প্রতীকী ছবি।
সারা পৃথিবীতে গরু, শুয়োর আর মুরগির মাংসের সব থেকে বড় খরিদ্দার চিন। সেই দেশই এ বার নিরামিষ খাবারদাবারের দিকে ঝুঁকছে।
গত কয়েক বছর ধরেই চিনের বিভিন্ন রেস্তরাঁয় নিরামিষ পদের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। স্বাস্থ্যমনস্ক বর্তমান প্রজন্মের মাংস-সহ হাই ক্যালোরি ডায়েট না-পসন্দ। অর্গ্যানিক, নিরামিষ ও মাংসহীন ডায়েটেই ঝোঁক বেশি তাদের। একটু বয়স্ক যাঁরা, রক্তচাপ, বেশি ওজন বা হৃদ্রোগের মতো সমস্যা থেকে বাঁচতে, তাঁরাও নিরামিষ খাবার পছন্দ করছেন। শুধু বেজিং বা হংকং নয়, এই স্বাদবদলের হাওয়া দেশের সব শহরেই।
চিনের সব থেকে বড় শহর সাংহাইয়ে ২০১২ সালে মাত্র ৪৯টি নিরামিষ রেস্তরাঁ ছিল। এখন সেই শহরে নিরামিষ রেস্তরাঁর সংখ্যা শতাধিক। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত সিচুয়ান প্রদেশের চেংডু শহরের কোনও রেস্তরাঁতেই নিরামিষ খাবার মিলত না। কিন্তু সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, শহরের অন্তত অর্ধেক রেস্তরাঁর মেনুতেই এখন ঢুকে পড়েছে একাধিক নিরামিষ পদ।
মাংস বিক্রিতে চিন এখনও বিশ্বে প্রথম। কিন্তু বিক্রির পরিমাণ কমছে। ২০১৪ সালে ৪ কোটি ২৪৯ লক্ষ টন শুয়োরের মাংস বিক্রি হয়েছিল চিনে। ২০১৬-এ সেই পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ৪ কোটি ৮৫ লক্ষ টনে। অথচ এই দু’বছরে চিনের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১ কোটি ১৫ লক্ষ!
মাংস বিক্রি কমার সঙ্গে সঙ্গেই বেড়ে গিয়েছে ফল ও আনাজের ফলন, আমদানি ও বিক্রি। যেমন, ২০১০ সালে মাত্র ১.৯ টন আভোকাডো আমদানি করত চিন। ২০১৬ সালে সেই সংখ্যাটা ১৩ হাজার গুণ বেড়ে হয়েছে ২৫ হাজার টন!
সাংহাইয়ের জিয়াও টং বিশ্ববিদ্যালয় শহরের বিভিন্ন রেস্তরাঁতে একটি সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছে, নিরামিষ পদ অর্ডার দেন যাঁরা, তাঁদের অধিকাংশের বয়স ২০ থেকে ২৯-এর মধ্যে। বেশির ভাগই পড়ুয়া। তবে ৬৫ বছরের বেশি যাঁদের বয়স, তাঁদেরও অনেকে নিরামিষ খেতে শুরু করেছেন, জানাচ্ছেন রেস্তরাঁ-কর্মীরা।
এই পরিবর্তনের সুফল মিলছে পরিবেশেও। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, চিনের মাংস-প্রক্রিয়াকরণ কারখানাগুলো থেকে বছরে ১৫ কোটি টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন হত। গত কয়েক বছরে সেই পরিমাণ বেশ কিছুটা কমেছে।
পরিবেশবিদরা তাই বলতে শুরু করেছেন, বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy