Advertisement
E-Paper

যুদ্ধবিরতির শর্ত ‘জমি’! জেলেনস্কির সেনা কোন কোন এলাকা ছাড়লে বন্ধ হবে হানাদারি? বার্তা দিলেন পুতিন

আমেরিকার দেওয়া যুদ্ধবিরতি-পরিকল্পনায় ডনবাস (ডনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলকে একত্রে এই নামে ডাকা হয়) এবং ক্রাইমিয়াকে মস্কোর হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যা সমর্থন করেছেন পুতিন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:১৩
(বাঁদিকে) ভলোদিমির জ়েলেনস্কি এবং ভ্লাদিমির পুতিন (ডানদিকে)।

(বাঁদিকে) ভলোদিমির জ়েলেনস্কি এবং ভ্লাদিমির পুতিন (ডানদিকে)। —ফাইল চিত্র।

তিন মাস আগে আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেই যুদ্ধবিরতির শর্ত নিয়ে মস্কোর অবস্থান জানিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, কিভ যদি মস্কোর দাবি করা ভূখণ্ড থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়, তা হলে তিনি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ‘আক্রমণাত্মক সামরিক অভিযান’ স্থগিত করবেন।

কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি যদি সেই শর্ত না মানেন? পুতিনের ঘোষণা, ‘‘আমরা সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে ওই সব ভূখণ্ড দখল করে নেব।’’ সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের দেশ কিরঘিজ়স্তান সফরে গিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আমেরিকার দেওয়া শান্তি-পরিকল্পনা সমর্থনেরও বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ওই পরিকল্পনা আলোচনার সূচনা করতে পারে।’’

কী রয়েছে ওয়াশিংটনের ওই শান্তি-শর্তে? সেখানে ডনবাস (ডনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলকে একত্রে এই নামে ডাকা হয়) এবং ক্রাইমিয়াকে মস্কোর হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু জ়েলেনস্কি ইতিমধ্যেই তা নাকচ করে দিয়েছেন। বর্তমানে ২০১৪ সালে দখলে নেওয়া ক্রাইমিয়া-সহ ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশের বেশি এলাকা রুশ সেনার দখলে রয়েছে। যা নিয়ে এখনও অনড় দু’পক্ষই। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের অন্যতম ভরকেন্দ্র ডেনেৎস্ক-ওল্ডবাস্ট এবং লুহানস্ক অঞ্চলের (যাদের একত্রে ডনবাস বলা হয়) প্রায় ৭০ শতাংশ এলাকা বর্তমানে রাশিয়ার দখলে। গত ছ’মাসে ওই এলাকায় নির্ণায়ক অগ্রগতি হয়েছে রুশ বাহিনীর। তাদের হামলায় পতন হয়েছে ডেব্রোপিলিয়া-সহ ডনবাসের একাধিক শহর।

এ ছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের খেরসন এবং জ়াপোরিঝিয়া রয়েছে পুতিনের তালিকায়। যুদ্ধের গোড়ায় ওই প্রদেশগুলির বড় অংশের দখল নিয়েছিল রুশ বাহিনী। ২০২২ সালের শেষপর্বে ডনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন এবং জ়াপোরিঝিয়ায় গণভোট করিয়ে সেগুলিকে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার ঘোষণা করেছিলেন পুতিন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে খেরসন এবং জ়াপোরিঝিয়ার বড় অংশ পুনরুদ্ধার করে জেলেনস্কি বাহিনী। তবে কিছু অংশ এখনও রুশ ফৌজের নিয়ন্ত্রণে। ইউক্রেনের ভূখণ্ড হলেও ডনবাস অঞ্চলে রুশ বংশোদ্ভূতেরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। গত এক দশক ধরে সেখানে সক্রিয় মস্কোপন্থী মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলি। বস্তুত তাদেরই সহায়তায় ইউক্রেন ফৌজকে ডনেৎস্ক ও লুহানস্কের বড় অংশ থেকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে পুতিনসেনা।

অন্য দিকে, ক্রাইমিয়ার উপর পুতিনের নজরের মূল কারণ সামরিক ও বাণিজ্যিক। কৃষ্ণসাগর উপকূলের ক্রাইমিয়ার সেবাস্তিপোল বন্দর শীতের সময়ও সচল থাকে। মূল রুশ ভূখণ্ডের কোনও বন্দরে সে সুবিধা নেই। সমুদ্র ভেসে আসা বরফের চাঁইয়ের কারণে বছরভর সেগুলি সচল রাখা সম্ভব নয়। ২০১৪ সালে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে সামান্য সংঘর্ষের পরে দক্ষিণ ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ দখল করেছিল রুশ সেনা। পরে গণভোট করিয়ে ওই অংশকে রুশ ভূখণ্ডের সঙ্গে জুড়ে নিয়েছিল পুতিনের সরকার। ২০১৮ সালে ১২ মাইল লম্বা কের্‌চ সেতুর যান চলাচলের অংশটির উদ্বোধন করেছিলেন পুতিন স্বয়ং। তার দু’বছর পর রেল পরিবহণের অংশটি চালু হয়েছিল। গত তিন বছরের যুদ্ধে বার বার সেই সেতুকে নিশানা করেছে জ়েলেনস্কির বাহিনী। কিন্তু পুতিনসেনার অস্ত্র ও রসদ সরবরাহ ব্যবস্থা এখনও অটুট রয়েছে।

Vladimir Putin Russia-Ukraine War Russia Ukraine Ukraine War Volodymyr Zelenskyy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy