Advertisement
E-Paper

এখনই সম্ভব নয় চোকসীর প্রত্যর্পণ, ভারতের আবেদনের বিচার হবে বেলজিয়ামে, দেরি হতে পারে কোন কারণে?

চোকসীকে যেহেতু বেলজিয়ামের পুলিশ গ্রেফতার করেছে, তাই বর্তমানে বেলজিয়ামের আইন অনুসারেই যাবতীয় প্রক্রিয়া এগোবে। বেলজিয়ামের আদালত প্রত্যর্পণে অনুমতি দিলে তবেই চোকসীকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া যাবে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:২০
পলাতক মেহুল চোকসী।

পলাতক মেহুল চোকসী। — ফাইল চিত্র।

পলাতক হিরে ব্যবসায়ী মেহুল চোকসী ধরা পড়েছেন বেলজিয়ামে। চোকসীর প্রত্যর্পণে উদ্যোগী হয়েছে ভারতও। কিন্তু তাঁকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার ব্যবস্থার মুখোমুখি করতে এখনও কিছুটা অপেক্ষা করতে হতে পারে বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞেরা। কারণ, প্রত্যর্পণের আর্জি প্রথমে বেলজিয়ামের আদালতে বিবেচনা করা হবে। সেখানে প্রত্যর্পণের নির্দেশ দেওয়া হলে সরকারি আদেশ জারি করতে হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক থেকে। সে ক্ষেত্রে চোকসীর শারীরিক সমস্যার কারণে প্রত্যর্পণ বিলম্বিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।

প্রাক্তন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল আমন লেখির মতে, প্রত্যর্পণ ঠেকাতে চোকসী যে আইনি পথগুলির কথা বলছেন, সেগুলি প্রাথমিক ভাবে গ্রহণযোগ্য বলে মনে হচ্ছে না। অপর এক আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ের বক্তব্য, চোকসী ধরা পড়া হল প্রথম পদক্ষেপ। তবে প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ হতে পারে। চোকসীকে খুব শীঘ্রই ভারতের বিমানে তোলা যাবে, এমন সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন তিনি। তবে উভয় আইনজীবীই মনে করছেন, যে দেশের কাছে প্রত্যর্পণের অনুরোধ করা হচ্ছে, সেই দেশেও অভিযোগটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হতে হবে। বস্তুত, ভারত এবং বেলজিয়ামের দ্বিপাক্ষিক প্রত্যর্পণ চুক্তিতেও সে কথাই উল্লেখ রয়েছে।

কী ভাবে এই প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া চলে, তা-ও ব্যাখ্যা করেছেন লেখি। প্রাক্তন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল জানান, কোনও একটি নির্দিষ্ট অপরাধের জন্য প্রথমে বিচারবিভাগীয় কর্তৃপক্ষ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ওই গ্রেফতারি পরোয়ানার ভিত্তিতে প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানানো হয়। কী কী অভিযোগ রয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো হয় প্রত্যর্পণের অনুরোধে, এবং বোঝানো হয় কেন অভিযুক্তকে নিজেদের রাজ্যে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন। চোকসীর প্রত্যর্পণ প্রসঙ্গে তাঁর ব্যাখ্যা, অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। তাঁর প্রত্যর্পণের অনুরোধ বিবেচনা না-করা পর্যন্ত তিনি সে দেশেই আটক থাকবেন। তবে এর মধ্যে তাঁর জামিন মঞ্জুর করা যেতে পারে।

হেগড়ের মতে, প্রত্যর্পণ রুখতে মানবাধিকার সংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়টিও তুলে ধরতে পারেন চোকসীর আইনজীবী। চোকসীকে যেহেতু বেলজিয়ামের পুলিশ আটক করেছে, তাই বর্তমানে বেলজিয়ামের আইন অনুসারেই যাবতীয় প্রক্রিয়া এগোবে। বেলজিয়ামের আদালত প্রত্যর্পণে অনুমতি দিলে তবেই চোকসীকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া যাবে। আদালতের নির্দেশের পর সে দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক থেকেও প্রশাসনিক স্তরে একটি নির্দেশিকা জারি করতে হবে।

চোকসীর আইনজীবী দাবি করেছেন, তাঁর মক্কেলের প্রত্যর্পণ ঠেকাতে তিনি ওই আবেদনের নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে আদালতে জানাবেন। বস্তুত, ভারত এবং বেলজিয়ামের প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে, রাজনৈতিক কোনও কারণ জড়িত থাকলে প্রত্যর্পণের অনুরোধ বাতিল করা হতে পারে। যদিও প্রাক্তন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের বক্তব্য, চোকসীর আইনজীবীর ওই যুক্তি ‘ভিত্তিহীন’। তিনি জানান, প্রত্যর্পণ এড়াতে এই বিষয়টিকে অনেক ক্ষেত্রে অপব্যবহারের সুযোগ থাকে। তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যতিক্রমের দিকটি ক্রমশ কমিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমানে বেলজিয়ামের প্রচলিত আইনে ঘটনাটি অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবে কি না, সেটিই মূল বিবেচ্য বলে মনে করছেন লেখি।

তবে চোকসীর শারীরিক সমস্যার বিষয়টির জন্য প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ায় দেরি হতে পারে বলে মনে করছেন হেগড়ে। এক মাত্র এই সমস্যাটিকেই প্রত্যর্পণ ঠেকাতে চোকসীর আইনজীবী ব্যবহার করতে পারেন বলে মত তাঁর। সে ক্ষেত্রে প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ার আগে চোকসীর চিকিৎসা সম্পূর্ণ করার ব্যবস্থা করা হতে পারে বলে মনে করছেন তিনি। তবে এর জন্য প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ায় দেরি হলেও, এটিকে ব্যবহার করে প্রত্যর্পণ পুরোপুরি এড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মত তাঁর।

Mehul Choksi Belgium
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy