Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Africa

Africa Corona: টিকাহীন আফ্রিকায় কোভিডও কম!

কিছু বিশেষজ্ঞের বক্তব্য, আফ্রিকায় অল্পবয়সিদের সংখ্যা বেশি। গড়ে ২০ বছর।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
হারারে শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২১ ০৬:১০
Share: Save:

মজবুত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নেই। চিকিৎসক-নার্স কম। টিকার জোগান নেই। কোভিড অতিমারিতে আফ্রিকার গরিব দেশগুলোর কী হবে, তাই নিয়ে গোড়া থেকেই চিন্তায় ছিল বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু আফ্রিকার বাস্তব পরিস্থিতি অন্য কথাই বলছে। রহস্যজনক ভাবে টিকা, চিকিৎসার বর্মহীন আফ্রিকায় সংক্রমণের প্রকোপ বেশ কম। আরওই কম মৃত্যু। এ দেখে ধন্দে বিশেষজ্ঞেরা।

জিম্বাবোয়ের হারারের ব্যস্ত বাজার এলাকা। পকেটে মাস্ক নিয়ে ঘুরছিলেন ন্যাশা নদৌউ। তাঁর আশপাশের সকলেরই হয়তো পকেটে মাস্ক পাওয়া যাবে, কিন্তু মুখে কিছু নেই। কেউ ফল-সব্জি কিনতে এসেছেন, কেউ বেচতে এসেছেন। নদৌউ বলেন, ‘‘কোভিড-১৯ চলে গিয়েছে। কবে শেষ বার কোভিডে মারা যাওয়ার খবর শুনেছেন এখানে?’’ তা হলে সঙ্গে মাস্ক রেখেছেন কেন? জবাব তৈরি নদৌউয়ের। বললেন, ‘‘ও তো পকেট বাঁচাতে। পুলিশ ধরলে মাস্ক না থাকলেই ঘুষ নেবে।’’ এই সপ্তাহে গোটা জিম্বাবোয়েতে নতুন করে করোনা সংক্রমণের খবর মিলেছে মাত্র ৩৩টি। মৃত্যুর কোনও খবর নেই। গোটা আফ্রিকা মহাদেশেই কোভিড সংক্রমণ কমেছে অনেকটাই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-ও জানিয়েছে, জুলাই মাস থেকে করোনা সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে এই মহাদেশে। তবে কোনও দিনই ঘরে-ঘরে কোভিড দেখা যায়নি।

গত বছর যখন করোনা-আতঙ্ক শুরু হয়, স্বাস্থ্য বিশারদেরা আফ্রিকা নিয়ে প্রবল চিন্তায় পড়েন। আশঙ্কা করেন লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা পড়বেন এই মহাদেশে। এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট করে জানা নেই, কত জন সংক্রমিত হয়েছেন, কত জন মারা গিয়েছেন আফ্রিকায়। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, আফ্রিকার দেশগুলোতে যথাযথ পর্যবেক্ষণ-ব্যবস্থা নেই, সরকারি নজরদারি নেই। ফলে বাস্তব পরিস্থিতি কী, তা কেউ জানে না। তবে সংক্রমণ বা মৃত্যু মারাত্মক বাড়লে, আশপাশে চোখ রাখলেই বোঝা যায়। বিশেষজ্ঞেরা স্বীকার করেছেন, এখন কোভিড সংক্রমণ আরওই কমেছে। কিন্তু যে কোনও সময়ে পরিস্থিতি ঘুরে যেতে পারে বলে সতর্কবার্তা তাঁদের।

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ওয়াফা এল-সাদর বলেন, ‘‘আফ্রিকা নিয়ে বিজ্ঞানীরা ধন্দে। রহস্যজনক ব্যাপার। আফ্রিকার কাছে টিকা নেই। কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিকাঠামো নেই। কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকায় এ সবই রয়েছে। অথচ ওদের থেকে আফ্রিকার অবস্থা অনেক ভাল।’’ গড়ে ৬ শতাংশেরও কম টিকাকরণ হয়েছে আফ্রিকায়। সেখানে তা ইউরোপ-আমেরিকায় ৭০-৮০ শতাংশ। কিন্তু গোটা ইউরোপের হালই ফের খারাপ। বিশেষ করে জার্মানি, অস্ট্রিয়া, রাশিয়ার পরিস্থিতি বেশ জটিল।

কিছু বিশেষজ্ঞের বক্তব্য, আফ্রিকায় অল্পবয়সিদের সংখ্যা বেশি। গড়ে ২০ বছর। পশ্চিম ইউরোপের তরুণ প্রজন্মের গড় বয়স ৪৩। তা ছাড়া আফ্রিকায় আধুনিক জীবনযাপন কম। তাঁরা বাড়ির বাইরে খোলা আকাশের নীচে বেশি সময় কাটান, বদ্ধ জায়গায় থাকেন কম। নিম্ন সংক্রমণ হারের পিছনে আরও কোনও কারণ থাকতে পারে কি না, (যেমন জেনেটিক) তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকে আবার বলছেন, আফ্রিকায় ম্যালেরিয়া ও ইবোলার প্রকোপ বেশি। এই রোগে যাঁরা আগে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের কোভিড কাবু করতে পারছে না। আর এক দল প্রশাসনের কৃতিত্বও দেখছে। তাদের বক্তব্য, মালি-র মতো দেশও অতিমারির আঁচ পেতেই সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল। ফলে বাইরে থেকে ভাইরাস প্রবেশ করেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Africa Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE