Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

এখনও ভয় হার্ভের, সঙ্কটে ভারতীয় ছাত্র

শালিনী এবং নিখিল ভাটিয়াকে নিয়ে যাওয়া হয় সেন্ট জোসেফ হসপিটালে। হিউস্টনে ভারতের কনসাল জেনারেল অনুপম রায় পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছেন। কনস্যুলেটের তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার থেকে ভর্তি করানোর পরে নিখিলের শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি।

যাত্রা: স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে জলমগ্ন এলাকা ছেড়ে পাড়ি। হিউস্টনে। ছবি: এপি।

যাত্রা: স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে জলমগ্ন এলাকা ছেড়ে পাড়ি। হিউস্টনে। ছবি: এপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৩০
Share: Save:

ঘূর্ণিঝড় হার্ভের দাপটে গত পাঁচ দিন ধরে আবহাওয়া এমনিতেই খারাপ। তা সত্ত্বেও দুই ভারতীয় পড়ুয়া টেক্সাসের ব্রায়ানের উত্তর-পশ্চিমে লেক ব্রায়ানে গত শনিবার কেন সাঁতার কাটতে নেমেছিলেন, সেটাই ভাবাচ্ছে সবাইকে।

কারণ, ওই লেকে নেমে সে দিন প্রায় ডুবতে বসেছিলেন শালিনী এবং নিখিল ভাটিয়া নামে দুই ভারতীয় পড়ুয়া। তাঁরা দু’জনেই টেক্সাসের এ অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা করেন। কোনও মতে উদ্ধার করা গেলেও তাঁদের শারীরিক অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ব্রায়ান পুলিশের দাবি, ওই চত্বরে সেই সময়ে নজরদারির দায়িত্বে থাকা পুলিশকে সতর্ক করেন এক ব্যক্তি। বছর কুড়ির দুই ছাত্রছাত্রীকে ওই অবস্থায় দেখে প্রথমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিই ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু তিনি এক জনকে উদ্ধার করতে পারলেও অন্য জন ভেসে যাচ্ছিলেন। তখনই ওই ব্যক্তি পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ উদ্ধার করে অন্য জনকে।

শালিনী এবং নিখিল ভাটিয়াকে নিয়ে যাওয়া হয় সেন্ট জোসেফ হসপিটালে। হিউস্টনে ভারতের কনসাল জেনারেল অনুপম রায় পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছেন। কনস্যুলেটের তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার থেকে ভর্তি করানোর পরে নিখিলের শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। তাঁর মা সুমন ভাটিয়া ভারত থেকে এখানে এসে পৌঁছেছেন। চিকিৎসকদের বক্তব্য, শালিনী এ ক’দিন একই রকম ছিলেন। তবে আজ প্রথম একটু ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। শালিনীর ভাই আগামিকাল ভারত থেকে আসছেন।

গত কালই অনুপমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। পরে তিনি টুইটে বলেন, ‘‘শালিনী ও নিখিল ভাটিয়া নামে দুই ভারতীয় পড়ুয়া আইসিইউয়ে রয়েছেন। তাঁদের আত্মীয়রা যাতে দ্রুত পৌঁছতে পারেন সেই ব্যবস্থা করছি।’’ এ দিনই পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে সস্ত্রীক টেক্সাসে পৌঁছেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখানে অন্তত তেরো লক্ষ মানুষ হার্ভে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মারাত্মক অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ন’জন। গত দু’দিনে শুধু হিউস্টনেই ৭৫ সেন্টিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। চলতি সপ্তাহে বৃষ্টি প্রায় দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কা। সুষমা জানান, বন্যার জেরে বিপদে পড়েছেন হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’শোরও বেশি ভারতীয় পড়ুয়া। এই পড়ুয়াদের খাবার পৌঁছতে ও প্রয়োজনীয় সাহায্যের জন্য হিউস্টনে অনুপম রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তিনি। ফেসবুকেও ভারতীয় পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন অনুপম। চারপাশে সব রাস্তা জলে ডুবে গেলেও যেখানে ভারতীয় পড়ুয়ারা আটকে রয়েছেন, সেখানে পৌঁছে তিনি তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছেন।

১৯৭৬ সাল থেকে হিউস্টনের বাসিন্দা ভারতের মীরা কপূর। তাঁর কথায়, ‘‘এই রকম পরিস্থিতি কোনও দিন দেখিনি।’’ গ্রেটার হিউস্টনের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সুগার ল্যান্ড সিটিতে আছেন আর এক ভারতীয়, বিজয় পাল্লোড়। তাঁরও দাবি, ‘‘পরিস্থিতি খারাপ থেকে খারাপতর হচ্ছে।’’ হিউস্টনের আর এক বাঙালি প্রিয়ঙ্কা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, উপচে পড়া অলিম্পিয়া লেক থেকে কুমির উঠে এসেছে রাস্তায়। কেটি এলাকায় বাড়ির জানালা বেয়ে উঠছে সাপ, দেখেছেন এমন দৃশ্যও। প্রচুর লোককে সরানো হলেও এখনও ভয় দেখাচ্ছে হার্ভে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE