Advertisement
E-Paper

রেমব্রান্টের ‘রাতপাহারা’র সংস্কার কাচের আড়ালে

১৯৭৫ সালে ছুরি হাতে এক জন ‘দ্য নাইট ওয়াচ’-এ হামলা চালিয়েছিল। মিউজিয়ামের রক্ষীকে কাবু করে সে চলে গিয়েছিল রেমব্রান্টের সৃষ্টির কাছাকাছি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৯ ০১:১১
জোরকদমে: কাচের দেওয়ালের পিছনেই চলছে ছবির সংস্কার। ছবি: রয়টার্স।

জোরকদমে: কাচের দেওয়ালের পিছনেই চলছে ছবির সংস্কার। ছবি: রয়টার্স।

বড় মাপের সংস্কার শুরু হয়েছে রেমব্রান্ট-এর ‘দ্য নাইট ওয়াচ’ (‘রাতপাহারা’) চিত্রটির। গত কাল থেকে শুরু হওয়া এই সংস্কার-পর্ব চলবে এক মাস ধরে। অ্যামস্টারডামের রাইকসমুসিয়ম-এ বিশেষ ভাবে তৈরি কাচের একটি চেম্বারে রাখা হয়েছে ডাচ শিল্পীর ১৬৪২ সালের বিরাট এই সৃষ্টি। সংস্কারের কাজ যাতে বাইরে থেকে দেখা যায়, তার জন্যই এই পদ্ধতিতে গোটা প্রক্রিয়া এগোনোর কথা ভাবা হয়েছে। শিল্প-অনুরাগীরা অনলাইনেও এই ছবি সংস্কারের কাজ দেখতে পাবেন। তাই সংস্কার কাজের নাম হয়েছে, ‘অপারেশন নাইট ওয়াচ।’

মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ বলেছেন, ‘‘এ ছবি সকলের। প্রতি বছর আড়াই লক্ষেরও বেশি মানুষ এ ছবি দেখতে আসেন। নেদারল্যান্ডসের তো বটেই, এ ছবি গোটা বিশ্বের। তাই আমাদের মনে হয়েছে, সব মানুষ দেখুন, ছবিতে কী কী কাজ হচ্ছে।’’ ৪৪ বছর আগে শেষ বার সংস্কার হয়েছিল। সে বার ছুরিতে ছিন্ন হয়েছিল ‘দ্য নাইট ওয়াচ।’

রেমব্রান্টের অন্যতম সেরা সৃষ্টি হিসেবে খ্যাত ‘দ্য নাইট ওয়াচ।’ সাড়ে ১২ ফুট লম্বা এবং ১৫ ফুট চওড়া ছবিটির ওজন ৩৩৭ কিলোগ্রাম। শুধু বিরাট মাপ নয়, ছবির নাটকীয় আলোর খেলা এবং চলনও সমালোচকদের মধ্যে দারুণ সমাদৃত। কিন্তু রাইকসমুসিয়ম-এর বিশেষজ্ঞদের ভাবাচ্ছে অন্য একটি বিষয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলাচ্ছে ছবির কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য। উদাহরণ দিয়ে তাঁরা যেমন বলছেন, ছবির ডান দিকে যে ছোট্ট কুকুরটি রয়েছে, সেটির চেহারা ক্রমশ ফিকে হচ্ছে। মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কয়েক কোটি ইউরো-নির্ভর গবেষণা এবং সংস্কার প্রকল্পের মাধ্যমে কর্মীরা বুঝতে পারবেন ছবিটি এখন ঠিক কী রকম অবস্থায় রয়েছে।

এক বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ছবি পুনরুদ্ধারে বিস্তারিত গবেষণা প্রয়োজন যা থেকে বোঝা যাবে, ‘দ্য নাইট ওয়াচ’-এর ঠিক কতটা শুশ্রূষা প্রয়োজন। ‘ইমেজিং টেকনিক’, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আলোকচিত্র এবং অত্যাধুনিক কম্পিউটার বিশ্লেষণের মাধ্যমে সেটা বোঝা যাবে। তা ছাড়া আরও বেশ কিছু পদ্ধতির সাহায্যে এই সৃষ্টির পুরোটা খুঁটিয়ে জানা যাবে বলে আশা মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের। শুধু আঁকা অংশ নয়, ছবির প্রতিটি স্তর— ভারনিশ থেকে ক্যানভাস সব কিছুই নিখুঁত ভাবে দেখা হবে। মিউজিয়ামের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘রেমব্রান্ট কী ভাবে এই ছবি এঁকেছিলেন, জানি না। বলতে পারেন, এ বার আমরা শিল্পীর হেঁশেলে ঢুকতে চলেছি।’’

১৯৭৫ সালে ছুরি হাতে এক জন ‘দ্য নাইট ওয়াচ’-এ হামলা চালিয়েছিল। মিউজিয়ামের রক্ষীকে কাবু করে সে চলে গিয়েছিল রেমব্রান্টের সৃষ্টির কাছাকাছি। ছুরি দিয়ে চিরে দিয়েছিল ‘দ্য নাইট ওয়াচ।’ পরে সে জানিয়েছিল, ঈশ্বরের জন্য সে ওই কাজ করেছে। তার আগে ১৯১১ সালেও ছুরি-হামলার শিকার হয়েছে রেমব্রান্টের এই ছবি। ১৯৯০ সালে আবার রাসায়নিক ছেটানো হয়েছিল এ ছবির উপরে। তবে এই দুই ঘটনায় ছবিতে তেমন বড়সড় কোনও ক্ষতি হয়নি বলে দাবি মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের। এবং দু’ক্ষেত্রেই সহজে মেরামতিও করে দেওয়া গিয়েছিল।

১৬৬৯ সালে মারা যান রেমব্রান্ট। এ বছর শিল্পীর ৩৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী মনে রেখে রাইকসমুসিয়ম-এ পালিত হচ্ছে ‘ইয়ার অব রেমব্রান্ট।’ তার অঙ্গ হিসেবেই শুরু হয়েছে সংস্কারের কাজ।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

Rembrandt Museum
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy