জাপানের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন শিগেরু ইশিবা। রবিবার সকালে সরকারি সংবাদমাধ্যম এনএইচকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পদত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ঘোষণা করলেন ইশিবা।
জাপানে এখনও ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এবং তাদের জোটসঙ্গী কোমেইতো। কিন্তু গত এক বছর ধরে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মধ্যে ইশিবাকে নিয়ে অসন্তোষ দেখা দেয়। গত জুলাইয়ে জাপান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পরই প্রশ্নের মুখে পড়ে ইশিবার শাসনব্যবস্থা। শুধু বিরোধীদের মধ্যে নয়, দলের মধ্যেও ইশিবার পদত্যাগের দাবি ওঠে। তবে তিনি ইস্তফা দেওয়ার পক্ষে ছিলেন না। তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি দেশের বাণিজ্যনীতিতে দিতে চান।
প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার আগেই ইশিবা লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়ান। প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশের পরই তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। তবে কেন ইস্তফা দিচ্ছেন তিনি? স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, জাপান জুড়ে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির আইনপ্রণেতারা নতুন নেতৃত্বের দাবি তুলেছেন। দলের মধ্যে বিভাজন এড়াতেই ইশিবা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে চাইছেন। দলের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা নিজেই জানিয়েছেন ইশিবা। তাঁর কথায়, ‘‘আমি দলের সেক্রেটারি মোরিয়ামকে বলেছি, দ্রুত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনপ্রক্রিয়া শুরু করতে।’’
গত বছরই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন ইশিবা। তবে তাঁর সময়কাল খুব একটা সুখকর নয়। প্রথমে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। পরে উচ্চকক্ষেও একই ফল হয়। তার ফলে শাসকদলের রাজনৈতিক প্রভাব ক্রমশ দুর্বল হতে শুরু করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জাপানের দক্ষিণপন্থী দলগুলির প্রতি জনসমর্থন উল্লেখযোগ্য বেড়ে যায়, যা লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির রক্ষণশীল সমর্থনে ভাঙন ধরায়।
আরও পড়ুন:
লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ১৯৯৫ সাল থেকে প্রায় টানা জাপানে ক্ষমতায় রয়েছে। কখনও সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে, আবার কখনও জোটসঙ্গীদের সাহায্যে সরকার গড়েছে। দলের নেতৃত্বে বার বার বদল এলেও জাপানের শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তন তেমন চোখে পড়েনি। তবে গত এক বছরে জাপানের অর্থনৈতিক সঙ্কট, জীবনযাত্রায় ব্যয়বৃদ্ধির মতো বিষয় লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির শাসনব্যবস্থার বিপরীতে গিয়েছে। ইশিবার প্রতি ক্ষোভ উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে। সেই আবহে এ বার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন ইশিবা।