২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে এই খবর করেছিল আনন্দবাজার অনলাইনও। খবরের সারমর্ম ছিল, আফ্রিকার দেশ এরিট্রিয়া নির্দেশ জারি করেছে, সে দেশের প্রত্যেক পুরুষকে অন্তত দু’টি বিয়ে করতেই হবে। না করলে সশ্রম কারাদণ্ড। কিন্তু এই ‘খবর’টি পুরোপুরি ভুয়ো। সম্প্রতি নেটমাধ্যমে এটি নতুন করে সামনে আসার পর আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি (AFP) ফ্যাক্ট চেক (Fact Check) করে। তাতে দেখা যাচ্ছে, খবরটি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। এরিট্রিয়ার তথ্যমন্ত্রী ইয়েমানে গেব্রেমেস্কেল এএফপি-কে বলেছেন, “এটি একটি পুরনো ভুয়ো খবর যা পাঁচ বছর আগে প্রচারিত হয়েছিল, ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে।” ঘটনাচক্রে ২০১৬ সালেও ইয়েমানে টুইট করে এই ভুয়ো খবর সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সেই টুইট আনন্দবাজার অনলাইনের নজর এড়িয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘ সময় ধরে এই ভুল খবরটি অনিচ্ছাকৃত ভাবে থেকে যাওয়ার কারণে আমরা দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে এ ধরণের খবর পরিবেশনের সময় আনন্দবাজার অনলাইন আরও বেশি সতর্ক থাকবে।
২০১৬ সালে যে টুইট করেছিলেন এরিট্রিয়ার তথ্যমন্ত্রী।
Media frenzy to parrot this ludicrous, fabricated & trite story of the Mufti's presumed religious decree on mandatory polygamy is appalling
— Yemane G. Meskel (@hawelti) January 27, 2016
২৮ জানুয়ারি ২০১৬ যে খবরটি আনন্দবাজার অনলাইনে প্রচারিত হয়েছিল তা হুবহু নীচে রেখে দেওয়া হল:
অন্তত দুটো বিয়ে করতেই হবে। দেশের সব পুরুষের জন্য এমনই ফতোয়া জারি করল এরিট্রিয়া সরকার। নির্দেশ অমান্য করলেই মিলবে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড। এমনকী কোনও স্ত্রী যদি তাঁর স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ে করতে বাধা দেন, শাস্তি হবে তাঁরও।
এক কেনিয়ান ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এই ফতোয়ার অনুবাদ ছড়িয়ে পড়তেই রীতিমতো ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ফতোয়ায় লেখা আছে, ‘‘বহুগামিতা নিয়ে ঈশ্বরের আইন মেনে, এবং দেশে পুরুষ কমে যাওয়ার পরিস্থিতি বিবেচনা করে, এরিট্রিয়া সরকারের ধর্ম সংক্রান্ত দফতর এই সিদ্ধান্তগুলি নিয়েছে:
…প্রথমত, প্রত্যেক পুরুষ অন্তত দু’জন মহিলাকে বিয়ে করবেন এবং যে পুরুষ তা করতে অস্বীকার করবেন তাঁকে কঠোর পরিশ্রম সহ যাবজ্জীবন কারাবাস করতে হবে।
...যে মহিলা তাঁর স্বামীকে আবার বিয়ে করতে বাধা দেবেন তাঁকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হবে।’’
আফ্রিকার ছোট্ট দেশ এরিট্রিয়ার জনসংখ্যা চৌষট্টি লক্ষেরও কিছু কম। এর এক দিকে সুদান আর ইথিওপিয়া, এক দিকে জিবুটি, এক দিকে লোহিত সাগর। ইথিওপিয়ার থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন এরিট্রিয়ার জন্ম হয় ১৯৯৩ সালে। এর পর ১৯৯৮ থেকে ২০০০ পর্যন্ত দু’বছর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলে ইথিওপিয়ার সঙ্গে। যুদ্ধে মারা পড়েছিলেন বহু পুরুষ। সেই থেকেই দেশে নারীর অনুপাতে বেশ কমে যায় পুরুষের সংখ্যা। এই নারী-পুরুষ অনুপাতের যুক্তি দেখিয়েই নাকি সম্প্রতি জারি হয়েছে এই অদ্ভুত ফতোয়া।
আরও দেখুন