Advertisement
E-Paper

পাঠানকোটের ছায়া মাজারেও, গুলির লড়াই টানা ২৫ ঘণ্টা

এক দিন পেরিয়ে থামল গুলির লড়াই। রবিবার রাতে আফগানিস্তানের মাজার-ই-শরিফের ভারতীয় কনস্যুলেট চত্বরে যে জঙ্গি হানা শুরু হয়েছিল, ২৫ ঘণ্টা পরে তা শেষ হল। যে ভাবে দিনভর গুলি-যুদ্ধ চলেছে, তাতে আফগানিস্তানের মাটিতে পাঠানকোট-অভিযানের ছায়াই দেখতে পাচ্ছেন অনেকে।

সংসাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:২০
রকেট-লঞ্চার হাতে এক আফগান সেনা। সোমবার মাজার-ই-শরিফে। ছবি: এএফপি।

রকেট-লঞ্চার হাতে এক আফগান সেনা। সোমবার মাজার-ই-শরিফে। ছবি: এএফপি।

এক দিন পেরিয়ে থামল গুলির লড়াই।

রবিবার রাতে আফগানিস্তানের মাজার-ই-শরিফের ভারতীয় কনস্যুলেট চত্বরে যে জঙ্গি হানা শুরু হয়েছিল, ২৫ ঘণ্টা পরে তা শেষ হল। যে ভাবে দিনভর গুলি-যুদ্ধ চলেছে, তাতে আফগানিস্তানের মাটিতে পাঠানকোট-অভিযানের ছায়াই দেখতে পাচ্ছেন অনেকে।

আফগান সেনার পাল্টা গুলিতে নিহত হয়েছে তিন জঙ্গি। গভীর রাতে আরও দু’-এক জন জঙ্গিকে খতম করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে বলে গভীর রাতে খবর আসে। কনস্যুলেটের সামনে থেকে তিন জন জঙ্গির দেহ উদ্ধার হয়েছে। কনস্যুলেটের কর্মীরা সকলেই নিরাপদে রয়েছেন, জানানো হয়েছে কনস্যুলেটের তরফে।

রবিবার রাত সওয়া ন’টা নাগাদ প্রথম বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কনস্যুলেট চত্বর। সেনা সূত্রে খবর, গ্রেনেড ছুড়তে ছুড়তে বন্দুকবাজেরা কনস্যুলেটের পিছনের গেট দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করে। কিন্তু আফগান সেনার নজর এড়িয়ে কনস্যুলেটে ঢুকতে ব্যর্থ হয় তারা। গ্রেনেডও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় প্রতি বার। উল্টে কনস্যুলেটের পাশেই একটি বিয়েবাড়িতে গিয়ে পড়ে সেই গ্রেনেড। সৌভাগ্যক্রমে বাড়িটিতে তখন কোনও অনুষ্ঠান চলছিল না। কনস্যুলেটের কর্মীরা জানাচ্ছেন, রকেট লঞ্চার থেকে ৪-৫ রাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছিল জঙ্গিরা। সেই সঙ্গে টানা গুলির ঝড়।

আফগান সেনার পাশাপাশি ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে ভারত-তিব্বত সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বা আইটিবিপি (২০০৮ সালের পর থেকে দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ৩৫ জন আইটিবিপি কম্যান্ডোকে নিযুক্ত করা হয়েছে আফগানিস্তানে)। সেনার নিরাপত্তা বেষ্টনী এড়িয়ে জঙ্গিরা কনস্যুলেটের মধ্যে ঢুকতে না পেরে কাছেই একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরের লড়াইটা চলে সেখান থেকেই। সেনার গুলিতে সবুজ রঙের ওই বাড়িটি ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। জঙ্গি মোকাবিলায় হেলিকপ্টারে করে সেনা নামানো হয় বাড়িটির ছাদে। এক এক করে প্রতিটি তলায় অনুসন্ধান চালায় তারা। আইটিবিপি সূত্রে খবর, বাড়িটির বিভিন্ন তলায় লুকিয়ে ছিল জঙ্গিরা। গভীর রাত পর্যন্ত বাড়ির একতলা জঙ্গিদের দখলে ছিল। অনেক রাতে জঙ্গিদের খতম করে পুরো
বাড়ির দখল নেয় সেনাবাহিনী। তবে ওই বাড়িতে কত জন জঙ্গি ছিল, জানায়নি আইটিবিপি।

সন্ধেবেলা দিল্লিতে আইটিবিপি-র ডিরেক্টর জেনারেল কৃষ্ণ চৌধুরী জানান, গোটা এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে। নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে কনস্যুলেটের সবাইকে। তার পর গভীর রাতে ভারত সরকারের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়— ‘‘লড়াই শেষ। আফগান সরকার আমাদের জানিয়েছে যে, সব জঙ্গিকে কাবু করা গিয়েছে।’’

আফগানিস্তানে ভারতীয় দূত অমর সিন্হা টুইটারে জানান, ‘‘মাজার-ই-শরিফ অভিযানে গভর্নর আট্টা নিজে গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন।’’ অমর সিন্হার ওই টুইটই পরে ছড়িয়ে
পড়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে। কারণ, আফগানিস্তানের বাল্খ প্রদেশের গভর্নর আট্টা মহম্মদ নুর ভারতীয় কনস্যুলেট রক্ষার অভিযানে আজ নিজেই অংশ নেন। প্রাক্তন মুজাহিদিন কম্যান্ডার আট্টাকে নিয়ে রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য রি-টুইট করে এক সাংবাদিক লিখেছেন, ‘‘অসময়ের বন্ধু... ভারতীয় কনস্যুলেটকে বাঁচাতে নিজেই বন্দুক তুলে নিয়েছেন আফগান গভর্নর।’’

international news gun battle in afghanistan gun battle in india consulate
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy