জখম মহিলাকে হালপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স।
রাত তখন ১টা। নববর্ষের উৎসবে মাতোয়ারা গোটা দেশ। ইস্তানবুলের রেইনা নাইট ক্লাবের দৃশ্যটাও একই। ভিড় থিক থিক করছে সেখানে। যে যার মত নববর্ষ উদযাপনে ব্যস্ত। লাইট, মিউজিক, পানীয়ে মেতে সকলে। ঠিক তখনই সান্তার পোশাকে দুই ব্যক্তির ওই নাইট ক্লাবে প্রবেশ। যে সান্তা খুশির বদলে নিয়ে এল মৃত্যুর বার্তা। নববর্ষের রাতের উৎসব মুহূর্তে মিলিয়ে গেল কান্নায়। বন্দুকবাজের এলোপাথারি গুলি ছিনিয়ে নিল অন্তত ৩৯জনের প্রাণ। গুরুতর জখম হলেন আরও ৪০ জন।
এই ঘটনায় ২ জন ভারতীয় মারা গিয়েছেন বলে টুইটারে জানিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তিনি বলেন, ‘‘তুরস্ক থেকে ভীষণ খারাপ খবর এসে পৌঁছেছে। ইস্তানবুল হামলায় দু’জন ভারতীয় মারা গিয়েছেন।’’ ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন ইস্তানবুলে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত। মৃত দুই ভারতীয়ের নামও জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। তাঁরা হলেন, রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদের পুত্র আবিজ রিজভি এবং আরেকজন হলেন গুজরাতের বাসিন্দা খুশি শাহ।
ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের টুইট।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সান্তার পোশাকে থাকা দুই ব্যক্তিই হামলাকারী ছিল। তবে দু’জনের হাতেই বন্দুক ছিল কি না তা এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। সিটিটিভি ফুটেজ দেখে আততায়ীদের খোঁজ চলছে। স্থানীয় সময় রাত দেড়টা নাগাদ মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ইস্তানবুলে।
ইস্তানবুল পুলিশ সূত্রের খবর, ইস্তানবুলের ইউরোপের দিকে বসফরাসের পাশেই অবস্থিত নাইট ক্লাবটি। এ দিন প্রায় ৭০০ লোক নাইট ক্লাবে ভিড় জমিয়েছিলেন। ক্লাবের নিরাপত্তা ব্যবস্থার চোখ এড়িয়ে সান্তার পোশাকে দুই আততায়ী ভিতরে প্রবেশ করে। প্রবেশের পর অন্যান্যদের সঙ্গে তারাও উৎসবে সামিল হয়ে যায়। তারা যে আদপে হামলা করার উদ্দেশেই ভিতরে ঢুকেছে তা দেখে বোঝার উপায় ছিল না। প্রায় ৩০ মিনিট এই ভাবে কাটানোর পর আচমকাই বন্দুক বের করে এলোপাথারি গুলি ছুড়তে শুরু করে তারা। মুহূর্তে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন বহু লোক। ঘটনায় মৃত ৩৯ জনের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মীও রয়েছেন। অনেকেই আবার প্রাণ বাঁচাতে আতঙ্কে ক্লাবের পাশে বসফরাসের জলে ঝাঁপ দেন। হামলার খবর পেয়ে পুলিশ যতক্ষণে ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছয়, ক্লাব ছেড়ে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ। জখমদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধারকার্য চলছে।
আরও পড়ুন: ‘আমি বেঁচে’, চার বছর ধরে ‘জীবিত’ প্রমাণের মরিয়া লড়াই সন্তোষের
এর আগেও একাধিকবার সন্ত্রাস হামলা হয়েছে তুরস্কে। গত বছরের ডিসেম্বরেই একটি ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন পরপর দু’বার বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ৪৪ জনের। এই ঘটনার এক সপ্তাহ পরে আত্মঘাতী গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে ১৪ জন তুরস্ক সেনার মৃত্যু হয়। চলতি বছরের জুন মাসে ইস্তানবুলের আটাটার্ক বিমানবন্দরে আত্মঘাতী হামলায় মৃত্যু হয় ৪৭ জনের। এছাড়াও আরও অনেক সন্ত্রাস হামলায় মৃত্যু হয়েছে গত বছরেই। আর নতুন বছরটাই শুরু হল এমন হামলার ঘটনায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy