প্রতীকী ছবি।
অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরে আসা। দীর্ঘ ২৬ বছরের অপেক্ষার পরে দাসত্ব আর বন্দিদশা থেকে মুক্তি। দিল্লির ভোগাল এলাকায় একচিলতে ঘরে বসে আফগানিস্তানে ফেলে আসা সেই জীবনের কথা বলতে গিয়ে শিউরে ওঠেন ফরিদা। তালিব জঙ্গির প্রাক্তন ঘরণি সেই অন্ধকারেই হারিয়েছেন তাঁর দুই মেয়েকে। ফরিদার স্বামীই বিক্রি করে দিয়েছিল তাদের।
মধ্যবয়স্কা ফরিদার দেহে এখনও অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন। তাঁর ২৬ বছরের দাম্পত্যের স্মৃতি। তালিবান স্বামীর অত্যাচারের নমুনা দেখাতে গিয়ে বইয়ের পাতা উল্টে বার করে আনলেন পুরনো একটা ছবি। ছুরির কোপে আধখানা কেটে ঝুলে গিয়েছে হাতের দু’টি আঙুল। স্টিচ করার সময় ডাক্তার চুলেছিলেন সেই ছবি। শেষ পর্যন্ত আঙুল দু’টি বাঁচলেও রয়ে গিয়েছে গভীর কাটা দাগ।
ফরিদা জানালেন, মাত্র ১৪ বছর বয়সেই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল এক তালিব জঙ্গির সঙ্গে। বলা ভাল, নয়ের দশকের মধ্যপর্বে বিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল পরিবার। তার পরের ইতিহাস বীভৎস অত্যাচার সওয়া আর প্রবল আতঙ্ককে জয় করার। ফরিদা জানান, কী ভাবে বছরের পর বছর স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কী ভাবে বিক্রি করে দেওয়ার হয়েছে তাঁর দুই কন্যা সন্তানকে। আর তার নেপথ্যের কারণ হিসেব তালিবান নেতাদের ‘মগজ ধোলাই’কেই দায়ী করছেন তিনি। ফরিদার কথায়, ‘‘ওরা মানুষকে মানুষ থাকতে দেয় না।’’
ফরিদা জানিয়েছেন, বড় মেয়েকে তাঁর স্বামী এবং ননদ মিলে বিক্রি করেছিল। এর কয়েক বছর পর তাঁর স্বামী ছোট মেয়েকে বিক্রির তোড়জোড় শুরু করে। সে সময় ফরিদা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। এর পর ছোট মেয়েকে নিয়ে তালিবান ডেরায় চলে যায় তাঁর স্বামী। সম্ভবত, তালিবান ডেরাতেই যৌন দাসী হতে বাধ্য করা হয় তাকে। এর পরেই আফগানিস্তান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন ফরিদা। সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতি তাঁকে সেই সুযোগ এনে দেয়। শরণার্থী হিসেবে ঠাঁই পান ভারতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy