৯০ বছরের অসহায় বৃদ্ধা মা। ভাড়া করা গুন্ডা দিয়ে তাঁকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে গেল ছেলে। এ আমাদের ঘরেরই খবর। তা ঘরেই হোক বা পরের দেশে, সন্তান থেকেও নেই এমন অসহায় বৃদ্ধবৃদ্ধার সংখ্যা বিশ্বে নেহাত কম নয়। ইতালির রোমে তেমনই এক দম্পতি মাইকেল আর জুলি। মাইকেলের বয়স ৯৪। জুলির ৮৯। সন্তানরা আছে যে যার মতো। বাবা, মার দিকে ফিরেও তাকায় না। কিন্তু এক দিন হঠাত্ এই চরম নিঃসঙ্গ জীবনে ‘সন্তান’ হয়ে দেখা দিলেন চার ট্রাফিক পুলিশ।
৭০ বছর আগে বিযে হয়েছিল জুলি-মাইকেলের। ছেলেমেয়ে থেকেও নেই। আত্মীয়-স্বজনরাও তেমন খোঁজ খবর রাখেন না। তাই টেলিভিশনই এখন নিঃসঙ্গ দম্পতির একমাত্র বন্ধু। প্রতি দিনের মতো গত ১৬ অগস্ট সন্ধেতেও বাড়িতে বসে টিভি প্রোগ্রাম দেখছিলেন তাঁরা। হঠাৎই টিভির পর্দায় একটি ইমোশনাল দৃশ্য দেখে স্থির থাকতে পারেননি জুলি। আবেগপ্রবণ হয়ে কেঁদে ফেলেন। একাকিত্বের যন্ত্রণায় স্ত্রীর সেই কান্না দেখে কেঁদে ফেলেন মাইকেলও। বৃদ্ধ দম্পতির সেই কান্না কানে যায় রাস্তায় টহলরত পুলিশের। তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এই আশঙ্কায় সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় অ্যাম্বুলেন্সে। কিন্তু চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন শারীরিকভাবে সুস্থই আছেন জুলি আর মাইকেল।
ঘটনা এখানেই শেষ হতে পারত। কিন্তু নিঃসঙ্গ দম্পতিকে এই অবস্থায় ফেলে যেতে মন চায়নি অ্যান্ড্রু, আলেক্সান্ডার, এরনেস্টো এবং মির্কো’র। নীল উর্দির পেশাদারিত্বের কথা ততক্ষণে ভুলে গিয়েছেন তাঁরা। হয়ে উঠেছেন জুলি-মাইকেলের চার ‘ছেলে’। এরপরেই বৃদ্ধ ‘বাবা-মা’কে নিজের হাতে রান্না করে খাওয়াতে কিচেনের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেন তাঁরা। রান্না করে ফেলেন জুলি-মাইকেলের ফেভারিট ডিশ স্প্যাঘেটি উইথ চিজ অ্যান্ড বাটার। যা খেয়ে যারপরনাই খুশি দম্পতি। চার ‘ছেলে’র সঙ্গে দুর্দান্ত একটা সন্ধে কাটানোর পর রাতে জুলি ফেসবুকে লেখেন, ‘নীল উর্দির ওই চারটে ছেলের পক্ষে এই কাজটা খুব সহজ ছিল না। তবে অনেকদিন পর একাকী দুটো আত্মা শান্তি পেল।’’
দেখুন সেই ভিডিও
আরও পড়ুন: রাশিয়ার সবচেয়ে বড় হিরে খনি নিয়ে কিছু অবাক করা তথ্য