশ। তাঁদের মতে, এ যেন ছোট ভাইকে সবটা বুঝিয়ে দিয়েই রিটায়ার করছেন বড়দা।

বড়দাই তো! প্রথম বার প্রেসি়ডেন্ট নির্বাচিত হয়ে, বুশ জমানা শেষ করে ২০০৯-এর ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে এসেছিলেন বারাক ওবামা। চার বছর পরে রিপাবলিকান পদপ্রার্থী মিট রোমনিকে হারিয়ে আর এক বার। এ বার যাওয়ার পালা। ২০১৭-র ২০ জানুয়ারি ওভাল অফিসে পা রাখছেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের পুরনো চেয়ারে নতুন প্রেসিডেন্ট।

ডোনাল্ড ‘বেফাঁস’ ট্রাম্প। বন্ধুরা বলেন, এই রুক্ষ মেজাজটাই তাঁর ইউএসপি। কিন্তু প্রচার আর রাজপাট চালানো যে এক নয়, ঠারেঠোরে তা-ও এ দিন বুঝিয়ে দিয়েছেন ওবামা। তাঁর কথায়, ‘‘ভোট চাইতে নেমে যখন আপনি বিতর্কিত কিছু বলেন, তার প্রভাব এমন বেশি কিছু নয়। কিন্তু আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বেফাঁস কিছু করলেই মুশকিল। গোটা বিশ্ব তাকিয়ে থাকবে আপনার দিকে। এমনকী অর্থনীতিও।’’ ‘প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট’কে তাঁর সতর্কবার্তা— ‘‘মেজাজ তো সামলাতেই হবে। না হলে উপায় নেই। ছোটখাটো বিচ্যুতি যা রয়েছে, অবিলম্বে তা চিহ্নিত করে সংশোধন করা উচিত। না হলে, কোনও কাজটাই ভাল ভাবে করা হবে না।’’

ফল ঘোষণার দিনই, দেশের যাবতীয় বিভেদ মুছে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। ওবামার দাবি, তিনিও তাকিয়ে সে দিকে। ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেন’ স্লোগানে আস্থা রেখেই তিনি তিনটি পরামর্শ দিয়েছেন উত্তরসূরিকে।

এক, প্রচারপর্ব থেকেই ট্রাম্পের বিতর্কিত কথাবার্তায় যাঁরা উদ্বিগ্ন, এখনই তাঁদের কাছে ছুটে যাওয়া উচিত মার্কিন ধনকুবেরের। ওবামা আশাবাদী, যে সংকীর্ণ মতাদর্শকে ট্রাম্প প্রচারের অস্ত্র করেছিলেন, বাস্তবে তা তিনি প্রয়োগ করবেন না।

দুই, আন্তর্জাতিক স্তরে আমেরিকার যে সব ‘প্রতিশ্রুতি’ দিয়ে রেখেছে, সেগুলো পালন করতে হবে ট্রাম্পকেও। এর মধ্যে ন্যাটো ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেন ওবামা। ট্রাম্পও তাঁকে কথা দিয়েছেন, আমেরিকা যাতে পৃথিবীর সব থেকে ক্ষমতাশালী দেশ থাকে, তা তিনি কড়া নজরে রাখবেন। সন্ত্রাসদমনে ন্যাটো বা অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমেরিকার যা সম্পর্ক, তা-ও তিনি বজায় রাখবেন বলে ওবামাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প।

তিন, পৃথিবীর ‘সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ’ পদটির দায়িত্ব সামলানোর জন্য ট্রাম্পের একটি ভাল ‘টিম’ দরকার। ওবামা তাই প্রেসিডেন্ট পদে নব্যনির্বাচিতকে বলেছিলেন, বিদেশসচিব, মুখ্য মন্ত্রণাদাতা বা চিফ অব হোয়াইট হাউসের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো আগেভাগেই ভরে ফেলতে। ওবামার কথায়, ‘‘আপনার চারপাশে বাছাবাছা লোকেরা থাকলে আপনিও ভাল ভাবে কাজ করতে পারবেন।’’

পূর্বসূরির নির্দেশ তিনি কতটা গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন, তা অবশ্য জানা যায়নি। কিন্তু প্রশাসনের শীর্ষ কর্তা বেছে নিতে বিশেষ দেরি করেননি ট্রাম্প। বেছে নিয়েছেন এমন দু’জনকে, যাঁরা তাঁর হোয়াইট হাউস দখলের লড়াইয়ের প্রধান দুই সেনাপতি। স্টিফেন কে ব্যানন হচ্ছেন হোয়াইট হাউসে তাঁর মুখ্য মন্ত্রণাদাতা এবং ‘চিফ অব স্টাফ’ হচ্ছেন রেইন্স প্রিবাস। তার মধ্যে অবশ্য চরমপন্থী বলে কুখ্যাত ব্যাননকে ওবামা-সহ ডেমোক্র্যাটদের কেউই পছন্দ করেন না।

এর মধ্যেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথাও হয়ে গিয়েছে তাঁর। সেই পুতিন, ভোটের প্রচারেই নেতা হিসেবে যাঁকে ওবামার চেয়ে বেশি নম্বর দিয়েছিলেন ট্রাম্প!

Donald Trump Barack Obama
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy