Advertisement
E-Paper

ইউক্রেনকে ‘টমাহক’ ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার ভাবনা ট্রাম্পের, মিলবে রাশিয়ায় হামলার অনুমতিও! হুঁশিয়ারি দিল পুতিনের দেশ

ভলোদিমির জ়েলেনস্কির আর্জি মেনে ইউক্রেনকে ‘টমাহক ক্রুজ়’ ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার কথা ভাবছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিষয়টি নিয়ে হোয়াইট হাউসে আলোচনা চলছে বলে ইঙ্গিতও দিলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২২:০৪
ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

ভলোদিমির জ়েলেনস্কির আর্জি মেনে ইউক্রেনকে ‘টমাহক ক্রুজ়’ ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার কথা ভাবছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিষয়টি নিয়ে হোয়াইট হাউসে আলোচনা চলছে বলে ইঙ্গিতও দিলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স। তাঁর বিবৃতির পরেই পাল্টা হুঁশিয়ারি দিল ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ।

রবিবার ভান্স জানিয়েছিলেন, ইউক্রেনকে ‘টমাহক ক্রুজ়’ ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়া নিয়ে ওয়াশিংটন পর্যালোচনা করছে। যদিও এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেননি ট্রাম্প। অনেকের মত, ইউক্রেনকে এই ধরনের ভারী পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র জোগান দিলে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি বিবাদে জড়িয়ে পড়তে পারে আমেরিকা। সে ক্ষেত্রে কী ভাবে সেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হবে, আপাতত তা নিয়ে কথাবার্তা চলছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমেরিকার প্রাক্তন সেনা আধিকারিক লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেথ কেলগ দাবি করেছেন, ট্রাম্প ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন। ঘটনাচক্রে, ‘টমাহক’ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। এর পাল্লা অন্তত ১৫৫০ মাইল। অর্থাৎ, ইউক্রেন থেকে সরাসরি মস্কোয় আঘাত হানার জন্য উপযুক্ত বলেই মনে করছেন সামরিক অস্ত্র বিশারদেরা।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ওয়াশিংটনে আলোচনার আর একটি বিষয় হল, যদি টমাহক ইউক্রেনকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা হলে তা কি সরাসরি দেওয়া হবে? না কি ইউরোপের অন্য কোনও দেশ মারফত ওই ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের হাতে তুলে দেওয়া হবে, ঠিক যেমনটা জ়েলেনস্কি চান?

এ বিষয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘‘প্রশ্ন হল, কারা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাবে? ইউক্রেনের সেনাই করবে না কি আমেরিকার সৈন্য?’’ ঘটনাচক্রে, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, ইউরোপের কোনও দেশ যদি ইউক্রেনে রাশিয়ার উপর হামলা চালাতে সাহায্য করে, তা হলে সেই দেশেও রাশিয়া প্রত্যাঘাত করবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়ে এই ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্রটিকে তৈরি করে আমেরিকা। ‘টমাহক’ মূলত একটি ভূমিতে আক্রমণকারী ক্ষেপণাস্ত্র (ল্যান্ড অ্যাটাক মিসাইল)। যুদ্ধজাহাজ থেকে উড়ে গিয়ে উপকূলের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আছড়ে পড়ার ক্ষেত্রে এর জুড়ি মেলা ভার। ‘টমাহক’কে যুক্তরাষ্ট্রের বিপজ্জনক ক্ষেপণাস্ত্রগুলির অন্যতম বলে মনে করেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা। এর নির্মাণকারী সংস্থার নাম ‘আরটিএক্স কর্পোরেশন’।

অনেকেই ‘টমাহক’ ক্ষেপণাস্ত্রকে যুদ্ধের ‘খেলা ঘোরানো’ (গেম চেঞ্জার) হাতিয়ার বলে মান্যতা দিয়েছেন। ইরাকে জঙ্গিদের পুরোপুরি নির্মূল করতে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছিল আমেরিকার সেনা। যুদ্ধজাহাজ ছাড়া ডুবোজাহাজ থেকে আক্রমণেও এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের নৌসেনা।

গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের উপসাগরীয় যুদ্ধে ইরাকের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ডেজ়ার্ট স্টর্ম’-এ নামে পেন্টাগন। সেই সময়ে বাগদাদের ফৌজের সামরিক ঘাঁটি এবং কম্যান্ড সেন্টার ওড়াতে এই ক্ষেপণাস্ত্রই ব্যবহার করেছিল আমেরিকার সেনাবাহিনী। এর আঘাত সহ্য করতে পারেননি ইরাকি প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসেন। তাঁর দ্রুত পতনের নেপথ্যে ‘টমাহক’ বড় ভূমিকা নিয়েছিল বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞেরা।

আনুমানিক ২১ ফুট লম্বা এই ক্ষেপণাস্ত্রের ওজন দেড় টন। এতে রয়েছে টার্বোজেট ইঞ্জিন। ক্ষেপণাস্ত্রটি ঘণ্টায় ৮০০ কিলোমিটার বেগে ছুটতে সক্ষম। জিপিএসের পাশাপাশে এতে টেরেন কনট্যুর ম্যাচিং প্রযুক্তি রেখেছেন আমেরিকার প্রতিরক্ষা গবেষকেরা। লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছে ১০০ ফুটের কম উচ্চতায় নেমে এসে হামলা চালায় ‘টমাহক’। অন্যান্য ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্রের তুলনায় এটি কম উচ্চতায় ওড়ে। ফলে একে চিহ্নিত করা বেশ কঠিন।

Donald Trump Vladimir Putin
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy