রাত প্রায় ৯টা। গত বুধবার সান হোসের লরা ভেল লেনের বাসিন্দারা দেখেন পুলিশে পুলিশে গোটা এলাকাটা ছয়লাপ। কী হয়েছে জানতে অনেকেই তখন বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসেছেন। পুলিশকর্মীরাই তাঁদের নিয়ে যান নিরাপদ আশ্রয়ে। তত ক্ষণে ওই জায়গায় এসে পৌঁছেছেন সোয়াট কর্মীরাও। তাঁরাই ঘিরে ফেলেন লরা ভেল লেনের নরেন প্রভুর বাড়ি। সিলিকন ভ্যালিতে এক সংস্থায় এগ্জিকিউটিভ নরেন। পুলিশের নজরে পড়ে, বাড়ির দরজার মুখেই নরেন প্রভুর ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন। পুলিশকে তিনিই খবর দিয়েছিলেন।
নরেনের ছেলেই পুলিশকর্মীদের জানান, বাড়ির ভিতরে মা-বাবার সঙ্গে তাঁর ১৩ বছরের ভাইকে আটকে রেখেছে মির্জা তাতলিচ। গত বছরেই তাতলিচের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছে তাঁর বোন র্যাচেলের। মা-বাবা-ভাইয়ের সঙ্গে তাঁকেও আটক করে রেখে দিয়েছিল তাতলিচ। মির্জার গুলিতে গুরুতর জখম হলেও কোনও রকমে তার হাত থেকে পালিয়ে আসতে পেরেছে সে। এর পর বাড়ির ভিতরে ঢুকতে যায় পুলিশ। কিন্তু ভিতর থেকে তাতলিচ জানায়, তার সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এবং নরেন প্রভু ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের কিশোর ছেলেকেও পণবন্দি করে রেখেছে সে।
আরও পড়ুন
আমেরিকায় কাজ হারিয়ে ফেরা ব্যাঙ্ক কর্মীর স্ত্রী আত্মঘাতী
মির্জা তাতলিচ। ছবি: সংগৃহীত।
এর পর ঘণ্টা দুয়েক ধরে পুলিশের সঙ্গে দর কষাকষি চলতে থাকে তাতলিচের। শেষমেশ নরেন প্রভুর কিশোর ছেলেকে ছেড়ে দেয় সে। তবে তখনও বাড়ির ভিতরে আটকে নরেন ও তাঁর স্ত্রী। পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকার করতে থাকে সে। কিছু ক্ষণ পর বাড়ির ভিতর থেকে গুলির শব্দ শুনতে পান পুলিশ ও সোয়াট টিমের কর্মীরা। এর পর তাঁরা বাড়ির একটি জানলা দিয়ে ভিতরে ঢুকে দেখতে পান নরেন প্রভু ও তাঁর স্ত্রীর মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মারা যায় ২৪ বছরের তাতলিচ।
সান হোসের পুলিশ প্রধান এডি গার্সিয়া জানিয়েছেন, মা-বাবার থেকে আলাদা থাকেন র্যাচেল। মির্জার সঙ্গে গত বছরই র্যাচেলের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কথাও জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, মানসিক ভাবে সুস্থ ছিল না মির্জা। র্যাচেলকে মারধরও করত বলে জানা গিয়েছে। এমনকী, পুলিশি হস্তক্ষেপেই তাঁর সঙ্গে মির্জার দেখা করা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পুলিশেরও অনুমান, শুধুমাত্র প্রতিহিংসা মেটাতেই র্যাচেলের পরিবারকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল তাতলিচ।