Advertisement
E-Paper

কিমের ক্ষেপণাস্ত্রে যুদ্ধের ভয় জাপানে

টোকিও জানিয়েছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা নাগাদ পিয়ংইয়ং-এর কাছ থেকে এই উৎক্ষেপণ হয়। মিনিট পনেরোর মধ্যে ৭৩০ মাইল পেরিয়ে তিন টুকরো হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে ভেঙে পড়ে এটি। জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক মনে করছে, এটি মাঝারিপাল্লার ওয়াসং-১২ জাতীয় ক্ষেপণাস্ত্র।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৩৬
উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উত্‌ক্ষেপণ। ছবি: এপি।

উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উত্‌ক্ষেপণ। ছবি: এপি।

বাহাত্তর বছর আগেকার পরমাণু বিস্ফোরণের ক্ষত এখনও টাটকা হিরোশিমা-নাগাসাকির দেশে। আতঙ্কের সেই অগস্টেই ফিরল ১৯৪৫-এর পুরনো বিভীষিকার স্মৃতি। মঙ্গলবার জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপের উপর দিয়ে উড়ে গেল উত্তর কোরিয়ার ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র। তাতে দেশের কোনও ক্ষতি না হলেও ফের যুদ্ধের আতঙ্ক ছড়াল সাধারণ নাগরিকদের মনে।

আট বছর আগে জাপানের উপর দিয়ে শেষ বার উড়ে গিয়েছিল উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র। সে বারের মতো এ বারেও জাপানের ভূখণ্ডে আঘাত করেনি ক্ষেপণাস্ত্রটি। তা সত্ত্বেও মঙ্গলবার খবর ছড়িয়ে পড়া মাত্রই সিঁটিয়ে যায় সাধারণ মানুষ। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতিও আশ্বস্ত করতে পারেনি তাঁদের। ৩৫ বছরের এক শিক্ষিকা ইউকি হিওয়াটারি বলেছেন, ‘‘বাচ্চাদের কথা ভাবছি। ওদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভয় লাগছে।’’ আজ সকালে ই-মেল চেক করতে গিয়ে উৎক্ষেপণের কথা জানতে পারেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের স্কুলে ভূমিকম্প বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় জানা নেই।’’ ভীত ইউকি বলছেন, ‘‘আশা করি শান্তি আলোচনায় এই সঙ্কট কাটাবেন বিশ্বনেতারা। যুদ্ধ বাধিয়ে নয়।’’

টোকিও জানিয়েছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা নাগাদ পিয়ংইয়ং-এর কাছ থেকে এই উৎক্ষেপণ হয়। মিনিট পনেরোর মধ্যে ৭৩০ মাইল পেরিয়ে তিন টুকরো হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে ভেঙে পড়ে এটি। জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক মনে করছে, এটি মাঝারিপাল্লার ওয়াসং-১২ জাতীয় ক্ষেপণাস্ত্র। প্রসঙ্গত, গত এক সপ্তাহ যৌথ সামরিক মহড়া চালাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া ও আমেরিকা। পাশাপাশি জাপানের সেনার সঙ্গেও দু’সপ্তাহ মহড়া দিচ্ছে আমেরিকা। ফলে বারুদ জমছিলই। পিয়ংইয়ংয়ের এই উৎপেক্ষণকে ‘নজিরবিহীন ও গুরুতর’ বলে জানান শিনজো আবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি, ‘‘পিয়ংইয়ংকে পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য সব উপায় ভাবা রয়েছে। এ ভাবে উত্তেজনা বাড়ালে অচিরে বিশ্বের থেকে আলাদা হয়ে যাবে উত্তর কোরিয়া।’’ ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতে, আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি মানছে না পিয়ংইয়ং।

আজ জাপানের টেলিভিশনে এই খবর সম্প্রচারের পরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় সব অনুষ্ঠান। সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যায় একাধিক বুলেট ট্রেনের লাইনও। নাগরিকদের সতর্ক করতে এসএমএসে খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। টোকিওর গৃহবধূ হারুমি ইয়োশিদা বলেন, ‘‘সব শুনে অসহায় লাগছে। আমাদের মতো মানুষ কোথায় লুকোবে? হাতে একটাই উপায়। যুদ্ধ শুরু না হওয়ার জন্য প্রার্থনা করা।’’ উত্তর কোরিয়া পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে ক্রমশ আগুয়ান, এটা জানার পরেই আতঙ্কে ছিলেন রিও শিগিহারা। তিনি বলেন, ‘‘যখন খবরটা পেলাম মনে হল বিপদের আর কিছুই বাকি নেই।’’ বেসরকারি সংস্থার কর্ণধার তাকাশি কুমোন বলছেন, ‘‘জাপান আমেরিকার উপর খুব বেশি মাত্রায় নির্ভরশীল। আমি চাই দেশটা নিজেও কিছু করুক। এ ভাবে হাত গুটিয়ে থাকলে বিপদ আবশ্যম্ভাবী।’’

Kim Jong-un North Korea Japan জাপান উত্তর কোরিয়া
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy