বৈঠক শেষে বেরিয়ে আসছেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্স সিপ্রাস। বৃহস্পতিবার ব্রাসেলস-এ। ছবি রয়টার্স।
গভীর সঙ্কটে ‘ইউরো’ মুদ্রাব্যবস্থা। ব্রাসেলস শহরে গ্রিসের সঙ্গে ঋণদাতা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার (আইএমএফ)-এর জরুরি বৈঠকেও কোনও ফল মিলল না। বুধবার গভীর রাতে শেষ হওয়া এই বৈঠকের শেষে শূন্য হাতেই ফিরলেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সি সিপ্রাস। গ্রিসের দেওয়া প্রস্তাবও বাতিল হয়ে যায়। তবে আরও আলোচনা চলবে বলে জানা গিয়েছে। ৩০ জুনের মধ্যেই দু’পক্ষকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হবে।
পাঁচ বছরের আর্থিক সঙ্কটে ভোগা গ্রিস দ্বিতীয় বার ঋণ নেওয়ার অপেক্ষায়। কিন্তু ঋণ নিতে গেলে মানতে হবে বেশ কিছু ‘কড়া’ শর্ত। এই শর্ত নিয়েই তীব্র মতভেদ দু’পক্ষের। জানুয়ারিতে গ্রিসে অতি-বামপন্থী সরিজা দল ক্ষমতা আসার পরে এই মতভেদ আরও বেড়েছে। আইএমএফ, জার্মানির মতো বড় ঋণদাতার শর্ত মানতে চাপ আরও বাড়িয়েছে। কোনও শর্ত সামান্য লঘু করতেও রাজি নয় তারা।
বেশ কয়েক বছর ধরে ঋণের শর্ত মানার চাপে গ্রিসের আম-জনতার হাসফাঁস অবস্থা। সাধারণ নাগরিকের কষ্ট লাঘবের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে সিপ্রাস সরকার। তাই ঋণদাতাদের পরামর্শ মেনে পেনশন খাতে ১৫ শতাংশ বরাদ্দ হ্রাস, শ্রম আইন সংস্কার, সরকারি বেতন হ্রাস, যুক্তমূল্য কর বৃদ্ধির মতো প্রস্তাব মানা সিপ্রাসের কাছে রাজনৈতিক আত্মহত্যার সামিল। তাই নতুন প্রস্তাব নিয়ে ব্রাসেলস-এ আলোচনায় গিয়েছিলেন সিপ্রাস। অবসরের বয়সসীমা বাড়ানো, কয়েকটি ক্ষেত্রে যুক্তমূল্য করবৃদ্ধি, নতুন কর বসানোর মতো বেশ কিছু প্রস্তাব ছিল। প্রাথমিক ভাবে উৎসাহ দেখালেও শেষ পর্যন্ত ঋণদাতাদের কাছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অল্পই মনে হয়েছে।
কিন্তু ৩০ জুনের মধ্যে আলোচনায় ফল না মিললে এক দিকে গ্রিস ঋণের কিস্তি শোধ করতে পারবে না। অন্য দিকে, নতুন ঋণ নিতেও পাবে না। তার উপরে বেশ কয়েক দিন ধরে গ্রিসের ব্যাঙ্কগুলি থেকে ইউরো তুলে নেওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক (ইসিবি) সাহায্য না করলে গ্রিসের ব্যাঙ্ক ব্যবস্থাও ভেঙে পড়বে। সব মিলিয়ে চরম সঙ্কটে পড়বে গ্রিসের অর্থনীতি। তখন গ্রিস ‘ইউরো’ মুদ্রাব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। ফলে ‘ইউরো’ মুদ্রাব্যবস্থাও সঙ্কটে পড়ে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy