আফগানিস্তানের বাগরাম ঘাঁটি ফেরত পেতে চাইছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
চিনের পরমাণু কেন্দ্রের কাছাকাছি অবস্থিত এই ঘাঁটি কৌশলগত ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আফগানিস্তানে যে দীর্ঘ সময় আমেরিকান বাহিনীর উপস্থিতি ছিল, সেই সময়ে আমেরিকার অন্যতম বৃহত্তম সেনা ঘাঁটি ছিল এটি। ২০২১ সালে আমেরিকান প্রশাসন যখন আফগানিস্তান থেকে বাহিনী প্রত্যাহার করে, তার পর থেকে তালিবানের দখলেই রয়েছে এই ঘাঁটি। কিন্তু গত কাল আচমকাই সেই ঘাঁটি ফেরত পাওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন ট্রাম্প।
লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়র স্টার্মারের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করছিলেন ট্রাম্প। তখনই আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আমরা যখন আফগানিস্তান ছেড়ে গিয়েছিলাম, সেটা পূর্ণ শক্তি এবং সম্মানের সঙ্গে করতে চেয়েছিলাম। এখন আমরা বাগরাম ঘাঁটিটি রাখতে চাইছি, যেটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সেনা ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।’’ এর পরেই ট্রাম্প যোগ করেন, ‘‘চিনের পরমাণু কেন্দ্র থেকে মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে রয়েছে ওই ঘাঁটি।’’ এবং বেজিংয়ের পরমাণু কর্মসূচিতে নজর রাখতেই যে ওয়াশিংটনের এই পরিকল্পনা, তা আলাদা করে খোলসা করতে হয়নি ট্রাম্পকে। তবে তালিবান প্রশাসন আজই সমাজমাধ্যমে এক বিবৃতিতে জানিয়ে দিয়েছে, নতুন করে আফগানিস্তানের মাটিতে আমেরিকান সেনার উপস্থিতি তারা কোনও ভাবেই মেনে নেবে না।
বাগরামের দখল পেতে তালিবান প্রশাসনের সঙ্গে তাঁর সরকার আলোচনা শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। বাগরামের দখল নিতে আফগানিস্তানে আবার অন্তত ১০ হাজার সেনা পাঠাতে হবে ট্রাম্প প্রশাসনকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হোয়াইট হাউসের এক কর্তা অবশ্য স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে বাগরাম দখলের কোনও পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের নেই। জ়াকির জালাল নামে আফগানিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা জানাচ্ছেন, আমেরিকার সঙ্গে যে কোনও ধরনের সহযোগিতামূলক আলোচনাকেই তাঁরা স্বাগত জানান। কিন্তু সেটা বাণিজ্য এবং শিল্প ক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য। তবে আমেরিকান সেনাকে আফগানিস্তানের মাটিতে আর ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন জ়াকির।
আফগানিস্তান ছাড়ার সময়ে আমেরিকান সেনাবাহিনী বিপুল পরিমাণ অস্ত্র এবং যুদ্ধ সরঞ্জাম সে দেশে ফেলে এসেছিল। যার জন্য মাঝে মধ্যেই পূর্বসূরি জো বাইডেন প্রশাসনকে দায়ী করে থাকেন ট্রাম্প। এ বারও সেই প্রসঙ্গ তুলেছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট। বলেছেন, ‘‘ওরা বিপুল সরঞ্জাম সেই সময়ে ওখানে ফেলে এসেছিল। আমেরিকান বাহিনীর সব সরঞ্জাম, যুদ্ধাস্ত্র ওখান থেকে নিয়ে আসা উচিত ছিল।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)