Advertisement
E-Paper

ঘণ্টাখানেক পরেই রাস্তা কিন্তু স্বাভাবিক

সারা বিশ্ব যখন এই দুর্ঘটনার খবর নিয়ে তোলপাড়, কলকাতা থেকে বারবার আত্মীয়-বন্ধুদের ফোন আসছে, তখন মিনায় বসে আমরা দেখছি, রাস্তাঘাটে সব কিছুই স্বাভাবিক।

আব্দুর রহমান

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:১০
ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে পূণ্যার্থীদের মৃতদেহ। তার মধ্যেই চলছে উদ্ধার কাজ। মিনায় বৃহস্পতিবার। ছবি: পিটিআই।

ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে পূণ্যার্থীদের মৃতদেহ। তার মধ্যেই চলছে উদ্ধার কাজ। মিনায় বৃহস্পতিবার। ছবি: পিটিআই।

সারা বিশ্ব যখন এই দুর্ঘটনার খবর নিয়ে তোলপাড়, কলকাতা থেকে বারবার আত্মীয়-বন্ধুদের ফোন আসছে, তখন মিনায় বসে আমরা দেখছি, রাস্তাঘাটে সব কিছুই স্বাভাবিক। লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী অন্য সময়ের মতোই আবার ভিড় করে জমরাতে (শয়তানকে পাথর ছোড়ার ধর্মীয় অনুষ্ঠানে) যাচ্ছেন। বড়জোড় ঘণ্টাখানেক হবে। তার মধ্যেই সব পরিষ্কার করে দিল সৌদি প্রশাসন। আবার রাস্তায় নামল আগের মতোই মানুষের ঢল।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১০ হাজারেরও বেশি হজযাত্রী এসেছেন। তাঁদের ‘খাদিমুল হুজ্জজ’ অর্থাৎ, সেবক হিসেবে এসেছি আমরা ২৪ জন। আমরা সবাই মিনার ৩২ নম্বর মকতবে রয়েছি। আমি এ দিন জমরাতে যাইনি। মকতবেই ছিলাম। এখান থেকে জমরাতের জায়গাটি কিলোমিটার আড়াই বা তার কিছু বেশি হবে। ওখানে তীর্থযাত্রীরা লাইন দিয়ে যান ‘শয়তান’কে পাথর ছুড়তে। প্রতি দিন লক্ষ লক্ষ মানুষ সকাল থেকেই নাগাড়ে যেতে থাকেন জমরাতে। সে ভিড় কল্পনাও করা যায় না। লাখে লাখে মানুষ যেতে থাকেন, রাস্তা জুড়ে থিকথিকে ভিড়। এ দিনও একই ভাবে সকাল থেকে ভিড় শুরু হয়ে গিয়েছিল ওই রাস্তায়।

প্রিয়জনের দেহ আঁকড়ে কান্না। ছবি: রয়টার্স।

দশটা নাগাদ আমাদের কাছে খবর আসে, ওই পথেই জমরাত থেকে একটু আগে এক রাস্তার মোড়ে দু’দিক থেকে আসা লোকের মধ্যে প্রবল ধাক্কাধাক্কিতে কয়েকশো মানুষ মারা গিয়েছেন। এই কথা শোনামাত্রই ভারত বা কলকাতা থেকে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের জন্য আমাদের চিন্তা শুরু হয়।

বারবার মোবাইলে ফোন করে আমরা ওঁদের খবর নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু কিছুতেই মোবাইলে ওঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। আমরা আশপাশে খবর নিয়ে শুনেছিলাম, যেখানে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, ওই এলাকাটা সৌদি পুলিশ দু’দিক থেকে আটকে দিয়েছে। কাজেই ওখানে যাওয়ার চেষ্টা করে কোনও লাভ নেই, সেটাও বুঝতে পারছিলাম।

মৃতদেহের স্তূপ। ছবি: রয়টার্স।

সৌদি প্রশাসনের এক পরিচিত ভদ্রলোক জানালেন, ঘটনাস্থল থেকে হতাহতদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মিনার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে। প্রচুর অ্যাম্বুল্যান্স ওখানে জড়ো হয়েছে। আমরাও অনেকগুলো অ্যাম্বুল্যান্সকে দ্রুত ওখান দিয়ে যাতায়াত করতে দেখেছি। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পরেই শুনলাম, আবার রাস্তা আগের মতোই খুলে দিয়েছে। তার মধ্যেই হতাহতদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আমাদের চেনাশোনা যাঁরা গিয়েছিলেন, তখনও তাঁদের খবর পাইনি। তাই উৎকণ্ঠাটা ছিলই। তা ছাড়া, বাড়ি থেকেও বারবার বন্ধুবান্ধব, পরিজনদের ফোন আসতে শুরু করেছে। তবে সন্ধে সাতটা নাগাদ আমাদের চেনাশোনা যাঁরা গিয়েছিলেন, তাঁরা সবাই-ই প্রায় ফিরে এসেছেন। ইনশাল্লাহ, তাঁদের কারওরই সে ভাবে কোনও ক্ষতি হয়নি। দু’এক জন অল্পবিস্তর জখম হতে পারেন। কিন্তু বড় কোনও খারাপ খবর এখনও পর্যন্ত পাইনি। ফিরে আসা চেনা এক বন্ধু জানালেন, ভারতীয়রা দুর্ঘটনাস্থলের আগে কিংবা পরে ছিলেন। সেই কারণে, তাঁদের দু’এক জনকে বাদ দিলে সে ভাবে দুর্ঘটনায় কেউ জখম হননি। যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই আফ্রিকা বা পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা।

সবিস্তার পড়তে ক্লিক করুন

তবে সৌদি প্রশাসনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এ নিয়ে অযথা আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। সব কিছুই এখন এক্কেবারে স্বাভাবিক। কাজেই, জুম্মাবারেও জমরাতের পরব হবে অন্য দিনের মতোই।

এই সংক্রান্ত আরও:

পড়ুন: এ রাজ্যের হজযাত্রীরা সুস্থই আছেন, আশা কমিটির

পড়ুন: উল্টো পথে ঢুকে পদপিষ্ট, মৃত্যু ৪ ভারতীয়েরও

পড়ুন: হাত পিছলে গেল, কান্না বৃদ্ধ স্বামীর

mecca stampede mecca stampede situation abdur rahaman mecca stampede location mecca normalcy eye witness mecca stampede witnes mecca description
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy