Advertisement
E-Paper

গভীর হচ্ছে রাজনৈতিক সঙ্কট, কাঠমান্ডুর হাওয়া বুঝতে তৎপর বেজিং

নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির ভাঙনের মধ্যে পরিস্থিতি বুঝতে তৎপর হয়ে উঠেছে বেজিং।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:২১
রাজনৈতিক সঙ্কট ক্রমশ গভীর হচ্ছে নেপালে। ছবি রয়টার্স।

রাজনৈতিক সঙ্কট ক্রমশ গভীর হচ্ছে নেপালে। ছবি রয়টার্স।

নেপালে গভীর রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে হাওয়া বুঝতে তৎপর হয়ে উঠেছে চিন। শাসক দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির ভাঙনের পরিস্থিতির মধ্যে গত কাল বিকেলে চিনের রাষ্ট্রদূত হোউ ইয়ানছি দেখা করেছেন প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারীর সঙ্গে। পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তী ভোটের দিকে দেশকে ঠেলে দিয়েছেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। তবে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির দুই শীর্ষস্থানীয় নেতা পুষ্পকমল দহল (প্রচণ্ড) ও মাধবকুমার নেপাল এই পদক্ষেপকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দেওয়ায় এবং বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে পৌঁছে যাওয়ায় ভোট নিয়েও চরম অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।

নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির দুই গোষ্ঠীই এখন দলের কর্তৃত্ব দাবি করছে। ওলির জায়গায় প্রচণ্ডকে আজ সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত করা হয়েছে। গত কালই প্রচণ্ডের গোষ্ঠী ওলিকে দলের চেয়ারম্যানের পদ থেকে হটিয়ে দিয়েছে। সেই পদে বসানো হয়েছে মাধবকুমার নেপালকে। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার জন্য ওলির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির এই গোষ্ঠী। প্রচণ্ড আজ বলেছেন, নতুন সরকার গড়ে তোলাই তাঁর প্রথম লক্ষ্য। এ নিয়ে সব দলের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। প্রচণ্ড গোষ্ঠী দাবি করেছে, কেন্দ্রীয় কমিটির ৪৪৬ জন সদস্যের মধ্যে ৩১৩ জনই তাঁদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। অন্য দিকে, গত কালই ওলি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ডাকেন। তিনি জানিয়েছেন, ১১৯৯ জনের একটি নতুন কমিটি পরের বছর দলের সম্মেলন করতে চলেছে।

প্রধানমন্ত্রী ওলির সুপারিশে গত রবিবার নেপালের পার্লামেন্ট ভেঙে ভোটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভাণ্ডারী। তবে সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ১২টি আবেদন জমা পড়েছে। প্রধান বিচারপতি চোলেন্দ্র এসজেবি রাণা আজ মামলাগুলিকে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে পাঠিয়েছেন। শুক্রবার থেকে এর শুনানি শুরু হবে।

সুপ্রিম কোর্টে মামলা থাকায় ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্ট হয়েছে। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পরেই ওলি তিন নির্বাচন কমিশনারকে ডেকে ভোটের প্রস্তুতি শুরু করতে বলেছিলেন। ৩০ এপ্রিল ও ১০ মে ভোটের দিন ঘোষণা হলেও বিভিন্ন জটিলতার কথা বলতে শুরু করেছেন মুখ্যনির্বাচন কমিশনার দীনেশ থাপালিয়া। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তার উপরেই ভোটের ভবিষ্যত নির্ভর করবে। নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির প্রচণ্ড গোষ্ঠী এবং অন্য অনেক বিরোধী দল ওলির পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছে। তারা ভোটে অংশগ্রহণ করবে কি না, তা-ও অনিশ্চিত। এই পরিস্থিতিতে প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার অযোধিপ্রসাদ যাদব বলেছেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত অধিকাংশ দলই নতুন করে ভোটের বিরুদ্ধে। ভোট করতে গেলে নেপালে অতীতের মতো রাজনৈতিক সর্বসম্মতি জরুরি।’’ ভোটে যাওয়ার আগে করোনা পরিস্থিতি ও আর্থিক সঙ্কটের বিষয়টিও রাজনৈতিক-প্রশাসনিক স্তরে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

এত দিন ধরে ওলির প্রশাসনের সঙ্গে সখ্য রেখে গিয়েছে বেজিং। ওলির ভারত-বিরোধী বেশ কিছু পদক্ষেপের পিছনে চিনের হাত দেখেছিলেন অনেকেই। এ বার নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির ভাঙনের মধ্যে পরিস্থিতি বুঝতে তৎপর হয়ে উঠেছে বেজিং।

Nepal Pushpa Kamal Dahal KP Sharma Oli
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy