ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়ে বিপাকে পাকিস্তান। দেশ জুড়ে ওষুধের সঙ্কট তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কর্তৃপক্ষ। ফলে অবিলম্বে বিকল্পের খোঁজ শুরু হয়ে গিয়েছে। পাকিস্তানে ওষুধের কাঁচামাল অধিকাংশই যায় ভারত থেকে। ফলে ভারতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে পাকিস্তান নিজেদের ওষুধের বাজারে নিজেরাই কোপ মেরেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
পাক সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ়ের রিপোর্টে দাবি, পাকিস্তান সরকারের স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে ওষুধের বিকল্প জোগানদার খুঁজতে শুরু করেছে। ভারত থেকে আমদানি না-করা গেলেও যাতে পাকিস্তানের বাজারে ওষুধের সঙ্কট না-তৈরি হয়, সেই ব্যবস্থা করছেন কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন:
গত বৃহস্পতিবার ভারতের সঙ্গে যাবতীয় বাণিজ্য বন্ধ করার কথা ঘোষণা করে পাক সরকার। রিপোর্টে দাবি, এখনও এই পদক্ষেপের সরাসরি কোনও প্রভাব দেশের বাজারে পড়েনি। এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কিন্তু অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে তোড়জোড় শুরু করেছেন কর্তৃপক্ষ। এর আগে ২০১৯ সালে বালাকোটে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরেও দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল, যার প্রভাব পড়েছিল ভারত-পাক বাণিজ্যে। সেই সময়ে পাকিস্তানে ওষুধের সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। এ বার যাতে সেই পরিস্থিতি তৈরি না-হয়, আগেভাগেই তার ব্যবস্থা করে রাখতে চায় ইসলামাবাদ। ‘ড্রাগ রেগুলেটরি অথরিটি অফ পাকিস্তান’ জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের কোনও প্রভাব এখনও পাকিস্তানের ওষুধের বাজারে পড়তে দেখা যায়নি। তবে যদি সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়, জরুরি ভিত্তিতে বন্দোবস্তের পরিকল্পনা নিয়ে তারা প্রস্তুত। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘২০১৯ সালের সঙ্কটের কথা মাথায় রেখে আমরা এই প্রস্তুতি শুরু করেছি। ওষুধের চাহিদা মেটানোর জন্য আমরা বিকল্পের খোঁজ করছি।’’
ওষুধ, ওষুধ তৈরির কাঁচামাল এবং বিভিন্ন সরঞ্জামের অন্তত ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পাকিস্তানে যায় ভারত থেকে। এ ব্যাপারে তারা ভারতের উপর নির্ভরশীল। এই আমদানির পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চিন, রাশিয়া এবং ইউরোপের একাধিক দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে পাকিস্তান। ওই সমস্ত দেশ থেকে ওষুধ কেনার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে পাকা কথা এখনও কারও সঙ্গে হয়নি। পাক স্বাস্থ্যকর্তারা এ বিষয়ে যথেষ্ট চিন্তিত। এক কর্তার কথায়, ‘‘৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ওষুধ আমরা ভারত থেকে আমদানি করি। ক্যানসার থেরাপি, বিভিন্ন ভ্যাকসিন, সাপের বিষের প্রতিষেধক ভারত থেকে পাকিস্তানের বাজারে আসে।’’ শীঘ্রই বাণিজ্য বন্ধের প্রভাব ওষুধের বাজারে পড়তে চলেছে বলে তাঁর আশঙ্কা।
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ হওয়ায় ওষুধের জোগান কমতে চলেছে পাকিস্তানে। এই সুযোগকে অসাধু ব্যবসায়ীরা কাজে লাগাতে পারেন বলে আশঙ্কা। দুবাই, ইরান বা আফগানিস্তান থেকে চোরাপথে অনুমোদনহীন ওষুধ ছেয়ে যেতে পারে পাকিস্তানের বাজারে। তা ব্যবহার করতে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়বেন। স্বাস্থ্য অধিকর্তাদের ভাবাচ্ছে এই বিষয়টিও।