বছর ঘুরতে চলল তিন বন্ধুর সঙ্গে দেশ ছেড়েছিল সে। বাড়ির কাউকে কিছু না জানিয়েই পাড়ি দিয়েছিল ইরাকে। উদ্দেশ্য ছিল, সেখানে গিয়ে ‘ইসলামিক স্টেট অব সিরিয়া অ্যান্ড ইরাক’ (আইএস)-এর হয়ে লড়াই করা। মহারাষ্ট্রের কল্যাণের সেই যুবক ফাহাদ শেখ সম্প্রতি তার পরিবারকে জানিয়ে দিয়েছে, সে আর কোনও দিন দেশে ফিরতে চায় না। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) গোয়েন্দারা সম্প্রতি এমনটাই জানতে পেরেছেন।
গত বছর মে মাসে বাগদাদ যাওয়ার বিমানে উঠেছিল ফাহাদ। সঙ্গে ছিল কল্যাণেরই আরও তিন যুবক। আরিব মাজিদ, আমন টান্ডেল ও শাহিম টাঙ্কি। এদের মধ্যে গত বছরই দেশে ফিরে এসেছিল আরিব। নিজেই বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করে আরিব জানিয়েছিল সে অবিলম্বে দেশে ফিরতে চায়। এনআইএ-র গোয়েন্দারা সেই মতো তুরস্ক থেকে ফিরিয়ে এনেছিলেন তাকে। কিন্তু সেই সময় খোঁজ মেলেনি বাকি তিন যুবকের।
কয়েক সপ্তাহ আগে ফাহাদ যোগাযোগ করে বাড়ির সঙ্গে। পানভেলের একটি কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছিল সে। আরিবের সঙ্গে বন্ধুত্ব হওয়ার পরে আইএস-এ যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ফাহাদ। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, এর পর থেকে নিয়মিত বাড়ির সঙ্গে কথা বলত সে। কখনও ফোনে কখনও বা ইন্টারনেটে চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে ফাহাদের সঙ্গে কথা বলতেন তার বাড়ির লোকজন। ফাহাদের বাড়ির লোকের কাছ থেকে তার ফোন নম্বর জোগাড় করেছিলেন এনআইএ-র গোয়েন্দারা। ফাহাদ নাকি তাঁদের জানিয়েছে, আপাতত সিরিয়ার রাক্কা শহরে আছে সে। জেহাদের কাজকর্ম নিয়ে বেশ খুশিতেই আছে সেখানে। তাই আর দেশে ফিরতে চায় না। তবে রাক্কায় আইএস-এর হয়ে ফাহাদ ঠিক কী ধরনের জেহাদি কাজ করছে, তা জানতে পারেননি গোয়েন্দারা।
বাড়ির লোককে ফাহাদ এ-ও জানিয়েছে, লড়াই করতে গিয়ে তাদের আর এক সঙ্গী শাহিম টাঙ্কির মৃত্যু হয়েছে। শাহিমের মৃত্যুর খবর আগেই পেয়েছিল তার পরিবার। এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ফোন করে শাহিমের মৃত্যুর খবর দিয়েছিলেন। সেই খবরই নিশ্চিত করেছে ফাহাদ। যে এলাকায় শাহিমের মৃত্যু হয়েছে, সেখানকার ছবি শাহিমের বাড়ির লোকের কাছে পাঠিয়েছে ফাহাদ।
তবে শুধু শাহিমই নয়। ইরাক আর সিরিয়ায় আইএস-এর হয়ে লড়তে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও তিন ভারতীয়ের। যদিও শাহিম ছাড়া বাকিরা কেউই সরাসরি ভারত থেকে আইএস-এর হয়ে লড়তে যায়নি বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। এ ছাড়া, আমেরিকা-ইউরোপ থেকে যাওয়া অন্তত কুড়ি জন ভারতীয় এখন ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস-এর হয়ে লড়ছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy