Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জলমগ্ন ফ্লরিডায় ফিরছেন বাসিন্দারা

তাণ্ডব শেষ। ফ্লরিডা এখন শান্ত। যদিও চারপাশে শুধুই হাহাকার। ইরমার ভয়ে যাঁরা ঘর ছেড়েছিলেন, ফিরে এসেছেন তাঁদের অনেকেই। কিন্তু মাথার উপর ছাদটাই যে আর নেই! নর্থ ক্যারোলাইনার জ্যাকসনভিল, সাউথ ক্যারোলাইনার চার্লসটন থেকে জর্জিয়া উপকূল জলের তলায়।

বিধ্বস্ত: ইরমার দাপটে সমুদ্রগর্ভে বাড়ি। ফ্লরিডার পন্টে ভেডরা সৈকতে। ছবি: এপি।

বিধ্বস্ত: ইরমার দাপটে সমুদ্রগর্ভে বাড়ি। ফ্লরিডার পন্টে ভেডরা সৈকতে। ছবি: এপি।

সংবাদ সংস্থা
ফ্লরিডা সিটি শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৪৬
Share: Save:

রাস্তায় উপড়ে পড়ে সার দেওয়া নারকেল গাছ। বাড়ির চাল, ইট-কাঠ-পাথর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পথে। কোথাও আবার সমুদ্রের ভিতরে ঢুকে গিয়েছে আস্ত একটা বাড়ি। রঙ দেখে শুধু বোঝা যায় মাসও ঘোরেনি নতুন গাড়িটার, ইরমার রোষে এখন ভগ্নপ্রায় দশা।

তাণ্ডব শেষ। ফ্লরিডা এখন শান্ত। যদিও চারপাশে শুধুই হাহাকার। ইরমার ভয়ে যাঁরা ঘর ছেড়েছিলেন, ফিরে এসেছেন তাঁদের অনেকেই। কিন্তু মাথার উপর ছাদটাই যে আর নেই! নর্থ ক্যারোলাইনার জ্যাকসনভিল, সাউথ ক্যারোলাইনার চার্লসটন থেকে জর্জিয়া উপকূল জলের তলায়। তবে প্রশাসনের কাছে এটাই স্বস্তির, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার তুলনায় ফ্লোরিডার ক্ষতি কিছুই না। সেখানে ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুধু কিউবাতেই মারা গিয়েছেন ১০ জন। তবে নিধনযজ্ঞ না চালালেও ইরমার ভয়াল তাণ্ডবে ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে অতলান্তিক ও মেক্সিকো উপসাগরে ঘেরা ছবির মতো সুন্দর ফ্লরিডা। বিশেষ করে ফ্লরিডার কিজ দ্বীপপুঞ্জ।

সমুদ্রের মধ্যে হুকের মতো ঢুকে আসা এই ছোট ছোট দ্বীপগুলোতে বছরভর পর্যটকদের আনাগোনা। সমুদ্রের উপরে বিশেষ ভাবে তৈরি কিজ-এর রিসর্টগুলো এখন প্রায় সমুদ্রগর্ভে। একটি বেসরকারি সংগঠনের দাবি, ফ্লরিডায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দুই থেকে চার হাজার
কোটি ডলার।

এ অবস্থায় কিজ-এর বাসিন্দাদের এখনও ঘরে ফেরার অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। তাই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। মনরো কাউন্টির দমকল কর্তা জানালেন, মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে কিজ-এর একমাত্র সংযোগকারী রাস্তাটি খুলে দেওয়া হবে শীঘ্রই। তবে শুধু ‘কি লার্গো’, ‘ট্যাভেরনিয়ের’, ‘ইসলামোরাডা’ ও কিজ দ্বীপপুঞ্জের উপরের অংশের বাসিন্দা ও রিসর্ট মালিকদের ঢুকতে দেওয়া হবে। কিন্তু কিজ-এর বাকি অংশে কবে ঢোকা যাবে, প্রশাসন জানাতে পারেনি।

মায়ামি নিয়ে যতটা ভয়ে ছিল প্রশাসন, ততটা ঝঞ্ঝা পোহাতে হয়নি সৈকত-শহরটিকে। কিন্তু এখন বন্যা-বিধ্বস্ত দশা। ‘‘খুব কান্না পাচ্ছে, কিন্তু মেনে তো নিতেই হবে,’’ বললেন ৬৭ বছরের বৃদ্ধা মেলিডা হারন্যানডেজ। কাছেই একটি গির্জায় আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। ফিরে দেখেন গাছ পড়ে বাড়ি পুরো দু’খণ্ড হয়ে গিয়েছে।

উত্তরপূর্ব ফ্লরিডার জ্যাকসনভিলে বন্যার ছবি ভয়াবহ। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে সেন্ট জন্স নদী। ১৮৪৬ সালের পরে নদীর এমন রূপ দেখেনি কেউ, জানাচ্ছে পুলিশ। যাঁরা ইরমা উপেক্ষা করে বাড়িতে ছিলেন, তাঁদের এখন কোমর-জল থেকে উদ্ধার করছে প্রশাসন। জ্যাকসনভিলের সরকারি ওয়েবসাইটে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে বাসিন্দাদের, ‘‘বাড়িতে থাকুন, বেরোবেন না। নিচু এলাকায় থাকলে উপরের দিকে যান।’’ আরও জানানো হয়েছে, জলের তলায় গোটা শহর। বন্যার জলে সাপ, অ্যালিগেটর চলে আসতে পারে, সাবধান!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE