বাংলাদেশ সফরে গিয়ে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্কের বন্ধন আরও জোরদার করার বার্তা দিলেন জামাত উলেমা-ই-ইসলাম-ফজ়ল (জেইউআই-এফ) প্রধান মওলানা ফজলুর রহমান। এক সপ্তাহের সফরে বাংলাদেশে গিয়েছেন তিনি। ঢাকা, সিলেট-সহ একাধিক শহরে অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা তাঁর। রবিবার ঢাকার একটি অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে দুই দেশের সম্পর্কের কথা বলেন ফজলুর। জানান, পারস্পরিক ভরসার ঐক্যই এই দুই দেশের শক্তিশালী বন্ধন ছিল। তা মুছে যেতে দেওয়া যাবে না।
জামাত প্রধানের ভাষণ শুনতে ঢাকায় বিপুল জমায়েত হয়েছিল। বাংলাদেশি জনগণের সামনে দাঁড়িয়ে ফজলুর বলেন, ‘‘বাংলাদেশের জনগণের চেতনা বরাবরই শক্তিশালী এবং গতিশীল। এখানকার ধর্মীয় আন্দোলন হিংসার দ্বারা নয়, আদর্শের ধারাবাহিকতার দ্বারা চালিত হয়েছে।’’ তিনি দাবি করেছেন, পাকিস্তান থেকে প্রতিনিধিদল শুধু অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেনি। বরং বাংলাদেশের মানুষের প্রতি পাকিস্তানিদের বার্তা পৌঁছে দিতে এসেছেন তাঁরা। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মুসলমানেরা একই সম্প্রদায়ের অংশ। বাংলাদেশ যদি এক পা এগিয়ে আসে, পাকিস্তান দু’পা এগোবে। দুই দেশের ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়বে।’’ তাঁদের এই সফরই ঢাকা এবং ইসলামাবাদকে আরও কাছাকাছি আনবে, দুই দেশের সম্পর্কের অগ্রগতিতে অনুঘটকের কাজ করবে, দাবি পাকিস্তানের জামাত প্রধানের।
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, গত বছরের অগস্টে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। গণআন্দোলনের চাপে পড়ে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন হাসিনা। পালিয়ে আসেন ভারতে। সেই থেকে তিনি ভারতেই আছেন। হাসিনার পদত্যাগে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পালাবদল ঘটে গিয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাংলাদেশে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
অভিযোগ, ইউনূস বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসার পর সেখানে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বেড়ে গিয়েছে। ভারত সরকারও তা নিয়ে একাধিক বার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মত ভূ-রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকের। জামাত প্রধানের বার্তা থেকেও সেই ইঙ্গিত মিলল।