Advertisement
E-Paper

‘ওদের হাতে আর বোমা নেই’! ইরানে হামলাকে ‘সফল’ বললেন ট্রাম্প, মার্কিন ঘাঁটি ‘নিশ্চিহ্ন’ করার হুমকি দিলেন খামেনেই

রবিবার আমেরিকান সেনাবাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়ে ট্রাম্প তাঁর সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ-’-এ লেখেন, “অন্য কোনও দেশের সেনাবাহিনী এখনও পর্যন্ত এই ধরনের অভিযান চালাতে পারেনি।” তিনি তাঁর সমাজমাধ্যমে আরও লেখেন, “ইরানের হাতে আর বোমা নেই।”

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৫ ০২:০৩
ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

রবিবার ইরানের অন্তত তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালায় আমেরিকা। হামলার পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, আমেরিকার সেনাবাহিনী ইরানের ফোরডো, নাতান্‌জ় ও ইসফাহানে অবস্থিত তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে ‘সফল ভাবে’ হামলা চালিয়েছে। তিনি তাঁর সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ’-এ আমেরিকার এই ‘অভিযানের’ কথা লেখেন। পাশাপাশি জানান, এই হামলার পর ইরানের হাতে আর বোমা নেই।

রবিবার আমেরিকান সেনাবাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়ে ট্রাম্প তাঁর সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ’-এ লেখেন, “অন্য কোনও দেশের সেনাবাহিনী এখনও পর্যন্ত এই ধরনের অভিযান চালাতে পারেনি।” তিনি তাঁর সমাজমাধ্যমে আরও লেখেন, “ইরানের হাতে আর বোমা নেই।” সমাজমাধ্যমেই ট্রাম্পের বার্তা, ‘‘এখন শান্তির সময়।’’ ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পরেও ইরান জানিয়ে দিয়েছে, তারা দমে যাবে না। প্রতিশোধ তারা নেবেই। ইরান কিছু বছর আগে একটি মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায়। দরকার পড়লে তারা আবার মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা করতে পারে। বিবৃতি প্রকাশ করে ইরানের রেভলিউশনারি গার্ড জানিয়েছে, আমেরিকার পালানোর পথ নেই। তেহরানেরও আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। এমন জবাব দেওয়া হবে যে অনুশোচনায় ভুগবে আমেরিকা! ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, ‘‘গত সপ্তাহে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার আগে ইজ়রায়েল হামলা চালিয়েছিল। এ বার আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনার মাঝে হামলা চালাল আমেরিকা। এর থেকে কী প্রমাণিত হয়?’’

আইআরএনএ সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইয়ের পরামর্শদাতা আলি আকবর ভেলায়াতি বলেন, “এই হামলার পর আমেরিকার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আর বজায় থাকবে না। তিনি আরও বলেন, “যেই দেশগুলি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে সমর্থন করবে, তাদেরকেও আমরা লক্ষ করব।” ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ডের সাম্প্রতিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যেখান থেকে আমেরিকা এই হামলা চালিয়েছে, সেই স্থানটি চিহ্নিত করা গিয়েছে। এই ঘটনার পরে এই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক ঘাঁটির পরিমাণ শক্তি নয়, তাদের দুর্বলতা বৃদ্ধি করে।”

রবিবার, মার্কিন প্রেসিডেন্ট সমাজমাধ্যমে রিপাবলিকান পার্টির সদস্য থমাস ম্যাসির উদ্দেশে লেখেন, “যখন সারা বিশ্ব এই অভিযানকে সমর্থন করছে, সেখানে থমাস ইরানের উপর মার্কিন হামলাকে সাংবিধানিক নয় বলে সমালোচনা করেছেন।” তিনি আরও লেখেন, “গতকাল ইরানের সামরিক ঘাঁটিগুলিতে সফল ভাবে হামলা চালিয়েছে আমেরিকার সেনাবাহিনী। এই ঘটনার পরে যেখানে সকলে আমেরিকাকে প্রশংসা করছে, সেখানে থমাস আমেরিকার নিন্দা করছেন। আমেরিকার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।”

যদিও ইরান জানিয়েছে, আমেরিকা হামলা চালালেও তিন পরমাণুকেন্দ্র থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। ফলে নাগরিকদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। ঘটনাচক্রে, আমেরিকার হামলার ঠিক আগেই কিছু তৎপরতা লক্ষ করা গিয়েছিল ইরানের ফোরডোর ওই পরমাণুকেন্দ্রে। রবিবার তারই উপগ্রহচিত্র প্রকাশ্যে এসেছে। স্যাটেলাইট সংস্থা ‘ম্যাকসার’-এর এক বিশেষজ্ঞকে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদপত্র ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ জানিয়েছে, আমেরিকার হামলার দু’দিন আগেই কিছু অস্বাভাবিক তৎপরতা লক্ষ করা গিয়েছিল ফোরডোর পরমাণুকেন্দ্রে। পরমাণুকেন্দ্রটির যে জায়গায় সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, সেই রাস্তায় ১৬টি মালবাহী ট্রাক দেখা গিয়েছিল গত ১৯ জুন। পরের দিনের উপগ্রহচিত্রে দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েকটি ট্রাক উত্তর-পশ্চিম দিকে আরও এক কিলোমিটার মতো সরে গিয়েছে। এর সঙ্গে আরও কয়েকটি ট্রাক এবং বুলডোজ়ার দেখা গিয়েছে পরমাণুকেন্দ্রে ঢোকার মুখে।

উপগ্রহচিত্র প্রকাশ্যে আসার পরেই জল্পনা তৈরি হয়েছে, আমেরিকা হামলা চালাতে পারে ভেবেই কি পরমাণু প্রকল্পের জন্য জরুরি সরঞ্জাম সরানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল ইরান? কেউ কেউ মনে করছেন, ইরান তাদের পরমাণু প্রকল্পের সরঞ্জাম যাতে কোনও অজ্ঞাত জায়গায় সরিয়ে ফেলতে না পারে, তাই দু’সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেই আচমকা ইরানের তিন পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালালেন ট্রাম্প। যদিও এই দাবির আনুষ্ঠানিক সমর্থন মেলেনি আমেরিকা বা ইরানের পক্ষ থেকে।

Iran-Israel Conflict Donald Trump USA Iran
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy