Advertisement
E-Paper

‘ইয়ার’ আফগানকে ইমানের বার্তা মোদীর

দু’দেশের মধ্যে যোগ সেই পুরাণের কাল থেকে। আফগানিস্তান যেমন মহাভারতের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র গান্ধারীর দেশ, তেমনই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাবুলিওয়ালার। হিন্দুকুশ পেরিয়ে খাইবার পাস দিয়ে গান্ধারী এসেছিলেন। আসতেন কাবুলিওয়ালারাও। দু’দেশের সেই যোগসূত্র আরও দৃঢ় করতে প্রয়োজন বিশ্বাস (ইমান)। শুক্রবার কাবুলের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে সে কথাই মনে করিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:১৯
জঞ্জীর

জঞ্জীর

দু’দেশের মধ্যে যোগ সেই পুরাণের কাল থেকে। আফগানিস্তান যেমন মহাভারতের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র গান্ধারীর দেশ, তেমনই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাবুলিওয়ালার। হিন্দুকুশ পেরিয়ে খাইবার পাস দিয়ে গান্ধারী এসেছিলেন। আসতেন কাবুলিওয়ালারাও। দু’দেশের সেই যোগসূত্র আরও দৃঢ় করতে প্রয়োজন বিশ্বাস (ইমান)। শুক্রবার কাবুলের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে সে কথাই মনে করিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নতুন পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধনের পরে তার মঞ্চ থেকে শোনালেন ‘জঞ্জীর’ সিনেমার সেই বিখ্যাত গানের এক কলি, ‘ইয়ারি হ্যায় ইমান মেরা, ইয়ার মেরি জিন্দেগি’।

মোদীর মুখেই এ দিন শোনা গিয়েছে পুরাণ থেকে ইতিহাসের দীর্ঘ কাহিনি। ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে বন্ধুত্বের ঐতিহ্য তুলে ধরতে গিয়ে গান্ধারীর কথা বলেছেন, বলেছেন বৌদ্ধ সংস্কৃতির কথা, মৌর্য সাম্রাজ্য এবং শেরশাহ সুরির কথা। বলেছেন কাবুলিওয়ালাদের নিয়মিত ভারতে যাতায়াতের কথা। পরের পর সংঘর্ষ, তালিবান জমানা এবং তার পরে ফের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় সেই বন্ধুত্বের পথ বিপদসঙ্কুল হয়ে গিয়েছে। মোদী বলেছেন, ‘পথ আবার সহজ করতে হবে, যাতে কাবুলিওয়ালারা সহজে ভারতে এসে ভারতীয়দের হৃদয় জিততে পারেন।’

এই সেতু নতুন করে গড়তে যে পারস্পরিক বিশ্বাসের প্রয়োজন, সে প্রসঙ্গেই মোদীর মুখে শোনা যায় জঞ্জীরের গান। ১৯৭৩ সালে প্রকাশ মেহরার পরিচালনায় সেই ছবিই অমিতাভকে প্রথম বড় সাফল্যের মুখ দেখিয়েছিল। সেখানে আফগান-পাঠান শের খান (প্রাণ)-এর মুখে ছিল গানটি। মোদী মনে করিয়ে দিলেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে হাজার হাজার বছরের পুরনো সম্পর্ককে শের খানের মতোই ভারত ইমানের সঙ্গে দেখে। বস্তুত, যে পার্লামেন্ট ভবনের উদ্বোধন এ দিন করলেন মোদী, তা গড়ে দিয়েছে ভারতই। অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিনে উদ্বোধন করা এই ভবনের একটি ব্লকের নামও দেওয়া হয়েছে ‘অটল ব্লক’।

কাবুলিওয়ালার দৃশ্য।

দিল্লির কূটনীতিকদের মতে, ঘাড়ের উপরে পাকিস্তানকে সামলাতে এবং তালিবানের সঙ্গে লড়াই জারি রাখতে আফগানিস্তানের বর্তমান প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। হামিদ কারজাইয়ের আমলে সেই কাজটাই বারবার করার চেষ্টা করেছে দিল্লি। মোদীর এ বারের সফরের সময়ে কাবুলকে সামরিক কপ্টার দিয়েছে দিল্লি।

এ দিন কাবুল থেকেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান মোদী। ফেরার পথে আচমকা নামেন লাহৌরে। গ্রহণ করেন শরিফের আতিথ্য। কিন্তু আফগান পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে পরোক্ষে কড়া বার্তা দিয়েছেন পাক সেনা ও আইএসআইকে। তাদের মদতেই যে আফগানিস্তানে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাস লক্ষ্য করে একাধিক হামলা হয়েছে, সেই বিষয়ে নিশ্চিত দিল্লির গোয়েন্দারা। প্রধানমন্ত্রী সাফ বলেছ‌েন, ‘‘কেউ কেউ চেয়েছিল আমরা এখানে না আসি। তাও আমরা এসেছি। কারণ, আফগানিস্তানের মানুষ আমাদের বন্ধুত্ব নিয়ে কখনও সন্দেহ প্রকাশ করেননি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সীমান্তের ওপার থেকে সন্ত্রাস ছড়ানো যখন বন্ধ হবে তখনই আফগানিস্তান সাফল্যের পথে হাঁটতে পারবে। সন্ত্রাস দিয়ে আফগানিস্তানের ভবিষ্যতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলতে পারে না।’’ প্রধানমন্ত্রীর মতে, কোনও সময়সীমার কথা মাথায় না রেখেই আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়াতে হবে। কারণ, উগ্রপন্থা নতুন চেহারায় এসে উপস্থিত হয়েছে। পাক সেনার

মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলির পাশাপাশি তিনি আইএসের কথাও বলতে চেয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। বোঝাতে চেয়েছেন যত চেষ্টাই হোক, ভারত ও আফগানিস্তানের ‘ইয়ারি’ ভাঙা সম্ভব নয়।

afghanistan narendra modi friendship
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy