বাড়িতে ঢুকে মা, কাকিমার সামনে গুলি করে খুন করা হয়েছিল পাকিস্তানের নেটপ্রভাবী সানা ইউসাফকে। প্রথমে এটি ‘সম্মানরক্ষার্থে’ খুন হিসাবে মনে করেছিল পুলিশ। কিন্তু নেপথ্যে এ বার অন্য কারণ উঠে এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ‘সম্মানরক্ষার্থে’ খুন নয়, তাঁর সঙ্গে দেখা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন অভিযুক্ত যুবক উমর হায়াত। কিন্তু বার বার প্রত্যাখ্যাত হন। আর সে কারণেই খুন বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ২৯ মে ১৭ বছরে পা দিয়েছিলেন সানা। পরিবারের সঙ্গে ধুমধাম করে জন্মদিন পালন করেছিলেন। তার পরে ২ জুন তার ইসলামাবাদের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে। সোমবার এই ঘটনায় উমরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি ফয়জ়লাবাদের বাসিন্দা। ইসলামাবাদ থেকে ৩২০ কিলোমিটার দূরে একটি জায়গা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইসলামাবাদের ইনস্পেক্টর জেনারেল (আইজি) সৈয়দ আলি নাসির রিজভি সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘‘ঠান্ডা মাথায় খুন করা সেই রাক্ষস এখন পুলিশের হেফাজতে।’’
কেন সানাকে খুন করেছেন উমর, তা-ও জানিয়েছেন ইসলামাবাদের আইজি। তিনি জানান, নেটপ্রভাবীর সঙ্গে সমাজমাধ্যমে ‘বন্ধুত্ব’ করেছিলেন উমর। তার পরে বার বার সানার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। সাড়া পাননি। এর পরে গত সোমবার সানার বাড়িতে হাজির হন উমর। তার সঙ্গে দেখা করার আর্জি জানান। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকেও দেখা করতে পারেননি। পুলিশ জানিয়েছে, এর পরেই জোর করে সানার বাড়িতে ঢুকে পড়েন উমর। তাকে গুলি করে খুন করেন বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন:
সানার মা থানায় এফআইআর দায়ের করেন। এফআইআর বলছে, সোমবার বিকেল ৫টার সময়ে কিশোরীর বাড়িতে প্রবেশ করে সামনে থেকে তাকে খুন করেন উমর। তার বুকে দু’টি গুলি করেন। সঙ্গে সঙ্গে সানাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসার সময়ে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রমাণ লোপাটের জন্য খুনের পরে সানার মোবাইল নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন উমর। খুনের ঘটনায় ‘অন্য মোড়’ দিতে চেয়েছিলেন। যদিও পুলিশ সেই মোবাইল উদ্ধার করেছে। উমরকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, তিনি দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। গরিব পরিবারের সন্তান। রোজগারও কিছু করেন না উমর। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি জানিয়েছেন, উমর খুনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। খুনের অস্ত্রও মিলেছে।