Advertisement
E-Paper

‘যে লোকটার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে?’ মাস্কের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন কি না প্রশ্ন শুনেই ফুৎকারে উড়িয়ে দিলেন ট্রাম্প

দু’জনের মধ্যে কথা বলিয়ে শৈত্য কাটানো যায় কি না, হোয়াইট হাউসের তরফে সেই চেষ্টা করা হয়েছে বলে দাবি করছিল বিভিন্ন মার্কিন সংবাদমাধ্যম। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, শুক্রবারই দু’জনের মধ্যে ফোনে কথা হতে পারে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৫ ২০:৪১
(বাঁ দিকে) ইলন মাস্ক এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

(বাঁ দিকে) ইলন মাস্ক এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

ইলন মাস্কের সঙ্গে কি ফোনে কথা বলবেন?

প্রশ্ন করা হয়েছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। ওই প্রশ্ন শুনেই রীতিমতো ঝাঁঝিয়ে উঠলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর কটাক্ষসিক্ত জবাব, ‘‘যে লোকটার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে?’’ ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, এখনই মাস্কের সঙ্গে কথা বলার কোনও ইচ্ছেই নেই তাঁর।

ট্রাম্প এবং মাস্কের প্রকাশ্যে বাদানুবাদ চরমে উঠেছে বিগত কয়েক ঘণ্টায়। সুর সপ্তমে চড়িয়ে মাস্ক দাবি করেছেন, তিনি সাহায্য না করলে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিততেই পারতেন না। পাল্টা আর্থিক অবরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্পও। এই অবস্থায় দু’জনের মধ্যে কথা বলিয়ে শৈত্য কাটানো যায় কি না, হোয়াইট হাউসের তরফে সেই চেষ্টা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বিভিন্ন মার্কিন সংবাদমাধ্যম। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, শুক্রবারই দু’জনের মধ্যে ফোনে কথা হতে পারে।

সেই জল্পনায় ইতি টানতে স্বয়ং ট্রাম্পের কাছ থেকেই বিষয়টি জানতে চেয়েছিল মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ। তার জবাবে ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, মাস্কের সঙ্গে এখনই কথা বলার ইচ্ছে তাঁর নেই। ট্রাম্পের এ-ও দাবি, মাস্কই আসলে কথা বলতে চেয়েছেন। কিন্তু তিনি কথা বলতে চান না।

দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের ‘সুসম্পর্ক’ নিয়ে চর্চা শুরু হয় বিভিন্ন মহলে। প্রায়ই দু’জনকে একসঙ্গে দেখা যেত। প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসে মাস্ককে নিজের বিশেষ পরামর্শদাতা হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন ট্রাম্প। তাঁর জন্য আলাদা একটি দফতরও তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্পের ‘জনকল্যাণমূলক’ বিলকে ‘জঘন্য পদক্ষেপ’ বলে চিহ্নিত করে প্রশাসনিক উপদেষ্টার পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেন মাস্ক। ছেড়ে দেন খরচ কমানোর দফতরের দায়িত্বভারও। তার পর থেকেই দু’জনের সম্পর্কে অবনতি ঘটে। গত কয়েক দিনে তা প্রকাশ্যেও চলে এসেছে।

বৃহস্পতিবার ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, মাস্ককে ছাড়াই তিনি আমেরিকার পেনসিলভেনিয়া প্রদেশে জিততে পারতেন। ট্রাম্পের ওই দাবি সম্বলিত ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই একটি পোস্ট করেন টেসলা এবং এক্স-এর কর্ণধার মাস্ক। সেখানে তিনি লেখেন, “আমার সাহায্য ছাড়া ট্রাম্প এই নির্বাচনে জিততে পারতেন না।” মাস্কের দাবি, সে ক্ষেত্রে মার্কিন আইনসভার নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজ়েন্টেটিভসে ডেমোক্র্যাটরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতেন আর উচ্চকক্ষ সেনেটে অল্পের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় থাকত রিপাবলিকানদের। অবশ্য ভোটে জিততে ট্রাম্পকে তিনি কী ভাবে সাহায্য করেছিলেন, তার ব্যাখ্যা দেননি মাস্ক।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সুর আরও চড়িয়ে ‘বড় বোমা’ ফেলার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মাস্ক। বিতর্কিত ‘এপস্টাইন ফাইলে’ ট্রাম্পের নাম রয়েছে, সে কথা উল্লেখ করে দাবি করেছেন, শুধু এই কারণেই ফাইলটি প্রকাশ্যে আনা হয়নি। বোমা সংক্রান্ত পোস্টটি পুনরায় প্রকাশ্যে এনে মাস্ক লিখেছেন, “ভবিষ্যতের জন্য এটাকে মাথায় রেখে দিন। সত্যি সামনে আসবে।”

প্রসঙ্গত, জেফ্রি এপস্টাইন নামের এক বিতর্কিত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ এক জনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা ঠুকেছিলেন ভার্জিনিয়া গিফরে নামের এক মহিলা। মামলার নথিতে এপস্টাইন-ঘনিষ্ঠদের যাবতীয় তথ্য তুলে ধরা হয়েছিল। শোনা গিয়েছিল, যৌন কেলেঙ্কারিতে দোষী সাব্যস্ত এপস্টাইনের সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা। এ-ও শোনা যায় এপস্টাইনের বিলাসবহুল বিমান ‘লোলিটা এক্সপ্রেস’-এ চেপে বেশ কয়েক বার বিভিন্ন দেশে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। চলতি বছরের গোড়ায় ওই ফাইলের একাংশ প্রকাশ্যে আনা হয়। কিন্তু মাস্ক ওই ফাইলের পুরো অংশ প্রকাশ্যে আনার দাবি জানিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, একটি সাক্ষাৎকারে প্রশ্নকর্তার সুরে সুর মিলিয়ে মাস্ক বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ‘ইমপিচ’ (পদচ্যুত) করা উচিত এবং তাঁর জায়গায় ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সকে বসানো উচিত।

এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেছিলেন, “আমি ইলনের ব্যাপারে খুবই হতাশ। ওঁর সঙ্গে আর দারুণ সম্পর্ক থাকবে কি না জানা নেই।” তার পর একের পর এক ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করে মাস্কও বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, দু’জনের মধ্যে ‘দারুণ সম্পর্ক’ আর নেই। ট্রাম্পও মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্সের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের কথা বলেছেন।

সেই আবহে দু’জনের একান্তে আলোচনায় বসার জল্পনা তৈরি হওয়ায় অনেকেই মনে করছিলেন, এ বার হয়তো এই আক্রমণ, প্রতি আক্রমণ থামবে। হয়তো নিজেদের মধ্যে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ মিটিয়ে নেবেন ট্রাম্প-মাস্ক। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্টের মাস্ক সম্পর্কে ‘মাথা খারাপ’ মন্তব্যের পর তা আর সম্ভব হবে না বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Donald Trump Elon Musk
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy