Advertisement
১১ মে ২০২৪
ফোনে কথা ট্রাম্প-পুতিনের

সিরিয়ায় রুশ বিমান হানা

ঘণ্টা খানেকও পেরোয়নি সেই ফোনের। তার পরেই আজ সিরিয়ায় বিমানহানা চালাল রাশিয়া। লক্ষ্য, জঙ্গিদের কবলে থাকা ইদলিব ও হোমস প্রদেশকে আইএস-মুক্ত করা।

সংবাদ সংস্থা
বেইরুট শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:০৩
Share: Save:

ঘণ্টা খানেকও পেরোয়নি সেই ফোনের। তার পরেই আজ সিরিয়ায় বিমানহানা চালাল রাশিয়া। লক্ষ্য, জঙ্গিদের কবলে থাকা ইদলিব ও হোমস প্রদেশকে আইএস-মুক্ত করা।

সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় মার্কিন ‘প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট’ ডোনাল্ড ট্রাম্পের। কী কথা হয়েছে, বা কে কাকে ফোন করেছিলেন তা স্পষ্ট না হলেও এ-টুকু জানা গিয়েছে যে, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস দমনে একজোট হয়ে লড়াইয়ের কথাও বলেছেন দু’জনে। প্রচারের সময়ে ট্রাম্প বহুবার বলেছিলেন, সিরিয়ার সমস্যা মেটাতে আইএস দমনে রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকার হাত মেলানো দরকার। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার থেকে পুতিনকে অনেক বেশি ‘সাহসী’ বলেও আখ্যা দিয়েছিলেন মার্কিন ধনকুবের। নির্বাচনের পরে এই প্রথম কথা হলো ট্রাম্প-পুতিনের।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শইগু মঙ্গলবার জানান, আইএসের কবলে থাকা ইদলিব ও হোমস প্রদেশের অস্ত্র-কারখানা, প্রশিক্ষণ শিবির এবং অস্ত্র-গুদামই রাশিয়ার যুদ্ধবিমানের লক্ষ্য। আজ বিমানহানা হয়েছে আলেপ্পোতেও। রবিবারই সিরিয়ার সেনাবাহিনীর তরফ থেকে পূর্ব আলেপ্পোর বাসিন্দাদের একটি মেসেজ পাঠিয়ে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যেন তারা ওই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। আইএস এখনও আলেপ্পো দখল করতে না পারলেও এই শহর মোটামুটি সরকার-বিরোধীদেরই হাতে। এ দিন আলেপ্পোয় কে বিমানহানা চালিয়েছে, সিরিয়া নাকি রাশিয়া, তা
জানা যায়নি। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীও তাঁর বিবৃতিতে আলেপ্পোর নাম উচ্চারণ করেননি।

সেনাবাহিনী ভিটেমাটি ছেড়ে পালানোর নির্দেশ দিলেও পালানোর পথ কিন্তু সহজ নয়। আলেপ্পোর সাধারণ মানুষের ঘরে না আছে খাবার, না বিদ্যুৎ সংযোগ। সরকারের নজর এড়িয়ে পালাতে গেলে আছে প্রাণহানির আশঙ্কাও। পূর্ব আলেপ্পোর বাসিন্দা শামেল মহম্মদের কথায়, ‘‘আমি যেতে চাই না। শুধু চাই, ছ’বছর আগের সেই নিরাপত্তার ছায়ায় ফিরে যেতে, যেখানে খেয়েপরে বাঁচব আমরা।’’ স্কুল-শিক্ষিকা ফতিমা লাবাবিডির কথায়, ‘‘আমি বেরোতে চাই। কিন্তু সরকার যাওয়ার পথ খুলবে না। বোমা মারাও বন্ধ করবে না।’’ এক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীর দাবি, গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর সিরিয়ার তিনটি হাসপাতালেও বিমান হানা হয়েছে।

দিন-দিন পূর্ব আলোপ্পোর বাসিন্দাদের অবস্থার অবনতি হচ্ছে। পালানোও যাচ্ছে না। বাঁচার পথটুকুও দুর্বিষহ। বাজারে জ্বালানি নেই, বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে, জিনিসপত্রের আগুন দাম, পাউরুটির মতো সাধারণ জিনিসটুকুর জোগান ও মান দুই-ই নিম্নমুখী। গত সপ্তাহেই রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে হুঁশিয়ারি জারি করা হয়েছিল, সিরিয়ায় ত্রাণ না পৌঁছলে গণ-অনাহার শুরু হয়ে যাবে। তার পরে অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে।

সাধারণ মানুষের এই অবস্থার জন্য কারা দায়ী— তা নিয়েও ক্ষোভ জমছে মানুষের মনে। ফতিমার কথায়, ‘‘সরকারই মানুষকে আক্রমণ করছে। সারা শহর জুড়ে যুদ্ধ। যাওয়ার সব পথ বন্ধ।’’ এক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীর মুখপাত্রের কথায়, ‘‘পালানোর পুরো গল্পই মানুষকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য।’’ মহম্মদের কথায়, ‘‘আমরা খাই-না খাই, বাঁচি কি মরি কারও কিছু আসে-যায় না। পরিস্থিতি বদলাবে কি না, ঈশ্বরই জানেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Russia Syria AirCraft
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE