Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

বস্টন বিস্ফোরণে দায়ী ছেলেকে নিয়ে গর্বিত মা

তাঁর ২১ বছরের ছেলেকে তখন সবেমাত্র দোষী সাব্যস্ত করেছে মার্কিন আদালত। আইনজীবী ভাবতে শুরু করেছেন, তাঁর মক্কেল তথা বস্টন ম্যারাথনে হামলার অন্যতম চক্রী তরুণ জোখার সারনায়েভকে কী ভাবে প্রায় নিশ্চিত মৃত্যুদণ্ডের হাত থেকে বাঁচানো যায়। জোখারের মা জুবেইদাত অবশ্য তখনও সে সব নিয়ে চিন্তিত নন। বরং তাঁর কণ্ঠে গর্বের সুর।

জুবেইদাত ও জোখার

জুবেইদাত ও জোখার

সংবাদ সংস্থা
বস্টন শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৫০
Share: Save:

তাঁর ২১ বছরের ছেলেকে তখন সবেমাত্র দোষী সাব্যস্ত করেছে মার্কিন আদালত। আইনজীবী ভাবতে শুরু করেছেন, তাঁর মক্কেল তথা বস্টন ম্যারাথনে হামলার অন্যতম চক্রী তরুণ জোখার সারনায়েভকে কী ভাবে প্রায় নিশ্চিত মৃত্যুদণ্ডের হাত থেকে বাঁচানো যায়। জোখারের মা জুবেইদাত অবশ্য তখনও সে সব নিয়ে চিন্তিত নন। বরং তাঁর কণ্ঠে গর্বের সুর। ছেলের কীর্তিকে সমর্থন জানিয়ে জুবেইদাত বলেছেন, ‘‘আমেরিকাই যে আসল সন্ত্রাসবাদী তা সকলে জানে। আমার ছেলে সেরার সেরা।’’ পাশাপাশি জোখারের সমর্থকদেরও উদার কণ্ঠে ধন্যবাদ জানান তিনি।

২০১৩ সালের এপ্রিলে বস্টন ম্যারাথনে জোড়া বিস্ফোরণ ঘটায় মুসলিম মৌলবাদী মতাদর্শে দীক্ষিত দুই ভাই— তামারল্যান সারানায়েভ ও জোখার সারানাইভ। তাতে প্রাণ যায় এক ৮ বছরের শিশু-সহ তিন জনের। আহত হন ২৬৪ জন। তার পরেও অবশ্য ধরা পড়েনি তারা। বরং বিস্ফোরণের কয়েক দিন পর এক পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্র ছিনতাই করতে গিয়ে তাঁকেও হত্যা করে দু’জনে। তার পর তাঁর গাড়ি নিয়ে পালাতে যায়। ঠিক সে সময়ই পুলিশবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয় সারনায়েভ ভাইদের। পুলিশের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় বড় দাদা তামারল্যান। তার উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে পালিয়ে় যায় জোখার। পরে অবশ্য ধরা পড়ে সে। তারই বিচার চলছিল এত দিন। বুধবার রায় শোনায় ম্যাসাচুসেটসের আদালত। জোখারের বিরুদ্ধে যে ৩০টি অভিযোগ উঠেছিল, তার প্রত্যেকটিতেই অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছে সে। এর মধ্যে অন্তত ১৭টি অভিযোগের সাজা মৃত্যু। জোখারকে আদৌ তা দেওয়া হবে না কি প্যারোল বিহীন যাবজ্জীবন দেওয়া হবে, চলতি মাসের শেষের দিকে তার সিদ্ধান্ত নেবেন জুরিরা।

কিন্তু সেই সাজা ঘোষণার আগেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে বস্টন ম্যারাথন হামলায় নিহত ও আহতদের পরিজনেরা। তাদেরই এক জন বললেন, ‘‘ওর সাজা হলে হয়তো আমার ছেলে ফিরে আসবে না। কিন্তু ন্যায়বিচার হল, এটাতেই শান্তি লাগছে।’’ গোটা মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী হিসেবে লড়েছেন এক বঙ্গসন্তান। নাম অলক চক্রবর্তী। জোখারের অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ার পিছনে তাঁর ভূমিকা কেউই অস্বীকার করছেন না। তথ্যপ্রমাণ, ভিডিও সব কিছু পরের পর সাজিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি অলক প্রায় ছবির মতো বুঝিয়ে দিয়েছেন, ধরা পড়ার সময়েও কী ভাবে পোড়খাওয়া জঙ্গির মতো ভাবনাচিন্তা করেছিল জোখার। গোটাটাই যে শুধু তার দাদার ‘অবদান’ নয়, সেটা-ও তুলে ধরেন অলক।

গোড়া থেকেই ছেলের পাশে ছিলেন জুবেইদাত। ছেলের রায় ঘোষণার পরও সেই একই রকম অবিচল প্রত্যয় তাঁর কথায়। রীতিমতো পোড়খাওয়া না হলে এমন সময়ও এই প্রত্যয় আসে কী করে? প্রশ্ন করছেন অনেকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE