E-Paper

গোপালগঞ্জের ‘প্রতিরোধ’ই রসদ আওয়ামী লীগের

আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব মনে করছেন, গত ১৬ জুলাইয়ে গোপালগঞ্জে যে ‘প্রতিরোধ’ হয়েছে, তা এক কথায় অভূতপর্ব। বাংলাদেশ জুড়ে এ ভাবেই মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে।

অনির্বাণ দাশগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৫ ০৮:০৯
(বাঁ দিকে) বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

গত অগস্টে পালাবদলের পর থেকে ক্রমশ দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে শেখ হাসিনার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব মনে করছেন, গত ১৬ জুলাইয়ে গোপালগঞ্জে যে ‘প্রতিরোধ’ হয়েছে, তা এক কথায় অভূতপর্ব। বাংলাদেশ জুড়ে এ ভাবেই মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। আগামী দিনে বড় ধরনের দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক কর্মসূচির চিন্তাভাবনা চলছে।

গোপালগঞ্জের ঘটনার প্রতিবাদে আগামী ৮ অগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলের ছাত্র, যুব, স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন একযোগে দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দিতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হিসেবে ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচির চিন্তাভাবনা চলছে। যমুনা প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন। তবে কবে, কোথা থেকে লং মার্চের সূচনা হবে, তা এখনও নির্ধারিত হয়নি।

আওয়ামী লীগ সূত্রের খবর, কর্মসূচিতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে শামিল করতে চায় তারা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে নেতারা বৈঠক করছেন। বিষয়টি নিয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রাখছেন এবং পরামর্শ দিচ্ছেন দলনেত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের দাবি, ইতিমধ্যে সমমনোভাবাপন্ন রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে তাঁরা একপ্রস্ত কথা বলেছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আনন্দবাজার পত্রিকাকে বলেছেন, ‘‘স্বাধীনতার আদর্শে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষদের এই লং মার্চে শামিল করার চেষ্টা চলছে। দলের প্রবীণ নেতা এবং ছাত্র-যুবরা এই কর্মসূচি সফল করতে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ, বিশিষ্টজনদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, ইউনূস সরকার দেশে যে দুঃশাসন কায়েম করেছে, তার বিরুদ্ধে জনগণ আমাদের সঙ্গে পা মেলাবেন।’’

ওবায়দুলের দাবি, ‘দুঃসহ’ সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দল আবার শক্তি সঞ্চয় করবে। তাঁর কথায়, ‘‘দ্রুততার সঙ্গে সব কিছু বদলে যাবে এমনটা আমরা ভাবছি না। সরকার যে ভাবে দেশ-বিরোধী, জনবিরোধী কাজ করেছে, তাতে মানুষ ক্ষুব্ধ। সরকারে যে আগুন লাগিয়েছে, সেই আগুনেই ওরা পুড়ে যাবে।’’

গোপালগঞ্জ অগ্নিগর্ভ হওয়ার জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-কে কাঠগড়ায় তুলেছে আওয়ামী লীগ। তাদের অভিযোগ, সমাবেশের নাম করে এনসিপি, জামায়াতে ইসলামী, ছাত্র শিবিরের জঙ্গিরা টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার, বাড়ি ইত্যাদি ধ্বংসের পরিকল্পনা করেছিল। গোপালগঞ্জের মানুষ তা প্রতিহত করেছেন। এক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘‘এনসিপি-র পরিকল্পনা ফাঁস হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মানুষজন। ওরা বুঝতে পারেনি মুজিব গোপালগঞ্জে একটা আবেগের নাম।’’

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা দাবি করছেন, গোপালগঞ্জে এনসিপি-র বিরুদ্ধে যে ‘প্রতিরোধ’ হয়েছে, তা করেছেন আমজনতা। আওয়ামী লীগ শুধু নেতৃত্ব দিয়েছে। স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ, শুক্রবার থেকে গোপালগঞ্জ জুড়ে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। তল্লাশির নামে মানুষকে হেনস্থা করা হচ্ছে। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা করা হচ্ছে না। এমনকি যাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসা করতে গিয়েছেন, তাঁদের গ্রেফতারির ভয় দেখানো হচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bangladesh NCP Muhammad Yunus Gopalganj

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy