Advertisement
E-Paper

‘শ্মশানভূমি’ গাজ়ায় শান্তির দ্বিতীয় দিন! গুলির শব্দ নেই, থেমেছে ক্ষেপণাস্ত্র, দলে দলে প্যালেস্টাইনি ফিরছেন ‘ঘরে’

যুদ্ধ চলাকালীন ইজ়রায়েল বার বার হুঁশিয়ারি দিয়ে গাজ়া ছাড়ার বার্তা দিয়েছে। বিশেষত উত্তর গাজ়া খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রাণ বাঁচাতে এক দিন নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে যে পথ ধরে চলে গিয়েছিলেন, সংঘর্ষবিরতি কার্যকর হওয়ার পর আবার সেই পথে বাড়ি ফিরছেন বহু প্যালেস্টাইনি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৫ ১৯:৩০
Gaza’s night without the sounds of Israeli drones and explosions

এ ভাবেই আবার গাজ়ায় নিজের বাড়ি ফিরছেন প্যালেস্টাইনিরা। ছবি: রয়টার্স।

কোনও গোলাগুলির শব্দ নেই। বোমা পড়ছে না। আকাশে উড়ছে না ড্রোন। অতর্কিতে আছড়ে পড়ছে না কোনও ক্ষেপণাস্ত্র! শুক্রবারের রাত যেন গাজ়াবাসীর কাছে ‘অন্য রকম’। গত দু’বছর এমন রাতের স্বপ্ন বার বার দেখেছেন গাজ়াবাসী। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছে গোলাগুলির শব্দ। এ বার আতঙ্ক কাটিয়ে ঘরে ফেরার পালা। আবার স্বাভাবিক জীবনের আশায় বুক বাঁধছেন প্যালেস্টাইনিরা।

তিন দিন লাগাতার আলোচনার পর সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছে ইজ়রায়েল এবং প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তিপ্রস্তাব মেনে প্রথম দফার সংঘর্ষবিরতি কার্যকর হয়েছে গাজ়ায়। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়া আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে। শুধু গাজ়া শহর নয়, গোটা ভূখণ্ডই ইজ়রায়েল-হামাসের লড়াইয়ের জাঁতাকল থেকে মুক্তি পেয়ে হাঁপ ছাড়ছে।

যুদ্ধ চলাকালীন ইজ়রায়েল বার বার হুঁশিয়ারি দিয়ে গাজ়া ছাড়ার বার্তা দিয়েছে। বিশেষত উত্তর গাজ়া খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রাণ বাঁচাতে এক দিন নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে যে পথ ধরে চলে গিয়েছিলেন, সংঘর্ষবিরতি কার্যকর হওয়ার পর আবার সেই পথে বাড়ি ফিরছেন বহু প্যালেস্টাইনি। তাঁদের দাবি, শুধু ভিটেমাটির আশায় নয়, নিজেদের পরিচয়, জীবনের অস্তিত্ব রক্ষার্থে ফিরছেন। তাঁরা ফিরেছেন, আরও ফিরবেন। তবে গাজ়ার একটা বড় অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঘরে ফিরছেন এমন অনেক প্যালেস্টাইনি আগেই হারিয়েছেন সব কিছু। পরিবার, বাড়িঘর কিছুই অবশিষ্ট নেই। তার পরেও নতুন কিছুর আশায় ফিরছেন তাঁরা।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলে হামলা চালানোর পরেই যুদ্ধের সূত্রপাত। তার পর থেকে টানা দু’বছরের বেশি সময় ধরে হামাস এবং ইজ়রায়েলের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। গত দু’বছরে মিশর, কাতার বার বার মধ্যস্থতা করে সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা করেছে। তবে ফলপ্রসূ হয়নি। ট্রাম্পের হুঙ্কারের পরেও আশার আলো দেখা যায়নি। শেষ পর্যন্ত বহু টালবাহানার পর দুই পক্ষ সমঝোতার পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তাতেই স্বস্তির শ্বাস ফেলছেন প্যালেস্টাইনিরা।

গত দু’বছরে ইজ়রায়েলি হামলায় বহু সাধারণ প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে। পণবন্দি হয়েছেন অনেকেই। শুধু তা-ই নয়, ত্রাণ এবং মানবিক সাহায্যের পথে ইজ়রায়েল অবরোধ করায় খাদ্যসঙ্কট তীব্র আকার নেয় গাজ়ায়। পরিবারের জন্য ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে কত গাজ়াবাসীর যে মৃত্যু হয়েছে, তারও প্রকৃত হিসাব নেই। তবে শুক্রবার থেকে সেই ছবি অনেকটাই পাল্টেছে।

বহু দিন বাড়িছাড়া এক প্যালেস্টাইনি সংবাদমাধ্যম ‘আল জাজ়িরা’কে বলেন, ‘‘দু’বছর পর আমরা নিরাপদ অনুভব করছি। আমরা নিরাপদ, আমাদের সন্তানেরাও নিরাপদ। রাতে আর কোনও ড্রোনের শব্দ শোনা যাচ্ছে না। মুহুর্মুহু কোনও ক্ষেপণাস্ত্র ধেয়ে আসছে না।’’ শুধু তিনি একা নন, তাঁর মতো আরও অনেক প্যালেস্টাইনি আবার গাজ়ায় নিজেদের ‘নিরাপদ’ মনে করছেন। তাঁদের দাবি, ‘‘আমরা তো এটাই চেয়েছিলাম।’’

gaza Israel-Hamas Conflict
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy