Advertisement
E-Paper

পরেশ-মাসুদে অনড় চিন, গুরুত্ব হারাচ্ছে চুক্তি

সম্প্রতি ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে মাইলফলক হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছিল নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়টিকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০২:০০

চেষ্টা অনেক হচ্ছে। কিন্তু কূটনৈতিক শিবিরের মতে, চিন প্রশ্নে হাতে শেষ পর্যন্ত পেনসিল ছাড়া কিছু থাকছে না সাউথ ব্লকের।

সম্প্রতি ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে মাইলফলক হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছিল নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়টিকে। তিন দিন আগে ঢাকঢোল পিটিয়ে নয়াদিল্লিতে প্রথম নিরাপত্তা চুক্তি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং চিনের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ঝাও কেঝি। কিন্তু সপ্তাহ ঘোরার আগেই চিন
বুঝিয়ে দিল, এই ক্ষেত্রে ভারতের প্রধানতম দু’টি দাবির কোনওটিকেই আমল দিচ্ছে না তারা।

সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক বৈঠকটিতে কোনও ঢাক ঢাক গুড় গুড় না-করেই পরেশ বরুয়াকে ফেরত চেয়েছিল ভারত। আলফার এই শীর্ষ নেতা যে চিন-মায়ানমার সীমান্তে চিনেরই সম্পূর্ণ সহযোগিতায় লুকিয়ে রয়েছেন— এই খবর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে নতুন নয়। একই সঙ্গে দিল্লির দাবি ছিল, দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা চুক্তিতে জইশ প্রধান মাসুদ আজহারকে জঙ্গি হিসেবে স্বীকার করে নিক চিন। অন্তত রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষিদ্ধ জঙ্গি তালিকায় তার নাম ঢোকানোর যে চেষ্টা ভারত করে চলেছে, তাতে যেন বাধা না-পড়ে। দু’টি দাবিই নাকচ হয়ে গিয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রের তাই বক্তব্য, ভাল করে শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেল নবনির্মিত মেকানিজমটির গুরুত্ব। নরেন্দ্র মোদী সরকারের মেয়াদ প্রায় শেষের মুখে। অন্তত এটুকু স্পষ্ট যে, ভোটে যাওয়ার আগে চিন প্রশ্নে বুক ঠুকে বলার মতো কিছুই থাকছে না। উল্টে এই নিয়ে রাহুল গাঁধী–সহ বিরোধী নেতাদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে মোদীকে।
আজ অবশ্য দিল্লির ‘তাইপেই অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ এবং তাইপেইয়ের ‘ভারতীয় তাইপেই সংগঠন’-এর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তিতে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।

পরেশ বরুয়ার প্রত্যর্পণ নিয়ে শীর্ষ স্তরে আগেও সরব হয়েছে ভারত। এ বার রাজনাথ এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যও তুলে দিয়েছিলেন চিনা মন্ত্রীর হাতে। লোকসভা ভোটের আগে পরেশকে দেশে ফেরাতে পারলে তা নিঃসন্দেহে গৌরবজনক হত মোদী সরকারের কাছে। কিন্তু বৈঠকে এ বিষয়ে বিশেষ রা কাড়েননি ঝাও কেঝি। আর গত কাল চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনিয়াং বিষয়টি এক রকম উড়িয়েই দিয়েছেন। পরেশকে আশ্রয় দেওয়া এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জঙ্গিদের অস্ত্র সহায়তা করার অভিযোগ প্রসঙ্গে হুয়া বলেছেন, ‘‘আমি জোর দিয়েই বলতে চাই, অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে চিনা সরকার কখনও নাক গলায় না। এটা আমাদের নীতি। এবং এই নীতির কোনও পরিবর্তন হয়নি।’’ বিদেশ মন্ত্রকের একাংশের মতে, পরেশ যে তাঁদের আশ্রয়ে রয়েছেন, এ ভাবে কার্যত সেই তথ্যটিকেই অস্বীকার করেছেন চিনা নেতৃত্ব।

চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র এ-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, মাসুদ আজহার সম্পর্কে নিজেদের অবস্থান থেকে একচুলও নড়তে নারাজ তাঁরা। অর্থাৎ ‘সব রকম আবহাওয়ার বন্ধু’ পাকিস্তানকে বিড়ম্বনায় ফেলার মতো কোনও
পদক্ষেপ করতে চায় না বেজিং। হুয়ার কথায়, ‘‘সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে যা পাওয়া যাচ্ছে, তার ভিত্তিতে আজহারকে কোনও ভাবেই নিষিদ্ধ জঙ্গিদের তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা চলে না। চিন বরাবরই আন্তর্জাতিক জঙ্গি দমন অভিযানে অংশগ্রহণ করে থাকে। কিন্তু নিজস্ব বিচারের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিই আমরা।’’

India China Treaty Paresh Barua Masood Azhar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy