Advertisement
E-Paper

মসুলের প্রাচীন মসজিদ ও মিনার ওড়াল আইএস

যুগ যুগ ধরে মসুলের ওল্ড সিটি-র দক্ষিণ প্রান্তে মাথা উঁচু করে থাকা এই মিনার ও মসজিদ চোখ টেনেছে বহু পর্যটকের। মিনারটির সঙ্গে অনেকেই মিল খুঁজে পেতেন ইতালির পিসা মিনারের। ঘটনাচক্রে তিন বছর আগে ৪ জুলাই, শুক্রবার নমাজের সময় এই মসজিদ থেকেই আইএস নেতা আবু বকর আল বাগদাদি ‘খিলাফৎ’ প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেছিলেন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৭ ০৫:২৫
ধ্বংসলীলা: মসুলের আল নুরি মসজিদ আর তার উপরের অল্প হেলানো আল হাবদা মিনার। আইএস উড়িয়ে দেওয়ার আগে (বাঁ দিকে) ও পরে। ছবি: এএফপি।

ধ্বংসলীলা: মসুলের আল নুরি মসজিদ আর তার উপরের অল্প হেলানো আল হাবদা মিনার। আইএস উড়িয়ে দেওয়ার আগে (বাঁ দিকে) ও পরে। ছবি: এএফপি।

৮৪০ বছরের ইতিহাসের সাক্ষী ধূলিসাৎ এক নিমেষে। সৌজন্যে আইএস জঙ্গি গোষ্ঠী। সিরিয়ার পালমাইরার পরে তাদের কোপে মসুলের আল নুরি মসজিদ আর তার উপরের অল্প হেলানো আল হাবদা মিনার। তবে আমেরিকা এবং ইরাক বলছে, বৃহস্পতিবারের এই ধ্বংসলীলা থেকেই স্পষ্ট আইএসের এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে।

যুগ যুগ ধরে মসুলের ওল্ড সিটি-র দক্ষিণ প্রান্তে মাথা উঁচু করে থাকা এই মিনার ও মসজিদ চোখ টেনেছে বহু পর্যটকের। মিনারটির সঙ্গে অনেকেই মিল খুঁজে পেতেন ইতালির পিসা মিনারের। ঘটনাচক্রে তিন বছর আগে ৪ জুলাই, শুক্রবার নমাজের সময় এই মসজিদ থেকেই আইএস নেতা আবু বকর আল বাগদাদি ‘খিলাফৎ’ প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সুন্নি সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা ছিল: পবিত্র লড়াই এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এই মসজিদ থেকেই প্রথম ও শেষ বার প্রকাশ্যে বাগদাদি তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশে কথা বলেছিলেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, বাগদাদি দর্শন দেওয়ার এক মাস আগেই ওই মসজিদের ইমামকে নিকেশ করেছিল জঙ্গিরা। কারণ তিনি আইএস-এ যোগ দিতে আপত্তি করেছিলেন। বাগদাদির ওই ঘোষণা দিনেকালে সিরিয়া আর ইরাকের দূরত্ব ঘুচিয়ে আইএস জঙ্গিদের একজোট হতে উদ্বুদ্ধ করেছিল।

আল হাবদা মিনারে তার পর থেকেই আইএসের সাদা-কালো পতাকা উড়ত। কিন্তু হিসেবটা গত কয়েক মাসে অনেকটাই পাল্টে যায়। পশ্চিম মসুলে আইএসের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে আমেরিকা সমর্থিত জোট শক্তি। ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শহর পুনর্দখলে তারা অনেকটাই সফল। সেই অভিযানের অংশ হিসেবেই আল নুরি মসজিদ পুনর্দখল করা জোটশক্তির লক্ষ্য ছিল। কারণ যে মসজিদ থেকে আইএস লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিল, সেটি পুনর্দখল করা প্রতীকী জয়ও বটে। এ সপ্তাহেই তারা ওল্ড সিটির দিকে অনেকটা এগিয়েও গিয়েছিল। তার পর তারা ধীরে এগোনোর কথা ভাবছে। কারণ ওই এলাকার এক লক্ষ সাধারণ মানুষের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে আইএস জঙ্গিরা।

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি টুইটে আজ জানান, তাঁর ‘‘আল হাবদা মিনার আর আল নুরি মসজিদ উড়িয়ে দায়েশের (আইএস) পরাজয়ই ঘোষণা করছে।’’ ইরাকের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক রমজান মাসে মসজিদ ধ্বংসের কথা ঘোষণা করার কিছু ক্ষণের মধ্যেই আইএস ইন্টারনেটে ঘটনার দায় চাপিয়েছে মার্কিন জোট শক্তির উপরে। মার্কিন বাহিনী অবশ্য আইএসের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, জোটশক্তি এগোচ্ছে বুঝেই মসজিদ-মিনার ধ্বংস করে জঙ্গিরা।

২০১৪ সালের জুলাই মাসেও আইএস এই মিনার ও মসজিদ গুঁড়িয়ে দিতে চেয়েছিল। কারণ তাদের মনে হয়েছিল, ইসলামের মৌলিক ধারণা থেকে বিচ্যুতি ঘটানো হয়েছে ওই মসজিদ-মিনারের কাঠামোয়। কিন্তু মসুলের বাসিন্দারা একজোট হয়ে সেখানে মানববন্ধন তৈরি করে সে যাত্রা আইএসের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন দ্বাদশ শতাব্দীর এই মিনার-মসজিদকে। শেষ রক্ষা আর হল না। ধুলোয় মিশে গেল ইতিহাস।

ISIS Mosque Mosque of al-Nuri মসুল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy