টানা ভারী বৃষ্টির জেরে প্রায় সব নদী প্লাবিত। সেই জলে ভেসে যাচ্ছে একের পর এক গ্রাম। ঘরছাড়া লক্ষ লক্ষ মানুষ। এমনই ছবি পাকিস্তানে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পঞ্জাব প্রদেশের। শুধু তা-ই নয়, প্রভাব পড়েছে লাহৌরেও। স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তাদের মতে, দুর্যোগ মাথায় নিয়ে উদ্ধারকাজ চলেছে।
কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে? কত জন ঘরছাড়া? দুর্যোগে মৃত্যু হয়েছে কত জনের? শনিবার পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (পিডিএমএ) দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৬ জুন থেকে বর্ষায় ৮৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে শুধু পঞ্জাব প্রদেশেই মৃতের সংখ্যা ১৯৫। ভারতের সীমান্তবর্তী পঞ্জাব প্রদেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত তিনটি আন্তঃসীমান্ত নদীর জলস্তর অনেকটাই বেড়েছে। এর ফলে ২,৩০০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। চন্দ্রভাগা, ইরাবতী এবং শতদ্রু—তিন নদীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। স্থানীয় কর্তাদের মতে, এই তিন নদী এক সঙ্গে উপচে পড়ার ঘটনা বিরল। শেষ কবে এমন ঘটেছে, তা মনে করতে পারছেন না অনেকেই।
সামগ্রিক ভাবে, এ বছরের বন্যায় পাকিস্তানে এখনও পর্যন্ত ১৫ লক্ষের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে দুর্যোগের মধ্যে সমান তালে উদ্ধারকাজ চলছে বলে দাবি করেছেন পঞ্জাব প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রধান ইরফান আলি। তিনি জানান, ৮০০টিরও বেশি নৌকা উদ্ধারকাজে ব্যবহার হচ্ছে। ১,৩০০-র বেশি উদ্ধারকর্মী প্লাবিত এলাকা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করছেন। তৈরি হয়েছে ৫০০-র বেশি ত্রাণশিবির।
আরও পড়ুন:
অগস্টের মাঝামাঝি সময়ে খাইবার পাখতুনখোয়ায় লাগাতার বর্ষণের জেরে ভূমিধসের মতো ঘটনা ঘটে। কয়েক দিনের মধ্যে ওই প্রদেশেই অন্তত ৪০০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছিল। তবে পরিস্থিতি বদলের সম্ভাবনা এখনই নেই। পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ দেশের বহু এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে।
অন্য দিকে, কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতির পরেও ‘মানবিকতার খাতিরে’ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ফের পাকিস্তানকে সতর্ক করল ভারত। উত্তরের রাজ্যগুলিতে ভারী বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ থেকে জল ছাড়তে হতে পারে ভারতকে। এর ফলে তওয়াই নদীতে জলস্তর বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জম্মুর উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া তওয়াই হল চন্দ্রভাগার একটি উপনদী। তওয়াই নদী প্লাবিত হলে পাকিস্তানেও তার প্রভাব পড়তে পারে। সেই বিষয়টিও নজরে রেখেছে পাকিস্তান।