Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Harry

হ্যারিদের সিদ্ধান্তে ‘ব্যথিত’ রানি

বাকিংহাম প্রাসাদ সূত্রের খবর, হ্যারি-মেগানের এই ঘোষণায় ‘ব্যথিত’ রানি।

বাঁ দিকের অংশ ফাঁকা। সরিয়ে নেওয়া হয়েছে হ্যারিদের মূর্তি। ইনসেটে হ্যারি-মেগান-আর্চি। সোশ্যাল মিডিয়া

বাঁ দিকের অংশ ফাঁকা। সরিয়ে নেওয়া হয়েছে হ্যারিদের মূর্তি। ইনসেটে হ্যারি-মেগান-আর্চি। সোশ্যাল মিডিয়া

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২০ ১০:০০
Share: Save:

ব্রিটেনের রয়্যাল পরিবারের ‘সিনিয়র’ সদস্যের খেতাব ছেড়ে দিচ্ছেন তাঁরা, এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মাদাম তুসোর ‘রাজপরিবার’ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল রাজকুমার হ্যারি ও মেগানের মোম-মূর্তি। সেই মূর্তি বসানো হবে সংগ্রহশালার অন্যত্র। মাদাম তুসোর এই সিদ্ধান্ত বলে দিচ্ছে, হ্যারি-মেগান সম্পর্কে এখন কী ভাবছে ব্রিটিশ রাজপরিবার। কী ভাবছে গোটা দেশ।

গত কাল সন্ধে সাড়ে ছ’টায় মেগান ও হ্যারি তাঁদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ঘোষণা করেন, ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য বা ‘সিনিয়র রয়্যালস’ এই খেতাব আর ব্যবহার করবেন না তাঁরা। তবে রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। এই বিবৃতিতেই তাঁরা জানিয়েছেন, এ বার থেকে ব্রিটেন এবং উত্তর আমেরিকা (আমেরিকা ও কানাডা), দু’জায়গাতেই ভাগ ভাগ করে থাকবেন তাঁরা তিন জন। মেগানের মা ডোরিয়া র‌্যাগল্যান্ড থাকেন কানাডায়। মেগানদের কথায়, ‘‘দু’টি ভৌগোলিক অবস্থানে আমাদের ছেলে আর্চি বেড়ে উঠলে একই সঙ্গে ব্রিটিশ রাজপরিবারের ঐতিহ্য এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাপন, এই দু’টির সম্পর্কেই তার ধারণা জন্মাবে।’’ হ্যারিরা আরও জানান, রাজপরিবারের আর্থিক সুযোগসুবিধা ছেড়ে সাধারণ মানুষের মতো উপার্জনের চেষ্টা চালাবেন তাঁরা। কী ভাবে, তা অবশ্য ব্যাখ্যা করেননি দম্পতি। জানা যায়নি, এক সময়ের জনপ্রিয় মার্কিন অভিনেত্রী মেগান ফের টিভির জগতে ফেরার কথা ভাবছেন কি না।

বাকিংহাম প্রাসাদ সূত্রের খবর, হ্যারি-মেগানের এই ঘোষণায় ‘ব্যথিত’ রানি। রানি বা বাবা যুবরাজ চার্লসের সঙ্গে আলোচনা না করেই যে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হ্যারিরা, তাতেও ‘হতাশ’ হয়েছে রাজপরিবার। হ্যারিদের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের ঠিক দেড় ঘণ্টা পরে বাকিংহামের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়, ‘‘ডিউক আর ডাচেস অব সাসেক্স যে অন্য ভাবে জীবন কাটাতে চাইছেন, সে সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল। তাঁদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। তবে এটি একটি অত্যন্ত জটিল বিষয়।’’

কয়েক মাস ধরেই রাজপরিবারের অন্যদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে হ্যারিদের। প্রথা ভেঙে বড়দিনের ছুটি কাটাতে তাঁরা কানাডায় চলে গিয়েছিলেন। অন্য দিকে, রানির বড়দিনের শুভেচ্ছো-বার্তার ভিডিয়োয় যাঁদের ছবি দেখা গিয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ছিলেন না মেগানরা। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে হ্যারি জানান, দাদা উইলিয়ামের সঙ্গেও তাঁর বিশেষ সুসম্পর্ক নেই। তা ছাড়া, তাঁর সম্পর্কে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের লাগাতার তির্যক মন্তব্য ও সমালোচনা নিয়ে খুবই বিচলিত ছিলেন মেগান।

ব্রিটিশ সিংহাসনের ষষ্ঠ দাবিদার হ্যারির এই সিদ্ধান্ত অনেককেই ৮৪ বছর আগে রাজা অষ্টম এডওয়ার্ডের সিংহাসন ছাড়ার কথা মনে পড়িয়ে দিচ্ছে। দু’বারের বিবাহবিচ্ছিন্না মার্কিন নাগরিক ওয়্যালিস সিম্পসনকে বিয়ে করার জন্য ১৯৩৬ সালে সিংহাসন ত্যাগ করেন রানি ভিক্টোরিয়ার প্রপৌত্র। রাজা হন বর্তমান রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের বাবা ষষ্ঠ জর্জ। মেগানও মার্কিন নাগরিক এবং বিবাহবিচ্ছিন্না। ব্রিটিশ রাজকীয় আইন এবং চার্চ অব ইংল্যান্ডের আইকানুন এই এক শতকে কিছুটা পাল্টালেও রাজপরিবারের কট্টর মানসিকতার আদতে যে বিশেষ পরিবর্তন হয়নি, তা বুঝিয়ে দিচ্ছে হ্যারিদের এই সিদ্ধান্ত।

তবে এই সিদ্ধান্তের ফলে হ্যারি আর সিংহাসনের দাবিদার থাকবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Elizabeth II Prince Harry Meghan Markle
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE