এ বার গোটা গাজ়া উপত্যকা দখলের পথে হাঁটতে চলেছে ইজ়রায়েল। সোমবার সকালে ইজ়রায়েলের মন্ত্রিসভায় গাজ়া দখলের পরিকল্পনা সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এপি।
সোমবার দুই ইজ়রায়েলি কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, শীঘ্রই পুরো গাজ়া উপত্যকা দখল করে অনির্দিষ্টকালের জন্য ওই অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করার পরিকল্পনা করছে ইজ়রায়েল। ইজ়রায়েলের এই পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে প্যালেস্টাইনের ভূখণ্ডে ইজ়রায়েলের অভিযান ব্যাপক ভাবে প্রসারিত হবে। আন্তর্জাতিক স্তরেও তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়তে হতে পারে ইজ়রায়েলকে। তা সত্ত্বেও ভোটাভুটির পর ওই পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে সে দেশের মন্ত্রিসভা।
কয়েক হাজার সেনাকে মোতায়েন করার ইজ়রায়েলি সামরিক প্রধানের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরেই গাজ়া দখলের এই নতুন পরিকল্পনাটি অনুমোদন করেছে ইজ়রায়েল। এর ফলে গাজ়ায় হামাসকে পরাজিত করা এবং পণবন্দিদের মুক্ত করা লক্ষ্যে সফল হবে ইজ়রায়েল, এমনটাই মনে করছেন সে দেশের প্রশাসনিক প্রধানেরা। গাজ়ার বিস্তীর্ণ অংশ ইতিমধ্যেই ইজ়রায়েলের দখলে। প্রায় ৫০ শতাংশ ভূখণ্ডে ইজ়রায়েলের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তার উপর এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে লক্ষ লক্ষ প্যালেস্টাইনিকে দক্ষিণ গাজ়ায় আশ্রয় নিতে হবে, যেখানে ইতিমধ্যেই ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনায় সরব হয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলি।
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, পণবন্দি মুক্তি নিয়ে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পরে মার্চের গোড়ায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইজ়রায়েলি ফৌজ গাজ়ায় হামাস বিরোধী অভিযান শুরু করেছিল। পরে হামাস ইজ়রায়েলি পণবন্দিদের ফেরাতে রাজি হলেও ইজ়রায়েলের আক্রমণ থামেনি। প্যালেস্টাইনি শরণার্থী বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-র রিপোর্ট জানাচ্ছে, গত ১৮ মার্চ থেকে প্রতি দিন গাজ়ায় অন্তত ১০০ প্যালেস্টাইনি শিশু হতাহত হচ্ছে। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে খাদ্য এবং পানীয়ের ভয়াবহ সঙ্কট। গাজ়া ভূখণ্ডের একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত রাফা এখন ইজ়রায়েলি সেনার মূল নিশানা। সেখান থেকে প্যালেস্টাইনিদের সরে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। শনিবারও গাজ়ায় মানবিক সহায়তাবাহী জাহাজে সরাসরি হামলার অভিযোগ উঠেছে ইজ়রায়েলি সেনার বিরুদ্ধে। ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়ে দিয়েছেন, হামাস যোদ্ধাদের নির্মূল না করা পর্যন্ত অবরুদ্ধ গাজ়ায় কোনও মানবিক সহায়তাও পৌঁছতে দেওয়া হবে না।