Advertisement
E-Paper

জ্বালানির অভাব গাজ়ায়, অপুষ্টির কারণে জীবন বিপন্ন শিশুদের! ইজ়রায়েলি হামলায় নতুন করে মৃত্যু ৪৪ জনের

ইজ়রায়েলের সঙ্গে হামাসের সংঘাতের কারণে ভেঙে পড়েছে গাজ়ার অর্থনীতি। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে গাজ়াবাসীকে। দিনের পর দিন হাহাকার বাড়ছে গাজ়ায়!

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৫ ১৫:৫১
Israeli blockade on fuel endangering 100 premature babies in Gaza, Said by UN

অনাহারে গাজ়ায় বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। —ফাইল চিত্র।

বাড়ি বা ত্রাণশিবির ছেড়ে রাস্তায় বার হওয়াই এখন বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে গাজ়াবাসীর কাছে। কোথা থেকে কখন গুলি ছুটে আসবে বা গোলাবর্ষণ শুরু হবে, তা বোঝার উপায় নেই। কিন্তু খাবার বা বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহ করতে বাড়ি থেকে বার হতেই হয়। গাজ়াবাসীদের অনেকের কথায়, ‘‘ভাগ্য ভাল থাকলে জীবিত অবস্থায় ফিরি।’’ রাফা হোক বা খান ইউনিস— গাজ়ার প্রায় সর্বত্র একই ছবি। শুধু তা-ই নয়, সেই সঙ্গে অনাহার ধীরে ধীরে গ্রাস করছে গোটা গাজ়াকেই! সেখানকার এনজিও নেটওয়ার্কের প্রধান আমজাদ শাওয়ার মতে, কমপক্ষে দু’লক্ষ শিশু অনাহার এবং অপুষ্টির শিকার।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে গাজ়ার মর্মান্তিক অবস্থার কথা তুলে ধরা হয়েছে। ইজ়রায়েল এবং প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সংঘাতে প্রায় প্রতি দিন অনেক সাধারণ গাজ়াবাসী প্রাণ হারাচ্ছেন। আল জাজ়িরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজ়ার বিভিন্ন স্থানে ইজ়রায়েলি হামলায় নতুন করে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক রয়েছেন যাঁরা ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে সাহায্য চাইতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।

শুধু খাবারের অভাব প্রকট নয়, গাজ়ায় জ্বালানিও প্রায় নেই বললেই চলে। গাজ়ায় জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করেছে ইজ়রায়েল। তাতেই সমস্যা বাড়ছে। রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, “সময়ের আগে জন্ম নেওয়া ১০০টিরও বেশি শিশুর জ্বালানির অভাবে জীবন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।” ইজ়রায়েলের হামলা এবং মানবিক সাহায্য বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা বার বার করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। তবে এখনও পর্যন্ত ইজ়রায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি চূড়ান্ত না হওয়ায় পরিস্থিতি বদলের কোনও সম্ভাবনা তৈরি হয়নি!

ইজ়রায়েলের সঙ্গে হামাসের সংঘাতের কারণে ভেঙে পড়েছে গাজ়ার অর্থনীতি। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে গাজ়াবাসীকে। দিনের পর দিন হাহাকার বাড়ছে গাজ়ায়! বাঁচার উপায় ত্রাণশিবির। কিন্তু সেটাও যেন প্যালেস্টাইনিদের কাছে ‘মৃত্যুফাঁদ’! খাবার ও প্রয়োজনীয় ত্রাণের জন্য গাজ়াবাসীর ভরসা ত্রাণশিবির। গাজ়ায় পরিচালিত ইজ়রায়েল-সমর্থিত ত্রাণ বিতরণকারী সংগঠন গাজ়া হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নিয়েও প্রশ্নের অন্ত নেই। ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র পরিচালনা করার দক্ষতা নেই জিএইচএফের, এমনও দাবি করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। সেই দাবি যে খুব একটা ভুল নয়, তার প্রমাণ প্রায় প্রতি দিনই মিলছে। জিএইচএফ গাজ়ার চার জায়গায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র করেছে। সেগুলি হল তাল আল-সুলতান, সৌদিপাড়া, ওয়াদি গাজ়া এবং খান ইউনিস। ঘটনাচক্রে, ইজ়রায়েলি সেনা আগে থেকেই এই সব এলাকায় প্যালেস্টাইনিদের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে। সেখানকার বাসিন্দাদের স্থান হয়েছে শরণার্থী শিবিরে। সেই সব শিবির থেকে ত্রাণকেন্দ্রগুলির দূরত্ব কয়েক কিলোমিটার।

আশ্চর্যের বিষয় হল, জিএইচএফের ত্রাণকেন্দ্রগুলি খোলা থাকে খুবই কম সময়ের জন্য। তাদের ফেসবুক পেজের তথ্য অনুযায়ী, কেন্দ্রগুলি দিনে এক বার খোলে, তা-ও মাত্র আট মিনিটের জন্য। জুন মাসে গড়ে সৌদিপাড়া ত্রাণকেন্দ্রটি খোলা ছিল মাত্র ১১ মিনিট। আর এই সময়ের মধ্যেই ত্রাণ সংগ্রহ করতে হয়। ফলে স্বভাবতই হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। ঘটে পদপিষ্টের মতো ঘটনাও। একটা বাক্সের জন্য শয়ে শয়ে লোক ঝাঁপিয়ে পড়েন। আর তাতেই বিপদ বাড়ছে।

gaza Starvation Death Israel-Hamas Conflict
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy