—ফাইল চিত্র।
‘ধ্বংসস্তূপের নীচে এক দিকে মা-বাবা আটকে রয়েছেন, অন্য দিকে ফুটে উঠেছে আমার ১১ বছরের ছেলের আঙুল। দ্রুত চেষ্টা করলে এক জনকেই বাঁচাতে পারতাম।’ হাই অ্যাটলাস পার্বত্য অঞ্চলের বাসিন্দা, বছর পঞ্চাশের তায়েব আইত ইঘেনবাজ়ের আক্ষেপ, শেষ পর্যন্ত বাঁচাতে পারেননি পরিবারের বাকিদের। শুধু ছেলেকে আঁকড়ে আশ্রয় নিতে হয়েছে ত্রাণ শিবিরের একটি অস্থায়ী তাঁবুতে।
গত শুক্রবার মরক্কোয় হওয়া ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছেন ২৬৮১ জন। আহত আড়াই হাজােরর বেশি। উদ্ধার কাজ যত এগোচ্ছে, তত যেন লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। নিখোঁজ বহু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, গত ৬০ বছরের মধ্যে মরক্কোয় হওয়া সব চেয়ে বিধ্বংসী ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে তিন লক্ষ মানুষের উপরে। ভেঙে পড়েছে সে দেশের অধিকাংশ ঘর-বাড়ি। গত তিন রাত ধরে খোলা আকাশের নীচে কাটাতে হচ্ছে অসংখ্য মানুষকে। মুলে ব্রাহিম, ম্যারাকেশ, কাসাব্লাঙ্কা, ইমদাল-সহ বেশ কিছু জায়গায় অস্থায়ী শিবির তৈরি করা হয়েছে। যেখানে সম্ভব, সেখানে সেনার তরফে খাবার, জল, ওষুধ, কম্বল, তাঁবু পাঠানো হচ্ছে। আল হাউজ় অঞ্চলে মরক্কোর সেনা ২৪ জন চিকিৎসক, ৪৬ জন নার্স ও ৫৮ জন সামাজিক ও মানসিক বিশেষজ্ঞের সাহায্যে ত্রাণ শিবিরে থাকা মানুষজনকে সাহায্য করছে। কোথাও আবার রক্তদান করছেন পুলিশকর্মীরাই। সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, অস্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতে মূলত পুড়ে যাওয়া বা মুখে, হাতে, পায়ে গভীর আঘাতের চিকিৎসা করাতেই লোকজন বেশি আসছেন।
তবে ম্যারাকেশ শহর থেকে কিছু দূরে থাকা গ্রামগুলির সঙ্গে যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ভূমিকম্পের পরে। স্থানীয়দের দাবি, উদ্ধারকারীদের পৌঁছতে লেগে যাচ্ছে স্বাভাবিকের থেকে অনেকটা বেশি সময়। তাই উদ্ধারকাজ চালানো ও ত্রাণ পাঠানোর গতি বেশ কম।
মরক্কোকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে স্পেন, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, জর্ডন, কাতার, ইরাক, ইরান, ইজ়রায়েল, পোল্যান্ড, আমিরশাহি-সহ আরও অনেকে। আর্থিক সাহায্য ছাড়াও পাঠানো হচ্ছে উদ্ধারকারীদের দল, নিত্যপ্রয়জনীয় সামগ্রী। আরও সাহায্য লাগলে তা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে, আশ্বাস দিয়েছে দেশগুলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy