হাফিজ সঈদ। — ফাইল চিত্র।
২৬/১১ মুম্বই হামলার মূলচক্রী জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তইবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ মহম্মদ সঈদ কি আসন্ন পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে লড়বেন? বিবিসি উর্দু-র একটি প্রতিবেদন প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। ওই প্রতিবেদনের খবর অনুযায়ী, পাক নির্বাচনে মারকাজি মুসলিম লিগের ‘মুখ’ হিসেবে লড়বেন জেলবন্দি হাফিজ।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন। সেখানে গদির লড়াইয়ে একাধিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নাম লিখিয়েছে নতুন দল মারকাজি মুসলিম লিগ। দলের মুখ কারা হবেন, ভোটের টিকিট কারা পাবেন, সেই নিয়ে অনেক দিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল সে দেশের রাজনৈতিক মহলে। শুধু লস্কর-ই-তইবা নয়, ‘নিষিদ্ধ’ আরও কয়েকটি জঙ্গিগোষ্ঠী, যেমন, জামাত–উদ–দাওয়া এবং মিল্লি মুসলিম লিগের সদস্যদেরও প্রার্থী করছে মারকাজি মুসলিম লিগ।
বিবিসি উর্দু-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাফিজের ছেলে তানহা সঈদও পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ‘চেয়ার’ প্রতীকে মারকাজি মুসলিম লিগের হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। পাশাপাশি হাফিজের জামাই হাফিজ নেক গুজ্জরও প্রার্থী হচ্ছেন আসন্ন নির্বাচনে। যদিও এ ব্যাপারে সে দেশের নির্বাচন কমিশনের তরফে কিছু জানানো হয়নি।
জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত লোকেরা অতীতেও পাকিস্তানে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে মিল্লি মুসলিম লিগের থেকে কয়েক জন লড়তে চেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি কমিশন। মিল্লি মুসলিম লিগের সাত জন সদস্যকে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করেছিল আমেরিকা। সেই তালিকায় থাকা চার জনই এ বারের নির্বাচনে মারকাজি মুসলিম লিগের প্রার্থী হচ্ছেন বলে খবর। তাঁরা হলেন মহম্মদ ফৈয়জ আহমেদ, ফয়সাল নাদিম শেখ, মহম্মদ হ্যারিস দার এবং মুজমাল ইকবাল হাশমি।
যদিও মারকাজি মুসলিম লিগের এক মুখপাত্র হানজালা ঈমাদ বিবিসি উর্দু-তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘আমাদের কোনও প্রার্থীই কোনও বেআইনি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন এবং কোনও নিষিদ্ধ দলে যুক্ত নযন।’’ আমেরিকা অতীতে জামাতের কিছু সদস্যকে ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণা করার বিষয়ে হানজালা বলেন,‘‘প্রমাণ ছাড়া কাউকেই ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণা করার অধিকার কোনও দেশের নেই।’’
সংসদীয় রাজনীতিতে অতীতে জামাত–উদ–দাওয়ার সদস্যরা অংশগ্রহণ করার প্রসঙ্গে পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্যমন্ত্রী মুর্তজা সোলাঙ্গি ‘বিবিসি উর্দু’-কে জানান, ‘‘সাধারণ নির্বাচনের বিষয়ে বড় নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয় নয়। নির্বাচন কমিশনই স্থির করে, কারা ভোটে অংশ নেবেন আর কারা নন।’’
উল্লেখ্য, সন্ত্রাসে আর্থিক মদতের অভিযোগে পাক আদালত ১১ বছরের জেলের সাজা দিলেও হাফিজ এখন কোথায়, তা স্পষ্ট নয়। তিনি এখন পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর গোপন ডেরায় রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রের দাবি। ২০০৮ সালে হাফিজকে বিশ্ব সন্ত্রাসবাদী তকমা দেয় রাষ্ট্রপুঞ্জ। দিন কয়েক আগেই তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে পরে জানা যায়, সেই খবর ভুয়ো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy