বাংলাদেশে ভূমিকম্পের কারণে অন্তত ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকায় মৃতের সংখ্যা তিন জন। আহত ৫০-এরও বেশি। সে দেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, রাজধানী ঢাকার কসাইটুলি এলাকায় একটি বহুতলের রেলিং ভূমিকম্পের কারণে ধসে পড়ে। সেই সময় রাস্তা দিয়ে যাঁরা যাচ্ছিলেন, রেলিংয়ের ধ্বংসাবশেষ তাঁদের মাথার উপর পড়ে। মৃতদের মধ্যে এক ডাক্তারি পড়ুয়াও রয়েছেন। এ ছাড়া, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকেও ভূমিকম্পের কারণে রাস্তার ধারের দেওয়াল ধসে ১০ মাসের এক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
কসাইটুলি থেকে আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এবং গাজীপুরের তাজউদ্দীন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই তিন জনের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন সাব-ইনস্পেক্টর আশিস কুমার ঘোষ। ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। পৌঁছেছে দমকল এবং পুলিশ। মৃত ডাক্তারি পড়ুয়ার নাম রাফিউল ইসলাম। তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তবে বাকি দু’জনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, নরসিংদী জেলা হাসপাতালেও আহত অনেকে ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। এক শিশুরও আঘাত লেগেছে।
জানা গিয়েছে, কসাইটুলি এলাকার পাঁচ তলা ভবনে বিপর্যয় ঘটেছে। সেখানে ইটের তৈরি একটি বড় রেলিং ছিল। ভূমিকম্পের ঝাঁকুনিতে তা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। সরে যাওয়ারও সময় পাননি পথচারীরা।
শুক্রবার সকাল ১০টা ৮ মিনিট নাগাদ ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী ঘড়িতে তখন ১০টা ৩৮ মিনিট। আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভের তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.৫। ভারতের ভূতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ জানিয়েছে, কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.৭।
ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল বাংলাদেশেই। নরসিংদী থেকে ১৪ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে মাটি থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে কম্পন উৎপন্ন হয়েছে। এর প্রভাবে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা কেঁপে উঠেছিল। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, হুগলিতেও মৃদু কম্পন অনুভব করা গিয়েছে। কলকাতায় কম্পন টের পেয়ে অনেকে বহুতল থেকে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। সমাজমাধ্যমে তাঁরা ছবি এবং ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন। এখনও পর্যন্ত ভূমিকম্পের ফলে কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গের অন্য কোথাও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।