বাংলাদেশে কবে ভোট? রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবকে সম্ভাব্য সময় জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ইউনূস

চলতি বছর ডিসেম্বর বাংলাদেশে হতে পারে সাধারণ নির্বাচন। নয়তো হবে পরের বছর জুনে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকে বসে এমনটাই জানালেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আরও জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ভোট চলতি বছর না কি পরের বছর হবে, তা ‘সংস্কার প্যাকেজ’ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মতামতের উপর নির্ভর করছে। তারা যদি ‘ছোট সংস্কার প্যাকেজ’-এ রাজি হয়, তবে ডিসেম্বরে ভোট। তারা ‘বড় সংস্কার প্যাকেজ’ চাইলে ভোট হবে পরের বছর জুনে। এমনটাই জানানো হয়েছে ‘প্রথম আলো’-র প্রতিবেদনে।

চার দিনের সফরে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে গিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব গুতেরেস। শুক্রবার সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ইউনূসের সঙ্গে কক্সবাজারে যান তিনি। সেখানে গিয়ে তিনি বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা শিবির ঘুরে দেখেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেন গুতেরেস। সেখানেই বাংলাদেশে কবে ভোট হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয় দু’জনের। আর তা বলতে গিয়েই ইউনূস বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানান গুতেরেসকে। তিনি জানান যে, সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি কমিশন গঠন করেছে। ওই কমিশনগুলির প্রতিবেদন নিয়ে নিজেদের মতামত জমা দিয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলি। ইউনূস জানিয়েছেন, দলগুলি ছয় কমিশনের সুপারিশের সঙ্গে একমত হলে আগামী জুলাই মাসেই সনদে স্বাক্ষর করবে। এর ফলে রাজনীতি, বিচারব্যবস্থা, প্রশাসন, নির্বাচন, দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে সংস্কারের একটি রূপরেখা তৈরি হবে। তার পরেই সে দেশে ভোটের পথ প্রশস্ত হবে। তিনি আরও দাবি করেছেন যে, বাংলাদেশে স্বচ্ছ, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করানোর বিষয়ে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ‘প্রথম আলো’-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার যে পদক্ষেপ করেছে, তাকে সমর্থন জানিয়েছেন গুতেরেস।

গত অগস্টে বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। তার পর সে দেশের শাসনভার হাতে নিয়েছে ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দ্রুত জাতীয় সংসদের নির্বাচন চেয়ে বিএনপি ক্রমশ অন্তর্বর্তী সরকারের উপর চাপ বৃদ্ধি করছে। অন্য দিকে, জামায়াতে নেতৃত্ব চাইছেন এ ক্ষেত্রে ইউনূসকে ‘প্রয়োজনীয় সময়’ দিতে। এ জন্য জামায়াতের থেকে দূরত্ব বেড়েছে খালেদার দলের। রাজনীতি, অর্থনীতি ও প্রশাসনের সার্বিক সংস্কার কর্মসূচির নাম করে ইউনূস এবং অন্তর্বর্তী সরকারে শামিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ভোট পিছিয়ে দিতে চাইছেন বলেও অভিযোগ তুলেছে বিএনপি। এর মাঝেই ইউনূস রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবের কাছে ভোটের সম্ভাব্য সময়ের কথা জানালেন।