বাংলাদেশে শেখ মুজিবুর রহমানের ৩২ ধানমন্ডির বাড়ি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। এই সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল যা জানিয়েছেন, পরে তা বিবৃতি আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহ্য স্মরণ করিয়েছেন রণধীর।
বুধবার রাতে মুজিবের বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা ভাঙচুর শুরু করেন। ক্রেন এনে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় সেই বাড়ির বেশ কিছু অংশ। আগুনও জ্বালিয়ে দেওয়া হয় মুজিবের স্মৃতি জাদুঘরে। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে রণধীর বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটি দমনপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের বীরোচিত প্রতিরোধের ঐতিহ্য বহন করে। ৫ ফেব্রুয়ারি সেই বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্ব যাঁরা বোঝেন, তাঁরা এই বাড়ির ঐতিহ্য এবং গুরুত্ব সম্পর্কেও অবহিত। এই ভাঙচুর এবং ধ্বংসলীলার কঠোর সমালোচনা করা উচিত।’’
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে গণ আন্দোলনের চাপে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন মুজিব-কন্যা শেখ হাসিনা। সেই থেকে তিনি ভারতে রয়েছেন। বুধবার রাতে বাংলাদেশের মানুষের উদ্দেশে ভার্চুয়াল মাধ্যমে ভাষণ দেন তিনি। এই ভাষণের কথা আগে থেকে আওয়ামী লীগ প্রচার করেছিল। তার ফলে হাসিনা-বিরোধীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। হাসিনার ভাষণ শুরুর আগেই মুজিবের বাড়িতে পৌঁছে যান তাঁরা। ভেঙে ফেলা হয় সেই বাড়ি। ধানমন্ডিতে ভাঙা হয় হাসিনার বাড়ি সুধা সদনও।

ধানমন্ডির ঘটনা দিয়ে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতি।
ধানমন্ডিতে অশান্তি নিয়ে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বিবৃতি দিয়েছে। তারা এই ঘটনার জন্য দায়ী করেছে হাসিনার ‘উস্কানিমূলক’ বক্তৃতাকে। ভারতে বসে এই ধরনের ভাষণ যাতে তিনি আর করতে না-পারেন, তা নিশ্চিত করতে নয়াদিল্লিতে চিঠি দিয়েছে ঢাকা। বৃহস্পতিবার তলব করা হয়েছিল ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় উপরাষ্ট্রদূতকেও।
হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ইতিমধ্যে ভারতকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁকে বিচারপ্রক্রিয়ার মুখোমুখি করতে প্রত্যর্পণ চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও সে বিষয়ে ঢাকাকে কোনও জবাব দেয়নি ভারত সরকার। তার মাঝে মুজিবের বাড়ি ধ্বংসের নিন্দা করল নয়াদিল্লি।