নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকেই চাইছেন কাঠমান্ডুর নির্দল মেয়র বলেন্দ্র শাহ ওরফে বলেন। আন্দোলন-পর্বে নেপালের ছাত্র-যুবদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের বলেন্দ্র। অস্থির সময়ে তিনিই নেপালের হাল ধরতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছিল। তবে বুধবার ছাত্র-যুব নেতৃত্বের তরফ থেকেই সুশীলার নাম উঠে আসে। একটি সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে সুশীলার নাম ঘোষণা করতে পারে সে দেশের সেনা।
অন্য দিকে, নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু, ললিতপুর এবং ভক্তপুরে কার্ফু কিছুটা শিথিল করেছে সেনা। সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত জরুরি কাজের জন্য বাইরে বেরোতে পারবেন সাধারণ মানুষ। বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্তও এই ছাড় দেওয়া হবে। সেনাবাহিনীর তরফে এই ঘোষণার পরেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নেপালের দোকানবাজারগুলিতে সাধারণ মানুষের ভিড় দেখা গিয়েছে।
সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে বলেন্দ্র লিখেছেন, “অন্তর্বর্তী সরকারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমি দেশের প্রধান হিসাবে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে সমর্থন করছি।” একই সঙ্গে তিনি দেশের ভাবী নেতাদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন। বলেন্দ্র লেখেন, “অন্তর্বর্তী সরকার নতুন নির্বাচন করাবে। ওই সরকারই নতুন করে দেশের জনগণের মতামত নেবে।” প্রসঙ্গত, নেপালে র্যাপার এবং সুরকার হিসাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন বলেন্দ্র। সেই জনপ্রিয়তায় ভর করেই ২০০২ সালে কাঠমান্ডুর মেয়র নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসাবে জয়লাভ করেন তিনি। নেপালের ছাত্র-যুব আন্দোলনে শামিল না-হলেও দূর থেকেই তাকে সমর্থন করেছিলেন বলেন্দ্র।
অন্তর্বর্তী সরকারের পরবর্তী প্রধানকে বেছে নিতে বুধবার আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা কাঠমান্ডুতে আলোচনায় বসেছিলেন। অনলাইনে বিভিন্ন জেলা থেকে আন্দোলনকারী নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিরা ওই আলোচনাসভায় যোগ দিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টার আলোচনার পরে পাঁচ হাজারেরও বেশি আন্দোলনকারী বেছে নেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সুশীলাকে। নেপালের সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, প্রথমে কার্কির কাছে সম্মতি প্রস্তাবটি পাঠানো হয়েছিল আন্দোলনকারীদের তরফে। তিনি প্রস্তাব বিবেচনার জন্য অন্তত ১,০০০ লিখিত স্বাক্ষর চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রথমেই তিনি ২,৫০০-এরও বেশি স্বাক্ষর পেয়েছেন।
গত কয়েক দিনের অস্থিরতার পর বৃহস্পতিবার আপাত ভাবে শান্ত রয়েছে নেপাল। রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনা। পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির দল কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল (ইউএমএল) এবং তাদের জোটসঙ্গী নেপালি কংগ্রেস বুধবার একটি যৌথ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, তারা চায় সাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই বর্তমান সমস্যার সমাধান করা হোক।