আমেরিকায় পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ফের চিন কিংবা ভারতের মতো দেশে ফিরে যেতে হয় দক্ষ ও প্রতিভাধর ছাত্রদের। এটা খুবই লজ্জার! ‘ট্রাম্প গোল্ড কার্ড’ বা ‘গোল্ড কার্ড’ ভিসার সপক্ষে বলতে গিয়েই এমনটাই মন্তব্য করে বসলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সঙ্গে এ-ও জানালেন, নয়া ভিসা এলে এ ধরনের প্রতিভাধর পড়ুয়াদের আমেরিকায় রাখা কিছুটা হলেও সহজ হবে।
বুধবার ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমেরিকায় স্থায়ী ভাবে বসবাস করতে গেলে এখন থেকে গোল্ড কার্ড ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে। গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প এই সংক্রান্ত নির্দেশনামায় শিলমোহর দিলেও আদতে ভিসা কার্যকর হয়েছে বুধবার থেকে। এখন থেকে ওয়েবসাইটে গোল্ড কার্ড ভিসার জন্য আবেদন করা যাচ্ছে। বুধবার হোয়াইট হাউসে এ বিষয়ে বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, এটি খুবই লজ্জার বিষয় যে, ভারত এবং চিনের মতো দেশের পড়ুয়াদের আমেরিকার শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করার পর আমেরিকা ছেড়ে চলে যেতে হয়। ট্রাম্পের কথায়, ‘‘আন্তর্জাতিক পড়ুয়াদের অনেকেই তাদের ক্লাসে সেরা হওয়া সত্ত্বেও বছরের পর বছর ধরে অভিবাসন সংক্রান্ত নানা বাধার সম্মুখীন হয়। কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পর তাঁদের ভারতে, চিনে কিংবা ফ্রান্সে ফিরে যেতে হয়। এটা খুবই লজ্জাজনক, হাস্যকর। আমরা এটা নিয়ে ভাবছি।’’
আরও পড়ুন:
এর পরেই ট্রাম্প জানিয়ে দেন, নতুন অভিবাসন উদ্যোগের অধীনে এ ধরনের উচ্চশিক্ষিত ও প্রতিভাধর আন্তর্জাতিক ছাত্রদের নিয়োগ করা এবং স্থায়ী ভাবে আমেরিকায় থাকার সুযোগ করে দিতে পারবে মার্কিন সংস্থাগুলি। ট্রাম্প আরও জানান, তিনি অ্যাপল-এর সিইও টিম কুক এবং অন্যদের মুখে বেশ কয়েক বার শুনেছেন যে তাঁরা অভিবাসন সংক্রান্ত ঝামেলা এড়াতে সেরা কলেজগুলি থেকে কর্মী নিয়োগ করতে পারেন না ৷ কারণ, তাঁরা বুঝতেই পারেন না, সেই কর্মীকে ভবিষ্যতে আদৌ দেশে রাখা সম্ভব হবে কি না৷ মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথায়, ‘‘এত দিন এ জন্যই দেশ ছাড়তে হত মেধাবী শিক্ষার্থীদের৷’’ তবে এখন থেকে আর তা হবে না বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের কথায়, ‘গোল্ড কার্ড’ এত দিন ধরে চালু থাকা গ্রিন কার্ড ভিসার মতোই। তবে ‘গোল্ড কার্ডে’ আরও অনেক অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়া যাবে। তার জন্য আবেদনকারীদের গুনতে হবে ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় যা ৮ কোটি ৮০ লক্ষ টাকারও বেশি)। গোল্ড কার্ডের জন্য আবেদন করতে হলে প্রথমে আবেদনকারীকে ১৫ হাজার ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ১৩ লক্ষ ৪৮ হাজার ৪৯৯ টাকা) ‘প্রসেসিং ফি’ বাবদ জমা দিতে হবে। এর পর আবেদনকারীর নথিপত্র যাচাই করে দেখা হবে। যাচাই শেষ হলে ‘উপহার’ হিসাবে মার্কিন কোষাগারে জমা করতে হবে ১০ লক্ষ ডলার। তার পরেই পাকাপাকি ভাবে আমেরিকায় থাকার ছাড়পত্র মিলবে। এ ছাড়া, কোনও কর্মীর দ্রুত ভিসা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ২০ লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ১৭ কোটি ৬১ লক্ষ টাকার বেশি) খরচ করতে হতে পারে মার্কিন সংস্থাগুলিকেও।