এ বার প্রতারণার শিকার হলেন আমেরিকায় ছাত্র ভিসায় থাকা এক ভারতীয় তরুণী। অভিবাসন ও শুল্ক দফতর (আইসিই)-এর আধিকারিক সেজে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্টের’ ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নেওয়া হল লক্ষ লক্ষ টাকা। ঘটনাটি ঘটেছে সপ্তাহখানেক আগে। খবর প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশও। প্রতারকদের শনাক্ত করতে শুরু হয়েছে তদন্ত।
শ্রেয়া বেদী। — ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি আমেরিকায় অবৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ আটকাতে একের পর এক পদক্ষেপ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকা জুড়ে পুরোদমে ধরপাকড় শুরু করেছে আইসিই-ও। সেই আবহেই এ বার আইসিই আধিকারিক হিসাবে পরিচয় দিয়ে প্রতারণার ঘটনা ঘটল। আমেরিকার সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতারিত তরুণীর নাম শ্রেয়া বেদী। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি ব্লুমিংটনে স্নাতকোত্তর স্তরের পাঠ নিতে ২০২২ সালে ভারত থেকে এফ-১ ভিসায় আমেরিকায় গিয়েছিলেন ভারতীয় ওই তরুণী। গত ২৯ মে, তাঁর কাছে একটি ফোন আসে। অপর প্রান্ত থেকে নিজেকে আইসিই আধিকারিক পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বলেন, শ্রেয়া অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করছেন। ফলে যে কোনও সময় তাঁকে গ্রেফতার করা হতে পারে। গ্রেফতারি এবং অভিবাসন এড়াতে তাঁকে ‘বন্ড পেমেন্ট’ হিসাবে ৫,০০০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৪ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা) মূল্যের একটি ‘গিফ্ট কার্ড’ কিনতে হবে। ভয় পেয়ে প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে সেই টাকা দিয়েও দেন শ্রেয়া।
আরও পড়ুন:
শ্রেয়ার কথায়, ‘‘আমি সারাক্ষণ ভয়ে কাঁদছিলাম। ওরা আমাকে বলেছিল, আমি ফোন কেটে দিতে পারব না বা কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারব না। এর পর আরও এক ব্যক্তি অলিম্পিয়া পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিয়ে আর একটি ভুয়ো নম্বর থেকে আমাকে ফোন করেন। আমাকে বলা হয়, আমার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।’’ প্রায় তিন ঘণ্টা তাঁকে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করে রাখা হয়েছিল। এর পর প্রতারকেরা শ্রেয়াকে টার্গেট এবং অ্যাপল থেকে ৫,০০০ ডলার মূল্যের ‘গিফ্ট কার্ড’ কিনতে বলেন। তাঁকে বলা হয়েছিল, একজন পুলিশ আধিকারিক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে কার্ড এবং ‘বন্ড পেপার’ দিয়ে যাবেন, কিন্তু তা আর ঘটেনি। তখনই ওই তরুণী বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন। সব খুইয়ে আপাতত ‘গো ফান্ডমি’-তে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করছেন শ্রেয়া। আমেরিকার অন্যান্য অভিবাসী পড়ুয়াদের এ ধরনের ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য সতর্কও করেছেন ওই তরুণী। প্রতারকদের খোঁজে শুরু হয়েছে তদন্ত।