E-Paper

পটচিত্র আর ফুচকা এরলাঙ্গেনের মণ্ডপে

এরলাঙ্গেনের এ রকম বেশ কিছু বাঙালি মিলে তৈরি করা একটা দল ‘দুর্গাভিলে’। যাদের মূল উদ্দেশ্য— দুর্গাপুজোর পাঁচটা দিন সবাই মিলে পুজোর মধ্যে দিয়েই আনন্দ করে কাটানো।

অনিন্দ্য ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:১১
এ বছর দুর্গাভিলের পাঁচ বছরের পুজো।

এ বছর দুর্গাভিলের পাঁচ বছরের পুজো। —নিজস্ব চিত্র।

জার্মানির দক্ষিণ-পূর্বে বাভারিয়া প্রদেশের ফ্রাঙ্কোনিয়া অঞ্চলে মাঝারি মাপের শহর এরলাঙ্গেন। এক লক্ষের কিছু বেশি লোকের বাস। তার মধ্যে এরলাঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয় আর বেশ কিছু বড় শিল্পসংস্থা থাকার সুবাদে এক-চতুর্থাংশ মানুষ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা। এ রকম একটা আন্তর্জাতিক শহর এরলাঙ্গেনের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ ভারতীয়। স্বাভাবিক ভাবেই তার মধ্যে বাঙালিও আছেন অনেক।

এরলাঙ্গেনের এ রকম বেশ কিছু বাঙালি মিলে তৈরি করা একটা দল ‘দুর্গাভিলে’। যাদের মূল উদ্দেশ্য— দুর্গাপুজোর পাঁচটা দিন সবাই মিলে পুজোর মধ্যে দিয়েই আনন্দ করে কাটানো। বিদেশে বাস করার জন্য দেশের উৎসবের অভাব বোধ যাতে না হয় তার আয়োজন করা।

এ বছর দুর্গাভিলের পাঁচ বছরের পুজো। প্রত্যেকবারই প্রতিমা আর মণ্ডপসজ্জা থাকে এই পুজোর মুখ্য বৈশিষ্ট্য। পুজো হয় নিজেদের তৈরি প্রতিমায়। দুর্গাভিলের অন্যতম সদস্য দীপঙ্কর সরকার নিজের হাতে প্রতিমা তৈরি করেন। মণ্ডপসজ্জায় তুলে ধরা হয় নতুন নতুন বিষয় বা ‘থিম’। গত বছরের ইটাচুনা রাজবাড়ির আদলে তৈরি মণ্ডপের পর, এ বছর দুর্গাভিলের মণ্ডপ সজ্জায় তুলে ধরা হচ্ছে বাংলার ‘পটচিত্র’ শিল্পশৈলীকে। এই মণ্ডপ তৈরির পিছনে থাকে দলের সদস্যদের সম্মিলিত পরিশ্রম, যেখানে পরিশ্রমের কষ্টের থেকেও বড় হয়ে ওঠে সবাই একসঙ্গে পুজোর কাজ করার আনন্দ।

পুজোর পুরোহিত আসেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে। ষষ্ঠীতে বোধন থেকে দশমীতে বিসর্জন— পাঁচ দিনের পুজো হয় দিনক্ষণ মেনে। ভারত আর জার্মানির সময়ের পার্থক্যের জন্য যদিও কখনও কখনও পঞ্জিকা-নির্ধারিত সময় অনুসরণ করতে অসুবিধা হয়, তবে বেশির ভাগ সময় চেষ্টা করা হয় পঞ্জিকার সময় মেনেই পুজো করার।

উৎসবে বাঙালিদের সাথে যোগ দেন বহু অবাঙালিও। এমনকি স্থানীয় জার্মানরাও পুজো দেখতে আসেন, উপভোগ করেন ঢাকের তাল আর পুজোর গন্ধ। সবার জন্য প্রত্যেক দিন দু’বেলা ভোগের ব্যবস্থা থাকে। আর থাকে সন্ধেবেলা মণ্ডপের বাইরে ফুচকার স্টল। দুর্গাভিলের সদস্যদের নিজেদের হাতে তৈরি ফুচকা আর তেঁতুল জলের আকর্ষণে ভিড় জমে যায় সেই দোকানে। পুজোর উপাচার আর খাওদাওয়ার পাশাপাশি উৎসবের আনন্দে আলাদা মাত্রা যোগ করার জন্য থাকে ছোটদের ‘বসে আঁকো’ প্রতিযোগিতা, বড়দের শাঁখ বাজানো আর শাড়ি পড়ার মতো মজাদার প্রতিযোগিতা— মজার ছলে ঐতিহ্য আর সংস্কৃতিকে ধরে রাখার চেষ্টা। এ ভাবেই দুর্গাভিলের পুজো অনেক মানুষকে এক জায়গায় নিয়ে এসে আনন্দোৎসবকে করে তোলে সর্বাঙ্গীন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja Germany Indian rituals Bengali Culture Bengali Festival

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy