Advertisement
E-Paper

কোন কোন দেশ থেকে খনিজ তেল কেনে পাকিস্তান? ট্রাম্পের পাক-চুক্তির কী প্রভাব পড়তে পারে ভারতের বাণিজ্যে?

পাকিস্তানে ‘বিশাল তৈলভান্ডার’ গড়ে তুলতে আগ্রহী আমেরিকা। সেই মর্মে দুই দেশের মধ্যে চুক্তিও স্বাক্ষর হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমেরিকা ও পাকিস্তানের জ্বালানি চুক্তির কী প্রভাব পড়তে পারে ভারতে?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৫ ২২:৪৭
(বাঁ দিকে) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী  (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানের সঙ্গে বৃহস্পতিবার একটি জ্বালানির চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। সমাজমাধ্যমে নিজেই জানিয়েছেন, পাকিস্তানে ‘বিশাল তৈলভান্ডার’ গড়ে তুলতে যৌথ ভাবে কাজ করবে আমেরিকা। এমনকি, ভবিষ্যতে কখনও ভারতেও তেল বিক্রি করতে পারে পাকিস্তান। কিন্তু ট্রাম্পের এই চুক্তি থেকে ভারতের কি আদৌ আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ আছে? আমেরিকা ও পাকিস্তানের জ্বালানি চুক্তির কী প্রভাব পড়তে পারে ভারতে?

ভারত মূলত খনিজ তেল কিনে থাকে রাশিয়া থেকে। সেটাই আমেরিকার মাথাব্যথার কারণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত এবং রাশিয়ার তেল সংক্রান্ত এই সম্পর্ককে খোঁচা দিতেই পাকিস্তানের ভারতে তেল বিক্রি করার সম্ভাবনা নিয়ে মন্তব্যটি করেছেন ট্রাম্প। আসলে বাস্তব পরিস্থিতি অন্য।

খনিজ তেলের উৎপাদনের ক্ষেত্রে পাকিস্তান সম্পূর্ণ নির্ভরশীল অন্যান্য দেশের উপর। বহিরাগত উৎস ছাড়া দেশের তেলের চাহিদা মেটাতেই পারবে না ইসলামাবাদ। পরিসংখ্যান বলছে, এই মুহূর্তে দিনে ৭৫ থেকে ৮০ ব্যারেল তেল উৎপন্ন হয় পাকিস্তানে। বাকি তেল তাদের বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে পাকিস্তান আমদানি করে দিনে প্রায় ১.৩ থেকে ১.৪ লক্ষ ব্যারেল তেল। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রধান ভরসা পশ্চিম এশিয়া। সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির কাছ থেকে পাকিস্তান প্রধানত খনিজ তেল কিনে থাকে। এ ছাড়াও সময়বিশেষে কুয়েত এবং কাতার থেকেও তেল কেনা হয়।

অন্য দিকে, ভারত খনিজ তেল কিনে থাকে রাশিয়া, ইরাক, সৌদি আরব থেকে। কখনও কখনও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং আমেরিকাও এই তালিকায় থাকে। তবে রাশিয়াই বর্তমানে ভারতের খনিজ তেলের প্রধান জোগানদার। ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আমেরিকা-সহ পশ্চিমের দেশগুলি রাশিয়ার উপরে একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। সেই সময়ে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিল রুশ তেল বাণিজ্য। ফলে ক্রেতা দেশগুলিকে আকর্ষণ করতে রাশিয়া সেই সময়ে খনিজ তেলের দামে অনেক ছাড় ঘোষণা করে। ভারত তখন থেকে জাতীয় এবং অর্থনৈতিক স্বার্থে রাশিয়ার থেকেই বেশি করে তেল কিনতে শুরু করে। এখনও পর্যন্ত ভারতকে সস্তায় তেল দেয় রাশিয়া। জোগানে কখনও ঘাটতিও দেখা যায়নি। ফলে এই বিক্রেতার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে নারাজ ভারত।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকা এবং পাকিস্তানের সাম্প্রতিক চুক্তি নিয়ে ভারতের আশঙ্কার তেমন কোনও কারণ নেই। কারণ, পাকিস্তানের নিজস্ব তেল বিক্রির ক্ষমতাই নেই। তা ছাড়া, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যও এখন বন্ধ রয়েছে। তবে ভারত-রাশিয়ার বাণিজ্যে পশ্চিমি কিছু অস্বস্তি রেখে গেল ট্রাম্পের ঘোষণা। নয়াদিল্লির উপর তা কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করতে পারে। মনে করা হচ্ছে, পাকিস্তানে একটি বিকল্প জ্বালানির ভান্ডার তৈরিতে আগ্রহী আমেরিকা। তবে সেই প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি। অদূর ভবিষ্যতে ভারতের চিন্তার কারণ নেই।

US Pakistan Relation India Pakistan Conflict US India Trade India Russia Trade Crude Oil
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy