১১৮১ দিনের যুদ্ধের ফল বলছে, ইউক্রেনের ভূখণ্ডের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ দখলে রয়েছে রুশ সেনার। যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসাবে তার অধিকাংশটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সোমবার দু’ঘণ্টা টেলিফোন-আলাপচারিতায় তিনি সেই প্রস্তাবই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দিয়েছেন বলে প্রকাশিত কয়েকটি সংবাদে দাবি।
আন্তর্জাতিক ভাবে ‘ইউক্রেনের ভূখণ্ড’ হিসেবে স্বীকৃত ক্রাইমিয়া এবং ডনবাসে (ডনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলকে একত্রে এই নামে ডাকা হয়) রুশ দখলদারি বজায় রাখার বিষয়ে পুতিন আগেও বার্তা দিয়েছেন। কারণ ওই এলাকাগুলি সংখ্যাগরিষ্ঠ বাসিন্দাই জাতিগত ভাবে রুশ। তা ছাড়া, ইউক্রেনের উত্তর সুমি অঞ্চলের দিকেও বিশেষ ভাবে নজর রয়েছে তাঁর। সেখান থেকে ইউক্রেনীয় সেনা প্রত্যাহারের শর্তও ট্রাম্পকে পুতিন দিয়েছেন কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার ইস্তানবুলের রয়্যাল প্যালেসে কোনও মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে প্রথম বার মুখোমুখি আলোচনা করেছিল রাশিয়া-ইউক্রেনে। কিন্তু যুদ্ধে ১১৭৭তম দিনে দু’পক্ষের প্রথম মুখোমুখি বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। এর পর নতুন করে যুদ্ধবিরতির জন্য সক্রিয় হন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের তরফে রবিবার জানানো হয়েছিল, পুতিনের পাশাপাশি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গেও কথা বলবেন ট্রাম্প। ট্রাম্প-পুতিন প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে টেলিফোনে কথা বলেন সোমবার।
কূটনীতি ও সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, পুতিন আশঙ্কা করছেন অন্তর্বর্তী যুদ্ধবিরতির সময়টুকুর সদ্ব্যবহার করে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলির সহায়তার অস্ত্র আমদানি করে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের প্রস্তুতি নেবেন জ়েলেনস্কি। এ বিষয়েও ট্রাম্পের কাছে কিছু সুনির্দিষ্ট শর্ত দিয়েছেন পুতিন। অন্য দিকে, মঙ্গলবার ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ রুশ ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে তৎপর হয়েছে চিন! চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মাও উইং বলেছেন, ‘‘চিন শান্তিপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যে কোনও প্রচেষ্টাকে পূর্ণ সমর্থন করে। আমরা আশা করি দু’পক্ষে নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করবে।’’ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ট্রাম্পের ভূমিকাকে লঘু করেতেই শি জিনপিং সরকার সুকৌশলে ‘দ্বিপাক্ষিক আলোচনা’র কথা বলেছে বলে মনে করছেন অনেকে।