Advertisement
E-Paper

সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, মোদী, ওবামা... জল্পনা চলছে

পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে কি আমেরিকার কোনও ভূমিকা ছিল? ওয়াশিংটন কি আগে থেকেই জানত, হামলা চালাতে চলেছে ভারত? সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই জল্পনা শুরু হয়েছে এই প্রশ্নকে ঘিরে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৩:২৮
নরেন্দ্র মোদী এবং বারাক ওবামার মধ্যে আগেই কি কথা হয়েছিল সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে? উত্তর পাওয়া কঠিন। —ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী এবং বারাক ওবামার মধ্যে আগেই কি কথা হয়েছিল সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে? উত্তর পাওয়া কঠিন। —ফাইল চিত্র।

পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে কি আমেরিকার কোনও ভূমিকা ছিল? ওয়াশিংটন কি আগে থেকেই জানত, হামলা চালাতে চলেছে ভারত?

সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই জল্পনা শুরু হয়েছে এই প্রশ্নকে ঘিরে। ভারতের স্পেশ্যাল ফোর্স নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে অভিযান চালিয়েছে বলে সেনাবাহিনী ঘোষণা করা মাত্রই ওয়াশিংটন য়ে ভাবে জোর গলায় সমর্থন করতে শুরু করেছে ভারতের পদক্ষেপকে, তাতে কোনও কোনও শিবিরের ধারণা, এই আমেরিকার এই অবস্থান আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। ওয়াশিংটন সব জানত এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্তে তাদের সমর্থনও নাকি ছিল। সেই কারণেই নাকি ভারতীয় সেনার সাংবাদিক সম্মেলনের পরে কালবিলম্ব না করে ভারতের পক্ষে সমর্থন ব্যক্ত করতে পেরেছে প্রেসিডেন্ট ওবামার বিদেশ দফতর।

বুধবার গভীর রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ভারতের স্পেশ্যাল ফোর্স। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ডিজিএমও রণবীর সিংহ সাংবাদিক সম্মেলন করে সে কথা ঘোষণা করেছেন। ভারত আনুষ্ঠানিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ রেখা লঙ্ঘনের কথা স্বীকার করা মাত্রই তুমুল হইচই পড়ে যায় পাকিস্তানে। ভারতের এই অতর্কিত পদক্ষেপ সম্পর্কে কী অবস্থান নেওয়া হবে, তা স্থির করতে সার্কভুক্ত দেশগুলি তো বটেই, পৃথিবীর অন্যান্য কয়েকটি বৃহৎ শক্তিও প্রাথমিক ভাবে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। আমেরিকার কিন্তু প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে একটুও সময় লাগেনি। এমনিতেই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইতে ওয়াশিংটন দীর্ঘ দিন ধরে ভারতকে সমর্থন জুগিয়ে আসছে। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছে বলে আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারত জানানো মাত্রই আরও জোর গলায় আমেরিকা ভারতের প্রতি নিজেদের সমর্থন ব্যক্ত করে। ওয়াশিংটনের তরফে জানানো হয়, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুজান রাইস ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে ফোন করেছেন এবং সব রকম ভাবে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। ওয়াশিংটন জানায়, রাইস ডোভালকে বলেছেন, ‘‘আমেরিকা সীমান্তপার সন্ত্রাসবাদের বিপদ সম্পর্কে উদ্বিগ্ন এবং আমেরিকা আশা করে পাকিস্তান রাষ্ট্রপুঞ্জ দ্বারা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গিদের শেষ করতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।’’ এই বক্তব্যের মাধ্যমেই ওয়াশিংটন বুঝিয়ে দেয়, ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইককে অত্যন্ত সঠিক পদক্ষেপ হিসেবেই দেখছেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। এও বুঝিয়ে দেওয়া হয় যে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান প্রত্যাঘাত করুক, তা আমেরিকা চায় না। আমেরিকা চায়, পাকিস্তান জঙ্গিদের বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।

আরও পড়ুন: বদলা নিতে পাল্টা হুমকি পাকিস্তানের

অত দ্রুত আমেরিকা ভারতের পক্ষে তাদের সমর্থন ব্যক্ত করবে, পাকিস্তান সম্ভবত তা আশা করেনি। ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের খবর প্রকাশিত হওয়া মাত্র যে ভাবে আমেরিকা তার পক্ষে মুখ খুলেছে, তাতে কূটনৈতিক মহলের অনেকের ধারণা হয়েছে, আমেরিকা আগে থেকেই বিষয়টি জানত এবং ভারতের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাতে তারা প্রস্তুতই ছিল। সেখান থেকেই জল্পনার জন্ম। জল্পনা এই যে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরে প্যারা-কম্যান্ডোদের ঢোকানোর আগে ভারত বিষয়টি আমেরিকাকে জানিয়েছিল। এই অভিযানের প্রতি ওয়াশিংটনের পূর্ণ সমর্থনও ছিল।

এই জল্পনা শুক্রবার আরও বেড়েছে। কারণ আমেরিকা এই জল্পনাকে নস্যাৎ করার কোনও চেষ্টাই করেনি। ভারত যে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করতে চলেছে, তা কি আমেরিকা জানত? এ প্রশ্নের কোনও জবাব ওয়াশিংটন দেয়নি। এই জল্পনায় সিলমোহরও দেয়নি, তাকে নস্যাৎও করেনি। মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র জন কার্বি বলেছেন, ‘‘এই রকম একটা জঙ্গি হামলা (উরি হামলা) সব সময়ই উত্তেজনার জন্ম দেয়।’’ কার্বির মন্তব্যে স্পষ্ট সমর্থন ছিল ভারতের পদক্ষেপের প্রতি। তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির দিকে সারা ক্ষণ নজর রাখছি। আমরা এও জানি যে ভারত এবং পাকিস্তানের সেনা পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগও রাখছে। দু’পক্ষের কাছেই আমাদের বার্তা একই, যৌথ ভাবে সন্ত্রাসের মোকাবিলা করার জন্য এই পারস্পরিক সংযোগ আরও বাড়ানো হোক এবং এমন কোনও পদক্ষেপ এড়িয়ে যাওয়া হোক, যাতে উত্তেজনা বাড়ে।’’ মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্রের এই মন্তব্যেও খুব স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, পাকিস্তান কোনও পাল্টা হানার চেষ্টা করুক, তা আমেরিকা চায় না। কারণ তাতে উত্তেজনা বাড়বে।

USA Role in India's Surgical Strike Speculations
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy